বাংলাদেশে এইপ্রথম গবাদি পশুর ব্রুসেলোসিস রোগের টিকা উদ্ভাবন!

322

বাকৃবি’র একদল গবেষক

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক দেশে প্রথমবারের মতো গবাদি পশুর ব্রুসেলোসিস রোগের টিকা উদ্ভাবন করেছেন।  প্রাণির প্রজননতন্ত্রে সংক্রমিত হয়ে গর্ভপাত, বন্ধ্যাত্ব ও মৃত বাচ্চা প্রসব জনিত জটিলতা সৃষ্টিকারী ওই রোগের টিকা উদ্ভাবনে সাফল্য পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন গবেষকদল।

সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্যা জানানো হয়।

গবেষকরা দাবি করেন, ব্রুসেলোসিস প্রতিরোধে আমরা বাংলাদেশের গবাদি পশুতে ব্রুসেলা বায়োভার-৩ শনাক্ত করে সেখান থেকে হিট কিলড ভ্যাক্সিন তৈরি করেছি। গবেষণার কার্যক্রমে আমরা গর্ভপাত ঘটেছে এমন গাভি থেকে মৃত বাচ্চা ও গর্ভফুল নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করেছিলাম। পরে এসব নমুনা থেকে নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে কালচারের মাধ্যমে জীবাণু আলাদা করি। পরে সেই জীবাণুকে নির্দিষ্ট পরিমাণ তাপের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ে অকার্যকর করা হয় যেন তা প্রাণিদেহে রোগ সৃষ্টি করতে না পারে। টিকা হিসেবে এর কার্যকারিতা অবলোকন করার জন্য অকার্যকর জীবাণু গিনিপিগের শরীরে প্রবেশ করানো হয়। প্রতিসপ্তাহ থেকে অন্তর নয় সপ্তাহ পর্যন্ত ফল রেকর্ড করা হয়। দেখা যায় দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এই টিকা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করা শুরু করেছে। এটি চতুর্থ সপ্তাহে সর্বোচ্চ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। এরপরে এটির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করে এবং নবম সপ্তাহে এর কোনো প্রতিরোধ ক্ষমতা পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে গবেষক দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- ডা. আব্দুল্লাহ আল মারুফ, ফারজানা ইয়াসমিন, সুকুমার রায়, আনন্দ চৌধুরী।

প্রধান গবেষক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘এই উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে পারলে গাভির গর্ভপাত ও বাছুরের অকাল মৃত্যু রোধ এবং মানুষের সংক্রমণের রুখে দাঁড়াতে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। বাংলাদেশ পশুপালন নির্ভর অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’

প্রাণিদেহে এই টিকা আশানুরূপ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম হলে আগামী তিন বছরের মধ্যে এটি বাংলাদেশে বাজারজাত করা সম্ভব হবে। টিকাটি সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী মূল্যে পেতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডেএইচ