প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্বনাথের ৪ তরুণ কৃষিতে ‘সফল’

382

 

images

লন্ডনের প্রবাস জীবনের হাতছানি উপেক্ষা করে দেশেই কৃষিতে সাফল্য এনেছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার চার তরুণ। ধান, ক্যাপসিকাম, নাগামরিচ, ব্রকলি, বেগুন, টমেটো, লাউসহ বিভিন্ন জাতের সবজির সফল চাষি এখন তারা। সাফল্যের স্বীকৃতি ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক’ও পেয়েছেন তাদের একজন। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় তাদের পথ ধরেই কৃষিতে ঝুঁকছেন বিশ্বনাথের শিক্ষিত তরুণেরা।

জানা গেছে, উপজেলার রামধানা গ্রামের বেলাল আহমদ ইমরান (৩২) পড়ালেখা শেষে কৃষিতে মনোযোগ দেন। প্রথমে বাড়ির পুকুরে শিং-মাগুর চাষে সফল হন তিনি। এ জন্য ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক’ দেন। পরে আরো দ্বিগুণ উৎসাহে সাফল্য আনেন ক্যাপসিকাম ও নাগামরিচ চাষেও। নিজে সফল হয়ে থেমে থাকেননি বেলাল। সফল্যের এ পথে নিয়ে আসেন তার তিন বন্ধুকেও। তারা হলেন, উপজেলার আলাপুর গ্রামের জাবের হোসেন (২৯), বিশ্বনাথের গাঁও’র কয়ছর আহমদ (২৮) ও দৌলতপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিন (৩০)। বেলালকে অনুসরণ ও তার সার্বিক সহযোগিতায় তারাও এখন সফল সবজি চাষি।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বেলাল এবার তার আধা বিঘা জমিতে ২ হাজার ৩শ’ ক্যাপসিকাম রোপন করেছেন। এ পর্যন্ত এখান থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি করেছেন তিনি। পাশাপাশি তার ক্ষেতে রয়েছে ৯ হাজার নাগা মরিচের চারা। এ থেকে খরচ বাদে ৩ লক্ষ টাকা আয়ের টার্গেট রয়েছে তার।
আলাপুর গ্রামে জাবের ৮ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন, ক্যাপসিকাম, নাগামরিচ, ব্রকলি, বেগুন, টমেটো ও লাউ। বিশ্বনাথের গাঁও গ্রামে কয়ছর তার ২১ শতাংশ জমিতে করেছেন ক্যাপসিকামের চাষ। দৌলতপুর গ্রামের নিজাম তার জমিতে চাষ করেছেন ৪২৫টি নাগা মরিচের চারা।

বেলালের কৃষক বন্ধুরা জানানেল, বেলাল ভাই আমাদের পথ দেখিয়েছেন। তার পরার্মশ ও সহযোগিতায় আমরা সবজি চাষ শুরু করি। এ পর্যন্ত খরচ উঠে আমরা লাভেই রয়েছি।

বেলাল আহমদ ইমরান বলেন, আমাদের লক্ষ্য আগামী ৫ বছরের মধ্যে ১শ’ ভালো কৃষক বের করে আনা, যারা চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে সফল হবেন।

এ বিষয়ে কথা হলে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যান তত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, ”আমাদের তরুণরাও যে আধুনকি প্রযুক্তি নিয়ে কৃষিতে ঝুঁকছে, এটা আশার খবর। সিলেট অঞ্চলে বেড়ে যাচ্ছে সবজির চাষ। কৃষিতে ভালো করছেন ওই চার তরুণ। উনাদের পথ ধরে অন্য যুবারাও এগিয়ে আসলে কৃষিতে সমৃদ্ধ হবে দেশ।”