প্রকৌশলীর চাকরী ছেড়ে কোটিপতি কৃষক, দিনে আয় ৪০ হাজার!

508

চাষী বলতে আমরা সচরাচর যা বুঝি, ইনি ঠিক তেমনটা নয়। ইনি প্যান্ট-শার্ট, ট্রাউজার পরা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরি ছেড়ে চাষের কাজ বেছে নেওয়া চাষী। যিনি বর্তমানে কোটিপতি, রোজগার প্রতিদিন প্রায় ৪০,০০০ টাকা। এই কোটিপতি চাষী হলেন দিল্লির বাসিন্দা অভিষেক ধাম্মার। পারিবারিক পেশা বলতে তাদের চাষবাস, ২৫ একর জমি রয়েছে চাষের জন্য পৈত্রিক সম্পত্তি হিসাবে।

কিন্তু অভিষেক ছোটবেলা থেকে চাষের প্রতি এতোটুকু আসক্ত ছিলেন না, বরং চাষাবাদে বিরোধিতায় তাঁর মনেপ্রাণে। এ কারণে তিনি বেছে নেন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার এবং স্বপ্ন দেখেন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরি করার। তার ধারণা ছিল চাষাবাদের অর্থ হল ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে কাঠ-খড় পুড়িয়ে কাজ করা। আর তার বিনিময়ে সামান্য অর্থ।

সেইমতো ২০১৪ সালে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন পাস করেন। কিন্তু তারপর চাকরি পেয়েও করতে গেলেন না সেই চাকরি, ফিরে এলেন চাষাবাদের কাজে। কিন্তু কেন! নিজে চাষাবাদের কাজে নামার আগে পর্যন্ত চাষাবাদের কাজে কোন দিনের জন্য বাবাকে সাহায্য করেননি তিনি। পরিবারের লোকজনদের স্পষ্টত বুঝিয়েই দিয়েছিলেন এসবের প্রতি তার অনীহা, তিনি তার পড়াশোনা এবং চাকরি ও লাইফ স্টাইল নিয়ে পরিকল্পনা করে নিয়েছিলেন।

তিনি প্রথম থেকেই নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি খুব সচেতন ছিলেন। তার জন্য নিয়ম করে করতেন জিম, তবে উপলব্ধি করেছিলেন স্বাস্থ্যকে সঠিক রাখতে সঠিক পুষ্টির কতটা প্রয়োজন। আর তা নিয়ে তিনি বিস্তর গবেষণা শুরু করে দেন। এরপর খাবারে কীটনাশকের মত ক্ষতিকারক রাসায়নিক এড়াতে প্রথমে একটি ছোট্ট বাগান তৈরি করেন। যমুনা নদীর তীরে ছোট জমিতে তিনি শুরু করেন জৈব সার দিয়ে চাষাবাদ।

এরপর এক বছর পর ফলন গেলে নিজের চোখেই দেখতে পান বাজারে সবজির সাথে স্বাদ এবং রঙের পার্থক্য। সঙ্গে ছোট জমিতে জৈব চাষের অভিজ্ঞতা পেয়ে পারিবারিক ২৫ একর জমিতে শুরু করেন জৈব চাষ। আর স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই বাড়িতে জৈব সার তৈরি করে শুরু হলো ফলন।

রোজ ১৫ থেকে ২০ মিনিট জমিতে জল দেওয়ার কাজ করে সম্পূর্ণ জৈবিক পদ্ধতিতে ফলন ফলিয়ে যাচ্ছেন এই ইঞ্জিনিয়ার চাষী। এর পাশাপাশি জমির সমস্ত বর্জ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি করেছেন বায়োগ্যাস প্লান্ট, যার মাধ্যমে বাড়িতে হচ্ছে রান্নাও। আর এইভাবে অভিষেক স্বাস্থ্য এবং অর্থ দুটিই পেয়েছেন। প্রতিদিন প্রায় ৪০,০০০ টাকা রোজগারের সাথে সাথে তিনি এখন কোটিপতি।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৪জুলাই২০