ফরিদপুরে পাটের আবাদে রেকর্ড, দামে উদ্বিগ কৃষক

347

Jute
হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর থেকে: পাটের রাজধানী হিসাবে পরিচিত ফরিদপুর জেলায় এ বছর রেকর্ড সংখ্যক জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। দেশ-বিদেশে পাটের ব্যাপক চাহিদা থাকায় দিনকে দিন বাড়ছে আবাদের পরিমাণ। গত বছরের তুলনায় এ বছর ফরিদপুর জেলায় প্রায় ১ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। তাছাড়া এ বছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮শ ১৩ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। ফলে অন্যান্য ফসলের তুলনায় পাটের আবাদ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন কৃষক।

সোনালী আঁশ হিসাবে পরিচিত পাট নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে ফরিদপুর জেলার কৃষকরা। গত কয়েক বছর ধরে পাট আবাদ করে বেশ লাভবান হওয়ায় কৃষকরা পাট আবাদের দিকে ঝুঁকছে। পাটের কারণে এ অঞ্চলে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৪০টি পাটকল। পাটের গুণগত মান ভালো হওয়ায় দেশ-বিদেশে এ জেলার পাটের বেশ সুনাম রয়েছে। ফলে জেলার কৃষি ব্যান্ডিং-এ পাট স্বীকৃতি পেয়েছে।

এ বছর ফরিদপুর জেলায় ৮২ হাজার ৮শ ৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। যা বিগত দিনের তুলনায় অনেক বেশি। বিছা পোকা না লাগা এবং সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় ফলন হয়েছে ভালো। পাটের ফলন ভালো হলেও দাম পাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন কৃষকরা।

পাট উৎপাদনে এবছর খরচ বেশি হওয়ায় সরকারিভাবে পাটের দাম বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

গেরদা ইউনিয়নের পাটচাষী জামাল ও সিদ্দিক জানান, এ বছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে। তবে পাট উৎপাদন করতে গিয়ে এবার খরচ হয়েছে অনেক টাকা। বীজ, সেচ ও শ্রমিকের জন্য খরচ বেড়েছে। সরকারিভাবে পাটের দাম বাড়ানো না হলে আগামীতে তারা পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।

ইতোমধ্যেই ফরিদপুরের বিভিন্ন বাজারে পাট উঠতে শুরু করেছে। সরকারিভাবে পাট ক্রয় করা এবং কৃষকদের পাওনা পরিশোধ করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা।

ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ী সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ জানান, বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় বিজিএমসি’র কাছে কৃষকদের বিপুল পরিমাণ টাকা পাওনা রয়েছে। দ্রুত এ টাকা পরিশোধ না করলে পাটচাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। এছাড়া বাজারে যে পাট উঠেছে তা সরকার যদি কেনা না শুরু করে তাহলে এসব পাট চলে যাবে ফড়িয়াদের হাতে। ফলে সরকারকে বেশি দাম দিয়ে ফড়িয়াদের কাছ থেকে পাট কিনতে হবে।

পাট আবাদে কৃষকদের নানা পরামর্শসহ উৎপাদন বাড়াতে নানা উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জিএম আবদুর রউফ।

তিনি জানান, পাট আবাদে ফরিদপুর জেলা সারাদেশের মধ্যে প্রথম। ফলে কৃষকদের নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করা হচ্ছে। কৃষকদের পাট আবাদে আরো বেশি উৎসাহিত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম