বাংলাদেশে অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে বাণিজ্যিক পাম চাষ

500

বাংলাদেশে অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে বাণিজ্যিক পাম চাষ। রাজশাহীতে পরীক্ষামূলকভাবে পাম চাষ করে ফলের গুণগত মান বিশ্লেষণ করে এমন সম্ভাবনার কথা বলেছেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) গবেষকরা।

জানা গেছে, গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রাজশাহীতে বিসিএসআইআর গবেষণা কেন্দ্রে পাম চাষ শুরু করা হয়। দেশে পাম গাছের ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতেই এ গবেষণা প্রকল্প। তিন বছরের মধ্যেই ৩ একর জমিতে রোপণকৃত ৩০০ পাম গাছে ফল এসেছে।

গবেষকরা বলছেন, পুরোদমে উৎপাদনে আসতে আরও এক বছর সময় লাগবে। এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে প্রকল্পের মেয়াদ। এতে গবেষণা কাজে ভাটা পড়েছে। পাম চাষের এ অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সমন্বিত বৃহৎ প্রকল্প নেওয়া প্রয়োজনÑএমনটাই বলছেন গবেষকরা।

গত মাসে প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক বিসিএসআইআরের অয়েল, ফ্যাট অ্যান্ড ওয়েক্সেস রিসার্চ ডিভিশনের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার মইনউদ্দিন প্রকল্পের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তাতে রাজশাহী অঞ্চলে পাম চাষ নিয়ে তুলে ধরা হয়েছে অপার সম্ভাবনার কথা।

মইনউদ্দিন জানান, বাংলাদেশে সাধারণত সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য বিচ্ছিন্নভাবে পাম গাছ আছে। তবে সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি পাম গাছের অপার সম্ভাবনা আছে, যা তারা ৩ বছরের গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু পাম গাছের জন্য খুবই উপযোগী। সঠিকভাবে পামের চাষাবাদ, উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে দেশে ভোজ্যতেলের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন সম্ভব। ব্যক্তি উদ্যোগে পাম নিয়ে প্রাথমিক গবেষণা শুরু করেছিলেন ফজলুল হক।

তিনি খোলা কাগজকে জানান, ২০০৮ সালে মেলায় বেড়াতে গিয়ে পাম গাছের চারা দেখতে পান। সেখান থেকে চারা সংগ্রহ করে নিজের বাসায় লাগান। পরে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাম চারা সংগ্রহ করে ব্যক্তি উদ্যোগে গবেষণা শুরু করেন। তিনিও সেই গবেষণা কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। এ গবেষণা প্রকল্পে তারা ভালো ফলাফল পেয়েছেন। তবে আরও গবেষণা প্রয়োজন।

কেননা, এ গবেষণা প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এখন এ বিষয়ে সমন্বিত বৃহৎ প্রকল্প প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সরকারি পদক্ষেপ ও সহযোগিতা পেলে বাংলাদেশও হতে পারে ভোজ্যতেল উৎপাদনে বিশে^র শীর্ষস্থানীয় দেশ। বাণিজ্যিক পাম চাষ, ভোজ্যতেল উৎপাদন ও বিপণন সম্ভব হলে বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিধারাও পাল্টে যাবে।

অয়েল পামের আদিবাস পশ্চিম আফ্রিকা (নাইজেরিয়া, মালে, সেনেগাল, গাম্বিয়া, গিনি, সিয়েরা লিওন) ইত্যাদি যেখানে ৫ হাজার বছর আগে থেকে অয়েল পাম চাষ হচ্ছে। পরবর্তীতে উপজাতীদের Shifting চাষের মাধ্যমে সব ট্রপিক্যাল অফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়ে। ১৪০০ সনের দেশে এবং দাস বাণিজ্যের সময় ইউরোপিয়ানদের মাধ্যমে ইকোয়েড়র, বাজ্যিল, কোস্টারিকা, হন্ডুরাস, পেরু, পানামা, ভেনিজুয়েলা, সুরিনাম প্রভূতি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

১৯১১ সনে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় এবং ১৯১৭ সনে মালয়েশিয়ার অয়েল পাম চাষের মধ্য দিয়ে এশিয়ায় এর চাষের বিস্তার লাভ করে তবে ১৯৬০ সনের আগ পর্যন্ত এ শিল্প ততটা বিস্তার লাভ করতে পারেনি। ২০০৩ সনে পৃথিবীর মোট পাম অয়েলেরর উৎপাদন পৃথিবীর মোট সয়াবিন তেলের উৎপাদনকে ছাড়িয়ে যায়।

বৈশিষ্ট্য

অয়েল পাম গাছ ৬০-৮০ ফুট লম্বাহয় কিন্তু ৩০ ফুট লম্বা পর্যন্ত চাষযোগ্য।
২৫ ফুট লম্বা প্রতি পাতায় ২০০-৩০০ লিফলেট থাকে। পাতার গোড়ার দিকে কাঁটা থাকে।
একই গাছে পুরুষ এবং স্ত্রী ফুল ফোটে এবং বায়ু পোকামাকড় দ্বারা পরাগায়ন ঘটে।

ফলকে ড্রুপ বলে এবং ইহা দুই রকমের হয়। ধূসর বা কালো বর্ণের। নাইগ্রিসেন্স যা পরিপক্ক হলে কালো বর্ণের চিকসহ কমলা বর্ণ ধারণ করে।
ফলের মেসোকার্প থেকে পামঅয়েল পাওয়া যায়।
প্রতিটি মঞ্জুরিতে ১ হাজার থেকে ৩ হাজারটি ফল থাকে যেগুলো পরাগায়নের ৫-৬ মাসের মধ্যে পরিপক্কতালাভ করে।

পাম অয়েল ব্যবহার

পাম অয়েল পুষ্টিকর ভোজ্যতেল। পাম অয়েলের তেল ছাড়াও ভিটামিন-এ, আয়রন ও ক্যালসিয়ামবিদ্যমান। এতে ৪৯ শতাংশ সেচুরেটেড, ৪০ শতাংশ মনোআনসেচুরেটেড এবং ১১ শতাংশ পলিআনসেচুরেটেডফ্যাটি এসিড রয়েছে বিধায় এটি একটি কোলেস্টেরলমুক্ত ভোজ্যতেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ৯০ শতাংশ পাম অয়েলবিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরিতে ব্যবহার হয়। রান্নার তেল হিসেবে এবং মার্গারিন, বাটার, আইসক্রিম, মেয়নেচতৈরিতে পাম অয়েল ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কার্নেল অয়েল সাবান ও গোখাদ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

এছাড়াও কসমেটিক, গ্রিজ, গ্লু, লেখার কালি, মিল্প পাউডার ইত্যাদি তৈরিতে এবং স্টিল মিল, টেক্সটাইল শিল্প,পাইপ ড্রিপিং ইত্যাদি শিল্পকারখানায় লুব্রিক্যান্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পাম অয়েলে carotenoides, tocopherols, tocotrienols ইত্যাদি থাকায় এটি ক্যান্সার প্রতিরোধক ও হৃদরোগে উপকারী।

চাষ পদ্ধতি

চাষের সুবিধাঃ অয়েল পাম যেহেতু একটি পাম জাতীয় গাছ। তাই অয়েল পাম চাষ অন্য ফসলের সঙ্গে জায়গা, বাতাস, খাদ্য উপাদান, সূর্যালোক ইত্যাদির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে না। উঁচু জমির আইল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পতিত জমি,ক্যান্টনমেন্ট, রাস্তার দুপাশ, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পতিত ভূমি, পাহাড়ি অঞ্চলের পাদভূমির বিশাল এলাকা,উপকূলীয় বিশাল এলাকা অয়েল পাম চাষের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা যায়।

জলবায়ু ও আবহাওয়া

২৫ থেকে ৩৩ ডিগ্রী সে: তাপমাত্রা এবং ৮০-৯০ শতাংশ আর্দ্রতা অয়েল পাম চাষের জন্য উপযুক্ত যা এ দেশে বিরাজমান। যেখানে কমপক্ষে ৫-৭ ঘন্টা সারাসরিক সূর্যালোক পড়ে সেখানে অয়েল পাম ভালো হয়, এ দিক থেকে আমাদের দেশের সূর্যালোক ঘন্টায় অয়েল পাম চাষের জন্য বেশি ভালো।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান বিষুব রেখা থেকে ২০ ডিগ্রী ৩৪ মিনিট উত্তর থেকে ২৬ ডিগ্রী ৩৮ মিনিটউত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। আমরা জানি যে ডিগ্রী হতে ২৫ ডিগ্রী উত্তরে অক্ষাংশ বা কর্কটক্রান্তি রেখাসীমানা হচ্ছে ট্রপিক্যাল জলবায়ু। সে হিসেবে বাংলাদেশের জলবায়ু ট্রপিক্যাল এবং সাবট্রপিক্যাল।

মাটিসুনিষ্কাশিত প্রায় সব ধরনের মাটিতে অয়েল পাম চাষ করা সম্ভব যাদের পিএইচমান ৪ থেকে ৭। বাংলাদেশে ময়মনসিংহ, গাজীপুর, টাংগাইল, সিলেট, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, পার্বত্য এলাকাসহ ৩০টি কৃষি জলবায়ু অঞ্চলের (Agro-Ecological Zone) মধ্যে ২৭টি কৃষি জলবায়ু অঞ্চলেই অয়েল পাম চাষ সম্ভব। উঁচু ও মধ্য সবজমিতেই অয়েল পাম করা যায়। বন্যার পানি আসে কিন্তু বেশি দিন থাকে না এমন জমিতেও অয়েল পাম চাষ হয়।

