বগুড়ায় পুরোদমে চলছে আউশ ধান কাটা-মাড়াই

706

PIC.10.10.2017

আল আমিন মন্ডল (বগুড়া) থেকে: বগুড়া জেলাসহ গাবতলী উপজেলায় পুরোদমে শুরু হয়েছে আপদকালীন বর্ষালি আউশধান কাটা-মাড়াই। ফলন ভাল হওয়ায় খুশি কৃষক পরিবার। ফলে কৃষকের ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব।

জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নসহ পৌরসভায় আউশধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৪শ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে অর্জিত ও উৎপাদন হয়েছে ৪শ ৫০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৯২ মেট্রিক টন (চাল)। যা গত বছরের চেয়ে ১শ হেক্টর বেশি জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে।

কৃষি বিভাগ আশা করছেন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়াও গাবতলী ইছামতি নদীতে জেগে উঠা জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। তবে দিনমজুর সংকট হওয়ায় তাদের মজুরি বেড়েছে। তবুও কৃষকরা পুরোদমে আউশ ধান কর্তন করছে।

এদিকে কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতায় আউশ ধান চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক আলোচনা সভা ও মাঠ দিবস পালন করা হয়েছে। এতে বক্তব্য দেন গাবতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার।

এবছরে নেপালতলীতে আউশ ধান চাষ বেশি করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষক মাঠ স্কুল ও কৃষকদের নিয়ে আউশধান চাষ বিষয়ক উঠান বৈঠকসহ কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মশালা করা হয়। ফলে উপজেলার গ্রামাঞ্চলে আউশধান সংগ্রহে কৃষক-কৃষাণীরা এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

দিনমজুর সংকটসহ মূল্য বৃদ্ধি পেলেও কৃষক পরিবারগুলো এখন দম ফেলানোর সময় নেই। কৃষকের আঙ্গিনা জুড়ে এখন মৌ-মৌ গন্ধে মুখরিত। নবান্ন উৎসবে মেতে উঠেছে কৃষক পরিবার।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, এখন কৃষকরা আউশধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন।

কাগইলের কৈঢোপ গ্রামের কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, এ বছরে পরিবেশ অনুকুল ও ধান ক্ষেতে পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় আগামজাতের বর্ষালি ধানের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে আউশধান চাষ ও উৎপাদন বেড়েছে। ধানগাছে পোকা থেকে রক্ষা করতে পাচিং ও আলোক ফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহার করে কোন কীটনাশক ছাড়াই পোকা দমন করা সম্ভব হয়েছে।

নেপালতলীর ডওর গ্রামের আদর্শ কৃষক নুরুল ইসলাম জানান, প্রতি বিঘায় ২৫-৩০ মন আউশ ধান পেয়েছি। এখন ধানের ন্যায্যমূল্যে পেলেই আমরা খুশি। তাই তারা আউশ ধানের ন্যায্য মূল্যে নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কৃষি অধিদপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

গাবতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার জানান, কৃষি বিভাগের পক্ষে থেকে সার্বক্ষণিক পরামর্শের ফলে এ বছরে আউশধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছেড়ে যাবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ সোহরাব হোসেন জানান, উপজেলা জুড়ে কৃষকরা আপদকালিন বর্ষালি আউশধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছে। এবছরে ধানের ভালো ফলন হয়েছে। ফলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

গাবতলী উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী হায়দার জানান, সারের সংকট নেই। ফলে কৃষক এবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আউশধান চাষ করছে।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাহাদত হোসেন জানান, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় আমরা সবসময় কৃষকদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করে আসছি। এ বছরে আউশধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। আমরা কৃষকদের নিয়ে কাজ করছি। ফলে গাবতলীতে বর্ষালি আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন কৃষকের ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব।

Intertek awards 50 Egyptian fish producers Production Quality Certificate

হাঁস-মুরগির রোগ ও তার প্রতিকার

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম