প্লাষ্টিকের বোতলে পুঁইশাক চাষ করবেন যেভাবে

1588

বাংলায় একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে, “শাকের মধ্যে পুঁই আর মাছের মধ্যে রুই”। এ থেকেই বোঝা যায় বাঙ্গালীদের কাছে পুঁই শাক কতটা পছন্দের।

পুষ্টি উপাদান:
পুঁইশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘বি’, ‘সি’ ও ‘এ’। পাশাপাশি রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং আয়রণ। ১০০ গ্রাম পুঁই শাকে যা রয়েছে:

শর্করা = ৪.২ গ্রাম
খনিজ পদার্থ = ১.৫ গ্রাম

ভিটামিন সি = ৬৫ মিলি গ্রাম
ভিটামিন বি = ২৭ মিলি গ্রাম

ক্যালসিয়াম = ১৬৫ মিলি গ্রাম
আয়রণ = ১১ মিলি গ্রাম

চারা রোপনের উপযুক্ত সময়:

বছরের যেকোন সময়ে পুঁইশাকের চারা রোপন করা যায়। তবে ফেব্রুয়ারী মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত পুঁইশাক লাগানোর উত্তম সময়। এসময় পুঁইশাক লাগালে সঠিক সময়ে পুঁইশাকের ভাল ফলন পাওয়া যায়।

জাত:

সাধারণত দুই ধরণের জাত দেখা যায়। পুঁই শাক লাল ও সবুজ এই দুই ধরণের হয়ে থাকে। সবুজ রঙের গাছের নাম বেসেলা এলবামিনল এবং লাল রঙের গাছের নাম রুবরালিন। এদের স্বাদেও কিছুটা পার্থক্য আছে।

প্লাষ্টিকের বোতলে চাষ পদ্ধতি:

প্রথমে পাঁচ লিটার বোতলটি প্রয়োজন মতো কেটে নিতে হবে।
বোতলটির নিচে ছিদ্র করে নিতে হবে নিয়মিত পানি নিষ্কাষণের জন্য।এর উপর একটি মাটির চারা বা পাথরের টুকরা দিয়ে দিতে হবে।

পুঁইশাকের জন্য যেকোন মাটি উত্তম তবে মাটি প্রস্তুতের জন্য বেলে দোআঁশ মাটি ব্যবহার করা ভালো। মাটির সাথে টি এস পি সার ও গোবর সার মিশিয়ে নিতে হবে
পুঁই শাকের বীজ বপণ করার আগে এস্পিরিনযুক্ত পানিতে ২৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।

পুঁইশাকের বীজ লাইন করে অথবা ছিটিয়ে লাগাতে পারেন৷ তবে লাইন করে লাগালে পরিচর্যা করা সহজ হয়৷
বীজ বপন করা হয়ে গেলে বীজগুলোর উপরে হালকা করে মাটি দিয়ে ঢেকেদিতে হবে৷

এবার টব টা যথাস্থানে রেখে দিন এবং পরের দিন বিকেলে হালকা করেপানি ছিটিয়ে দিন৷
বীজ বপনের ১৫/২০ দিন পরই চারাগাছ দেখা যাবে৷

যত্ন যেভাবে নিবেনঃ

চারা গজানোর কিছু দিন পর অতিরিক্ত চারা উঠিয়ে অন্যত্র সরিয়ে ফেলতে হবে এতে চারাগুলো সঠিক পরিমান পুষ্টি পাবে যা চারার বৃদ্ধি কে তরান্বিত করবে৷
হালকা করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে যেন চারা গুলো নেতিয়ে না পড়ে৷

মাঝে মাঝে ছাই ছিটিয়ে দিলে আর কোন ক্ষতির ভয় থাকে না৷ প্রায়ই নিরানী বা কোদাল দিয়ে আলগা করে দিতে হবে এবং আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে।
মাটি শুকিয়ে গেলে পরিমিত পরিমাণে পানি দিতে হবে।
ফলন বেশী পেতে হলে বাউনি দিতে হবে। চারা ১ ফুট সমপরিমাণ উঁচু হলে আগা কেটে দিতে হয়। এতে গাছ ঝোপালো হয়।

রোগ দমন:

পাতায় দাগ (বীজ বাহিত) রোগ: এ রোগের কারণে পাতায় দাগ পড়ে। পাতায় দাগ পড়ে ও পাতা ফুটো হয়ে যায়। শাকের গুণগত মান ও বাজারমূল্য কমে যায়। এর জন্য এমকোজিন ৫০ ডব্লিউ পি, ২ এম এল/১ লিঃ পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

কান্ডের গোড়া পচা রোগ: এ রোগের কারণে পুঁইশাকের গোড়া পচে যায় এবং গাছ মরে যেতে পারে। এর জন্য এমকোজিন ৫০ ডব্লিউ পি, ২ এম এল/১ লিঃ পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

ফসল সংগ্রহ:

পুঁই গাছের ডাঁটা মাঝে মাঝে কেটে দিতে হবে। এতে শাকও খাওয়া হয় আবার গাছে নতুন করে ডাঁটা বের হয়। একবার চারা লাগিয়ে ৮ থেকে ১০ বার পুঁইশাক সংগ্রহ করা যায়। ধারালো ছুরি দিয়ে পুঁই গাছের ডাঁটা কেটে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/৩১মে২০