বাংলাদেশের যেসব জায়গায় চাষ করা সম্ভবঅয়েল পাম একটি ট্রপিকাল ফসল এবং এ দেশের সাজেক (রাংগামাটি), দুদুকছড়ি (খাগড়াছড়ি), ঝিনাইদহ,কমিল্লা, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাগুরা এবং চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা পার হয়েছে বিধায় এসব জেলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলায় অয়েল পাম সন্দেহাতীতভাবে চাষ করা সম্ভব।

বাংলাদেশের সর্বত্রই অয়েল পাম চাষ করা সম্ভব। উদাহরণ হিসেবে দিনাজপুর হাজী দানেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১টি অয়েল পামগাছ আছে এবং ওই গাছেও ফল আছে, ঘাটাইলের রাম জীবনপুরের ওসমান গণির বাসায় ২টি ছোট গাছের ১টিতে ফল ধরছে,বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৩টি গাছে প্রায় গাছেই ফল আছে, বন বিভাগ কর্তৃক সৃজিত তেলমাছড়া বিট,মাধবপুর, হবিগঞ্জে ৩ হাজারটি গাছের অধিকাংশ গাছ ফলন্ত এবং কক্সবাজারে হোটেল শৈবালের ৩টি গাছের সবকটি গাছেই ফল আছে। এখানে বলা যায় এই সব গাছে অযত্নে ফলবান। যত্ন নিলে প্রতিটি গাছে আরো ভালো ফল হবে।

জমি তৈরি

মোটামুটি যে জায়গায় জলাবদ্ধতা হওয়ার সম্ভাবনা নেই সে জায়গায় চারা রোপণ করা ভালো।
যদি বেশি দিনের অর্থাৎ ২০ থেকে ২৫ দিন জলাবদ্ধতা থাকে তবে গাছ মরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

চারা উৎপাদন

নার্সারি বেড প্রথমে ফল থেকে মেসোকার্প সরিয়ে বীজ আলাদা করা হয়।

বীজ ৩৯ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রায় ২৪ ঘন্টা গরমপানিতে শোধন করা হয়। তাপ শোধিত বীজ ২৪ ঘন্টা পানিতে ভিজানোর পর ১ ঘন্টা রোধে শুকানো হয়।পরে বেডে ১ ইঞ্চি মাটির নীচে রেখে দিলে ৬০ দিনের মধ্যে ৮০ শতাংশ বীজ অঙ্কুরিত হয়। অঙ্কুরিত বীজপলিথিন ব্যাগে (৫০ সেমি: × ১৫ সেমি:) ২.৫ সেমি: গভীরে স্থাপন করা হয়। N,P,K এবং ইংরেজী সংবলিত slow release fertilizer যেমন সিলভা জেন ট্যাবলেট ১টি করে ব্যবহার করা ভালো।কচি পাতায় ব্লাস্ট বালিফ স্পট দেখা দিলে যেকোনো ছত্রাকনাশক ব্যবহার করলেই রোগ নিয়ন্ত্রণে আসবে।

চারা রোপণ

রোপণ পদ্ধতিবীজ থেকে চারা রোপণ করা ভালো। তবে উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বীজও রোপণ করা যেতে পারে।১২-১৮ মাসের চারা ত্রিভুজ অথবা চতুর্ভূজাকারে বর্ষাকালে ৩০ ফুট পর পর রোপণ করতে হয় (৫৮ চারা/একর)।

জাত

dura, tenera, Ges, pisifera তবে tenera জাতে বেশি তেল থাকায় এটিই বেশি চাষ হয়। সাধারণত: F1 (dura × pisifera) হাইব্রিড বীজ থেকে বংশবিস্তার করানো হয় এবং বিশেষায়িত অয়েল পাম ব্রিড়িং কোম্পানী বীজ উৎপাদন করেথাকে।

পরিচর্যা

সারপ্রচুর পরিমাণে জৈব সারের পাশাপাশি পূর্ণ বয়ষ্ক গাছপ্রতি বছরে ৮০০ গ্রাম নাইট্রোজেন, ৪০০ গ্রাম ফসফরাস এবং ১ হাজার ৮০০ গ্রাম পটাশিয়াম ব্যবহার করা উচিত। এ ছাড়াও প্রতিটি গাছের ৬ ইঞ্চি দুরে ৫টি সিলভা জেন ট্যাবলেট চারদিকে ৪ ইঞ্চি মাটির নীচে স্থাপন করলে গাছের বাড়-বাড়তি ভালো হবে। নাইট্রোজেন সারসরাসরি শিকড়ে যেন না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

