পদ্মা, মধুমতি, আড়িয়াল খাঁ, কুমারসহ ফরিদপুরের সব নদী ও খালে চলছে চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে মাছের বংশ নির্মূলের উৎসব। মৎস্য সম্পদ ধ্বংসের এ কাজ প্রকাশ্যে করলেও দেখার কেউ নেই।
ফরিদপুরের বিস্তীর্ণ চরে মৎস্যজীবীদের বেশির ভাগই এখন ব্যবহার করছেন নিষিদ্ধ চায়না জাল ও চায়না দুয়ারি। প্রকাশ্যেই তারা এসব উপকরণ দিয়ে সব ধরনের মাছ ধরে নিঃশেষ করে দিচ্ছেন মৎস্য ভাণ্ডার।
স্থানীয়দের ভাষ্য, এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এসব নদী থেকে মাছ আহরণ করতে পারবে না। তাদের দাবি, চায়না জাল উৎপাদন বন্ধ করা হোক।
মংস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই জেলায় ১৫ হাজারের বেশি মৎস্যজীবী রয়েছেন। চলতি বছরে মাছের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ৮৪৪ টন।
ফরিদপুরের দুর্গম পদ্মার চর ভাঙ্গীডাঙ্গী এলাকার মৎস্যজীবী মহাতাব আলী এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘বর্ষার সময় ক্ষেত খোলায় পানি ওঠে, কৃষিকাজ বন্ধ, তাই এই সিজনে নদীর মাছ ধইরাই আমরা চরের লোক বাঁচি। এহনতো নদীতে মাছ কইমা গেছে, জালে সারাদিনেও মাছ বাঁধে না, চায়না জালে তাও কিছু মাছ পাওয়া যায়।’
একই এলাকার ট্রলারে মাঝি সোহন শেখ জানান, বিস্তীর্ণ ওই চর এলাকার বেশির ভাগ পরিবার বর্ষা মৌসুমে নদীর মাছ আহরণ করে জীবিকা চালায়। নিষিদ্ধ চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার করে তারা। এ জাল ঘন হওয়ায় মাছের পোনাও আটকে যায়।
প্রতিদিন সকালে সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ডিক্রিরচরের ধলার মোড়ে পথের পাশে বসে অস্থায়ী মাছের হাট। চরবাসী ট্রলারে নদী পার হয়ে সেখানে এসে নানা জাত ও আকারের নদীর মাছ বিক্রি করেন। এসব মাছ কিনে ব্যবসায়ীরা ফরিদপুর শহরের শরীয়তুল্লাহ বাজার ও টেপাখোলা বাজারে নিয়ে যান।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন, সম্প্রতি ব্যবহার হওয়া চায়না জাল ধ্বংস করতে কাজ করছে সরকার, চালানো হচ্ছে অভিযান। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই আমাদের সীমিত সাধ্যের মধ্যে প্রতিনিয়ত পদ্মা, মধুমতি, আড়িয়াল খাঁ, কুমার, চন্দনাসহ বড় নদীগুলোতে আড়বাঁধ ভেঙে দিতে ও চায়না জাল জব্দ করতে চলছে এসব অভিযান।