পানি ব্যবস্থাপনাঅয়েল পামের সঠিক বাড়-বাড়তিতে পরিমিত মৃত্তিকা রসের প্রয়োজন। বেশি পরিমাণে জৈব সার ব্যবহার করলে সাধারণত: সেচের প্রয়োজন হয় না। লম্বা খরা মৌসুমে ব্যবস্থা থাকলে ভালো। আন্ত:ফসল হিসেবে লিগুমাস,আদা-হলুদ, আনারস ইত্যাদি কভার ক্রপ হিসেবে চাষ করলে ভালো হয়।

পোকামাকড় ও রোগবালাই
রাইনোসরাস বিটেল, রেড পাম উইভিল, অয়েল পাম বাঞ্চ মথ, কেটারপিলার, অয়েল পাম রুট মাইনার ইত্যাদিইহলো অয়েল পামের প্রধান পোকামাকড়। আইপিএম পদ্ধতিতে এসব পোকামাকড় সহজে দমন করা যায়।

পাতার এ্যানথ্রাকনোজ, লেপটোসফেরিয়া, গেলামেরেলা, সারকোসপরা লিফ স্পট, সিডলিং ব্লাইট ইত্যাদি রোগ দেখা যায়। সেগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ এবং সাধারণ ফাংগিসাইট ব্যবহার করলে সহজেই দমন করা যায়।

ফল সংগ্রহ

ভালো জাতের অয়েল পামগাছ ও পরিমিত ব্যবস্থাপনা থাকলে রোপণের তৃতীয় বছর ফল সংগ্রহ করা যায়। কমলা বর্ণ ধারণ করলেই ফল সংগ্রহ করতে হবে। ২-১টি পাকা ফল গাছের নীচে পাওয়া গেলে বা পাখিতে ফেললে ফলের পরিপক্বতা নির্দেশ করে।

অপরিপক্ব ফলে তেলের পরিমাণ খুবই কম। ফল সংগ্রহের সময় খেয়াল রাখতে যাতে মাটিতে পড়ে ফল পেটে না যায়। ফল সংগ্রহের সময় আঘাপ্রাপ্ত হলে অথবা ফেটে গেলে free fatty acid এর পরিমাণ বেড়ে যায়।

২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রক্রিয়াজাতকরণ শুরু কৃষিকথা/অগ্রহায়ণ, ১৪১৫ করা ভালো নতুবা তেলের গুণাগুণ নষ্ট হতে পারে।

ফলন

অয়েল পামগাছ রোপণের তৃতীয় বছর থেকে ফল দেয়া শুরু করে ২৫ বছর পর্যন্ত লাভজনক ফলন দেয়। প্রতি হেক্টর জমিতে বছরে ৪ টন পাম অয়েল উৎপাদিত হয় কিন্তু বর্তমানে মালয়েশিয়ায় ও অষ্টেলিয়াতে হেক্টরপ্রতি ৭ টন পাম অয়েল উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন জাত উদ্ভাবিত হয়েছে।

পাম অয়েল নিষ্কাশনঅয়েল পাম ফল থেকে পাম অয়েল নিষ্কাশন একটি জটিল প্রক্রিয়া। গ্রাম্য এলাকার ছোট মিলে দিনে ১টন তেলে উৎপন্ন হয় আবার বড় মিলে ঘন্টায় ৬০ মন ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ করা যায়।

তেল নিষ্কাশনের ধাপ সমূহ
১. ছড়ার বাষ্পীয় জীবাণুমুক্তকরণ (লাইপেজ এনজাইমকে অকার্যকর করা এবং ক্ষুদ্র জীবাণু মারা যারা মুক্ত ফ্যাটি এসিড তৈরির মাধ্যমে তেলের গুণাগুণ নষ্ট করে)।

২. ছড়া থেকে ফল খসানো।

৩. ক্রাশিং, ডাইজেশন এবং ফলের হিটিং।

৪. হাইড্রোলিক চাপের মাধ্যমে তেল নিষ্কাশন।

৫. পাম অয়েল বিশুদ্ধকরণ।

৬. বীজ থেকে ফাইবার সরানো।

৭. বীজ শুকানো, গেডিং এবং ক্রাকিং।

৮. কার্নেল থেকে এন্ডোকার্প সরানো।

৯. কার্নেল শুকানো এবং প্যাকিং।

সংরক্ষণ

পাম অয়েল ৮৮-১০৫°F তাপমাত্রায় ব্যারেলে তরল অবস্থায় ৬ মাস সংরক্ষণ করা যায়। ভালো পাম অয়েলে ৩.৫ শতাংশ মুক্ত ফ্যাট এসিড থাকে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৮ডিসেম্বর২০২০