বাংলাদেশে ব্রাহমা জাতের মুরগি পালনের অপার সম্ভাবনা

1745

ব্রহামা
ব্রাহমা মুরগি সাধারণ মুরগি থেকে অনেকটা বড় প্রজাতির। সর্ব প্রথম আমেরিকা, চীনের সাংঘাই থেকে ব্রাহামা মুরগি তাদের দেশে নিয়ে আসে এবং ব্রাহামা মুরগির জাত নিয়ে কাজ শুরু করে এবং খুব শিগগিরই সফলতা অর্জন করে।

এর ফলে চীনের ব্রাহামা থেকেও আমেরিকার ব্রাহামা আকারে এবং ওজনে বড় হয়ে থাকে। ১৯৫০ সালে ব্রাহামা মুরগিকে আমেরিকার অন্যতম মাংসের যোগান দাতা হিসেবে গন্য করা হয়।

ব্রাহামা মুরগির আদি নিবাস নিয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক আছে। আমেরিকাতে যখন ব্রাহামা মুরগি আনা হয় তখন তাকে সাংঘাই মুরগি বলা হত। সব থেকে চাঞ্চল্যকর ব্যাপার হল, ব্রাহামা মুরগিকে উন্নত করার জন্য বাংলাদেশের চট্টগ্রামের এক বিশেষ প্রজাতির মুরগিকে ব্যবহার করা হয়।

এর ফলে ব্রাহামার মুরগির আকারে এক বিশাল পরিবর্তন আশে। ১৮৫২ সালে আমেরিকার অন্যতম রাজনীতিবিদ জর্জ বুরহাম ইংল্যান্ডের রানি ভিক্টোরিয়াকে ৯টি ব্রাহামা মুরগি উপহার পাঠান। পরবর্তীতে ইংল্যান্ড আমেরিকা থেকে আরও ব্রাহামা আমদানি করে।

১৮৬৫ সালে ব্রিটেন পোল্ট্রি শিল্প সাদা ও ধূসর ব্রাহামাকে গ্রেট ব্রিটেন পোল্ট্রি শিল্পে অন্তর্ভুক্ত করে। ১৮৭৪ সালে সাদা ও ধুসর রঙের ব্রাহামা মুরগিকে সব থেকে ভাল মানের মুরগি হিসেবে আমেরিকান পোল্ট্রি আসোসিয়নে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

১৮৫০ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত ব্রাহামা মুরগিকে অন্যতম জনপ্রিয় মাংস হিসেবে খাওয়া হতো। ব্রাহামা বড় আকারের মুরগি, কিছু কিছু প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ব্রাহামা হয় ৮ কেজির মত হয় আর প্রাপ্ত বয়স্ক স্ত্রী মুরগি ৬ কেজি হয়ে থাকে। তবে সাধারণত এদের গড় ওজন হয় মোরগ ৫.৫ কেজি এবং মুরগির ৪.৫ কেজি। ব্রাহামা মুরগির ডিম সাধারণ মুরগির থেকে বড় হয় ও বাদামী রঙের হয়। ডিমের গড় ওজন হয় ৫৫-৬০ গ্রাম।

আমেরিকাতে সাধারণত ৩টি রঙের ব্রাহামার দেখা যায়। সাদা, ধূসর ও সোনালি। সাদা ব্রাহামার শরীরের বেশিরভাগ অংশ সাদা হয়। ঘাড় থেকে পিঠ পর্যন্ত কাল ছোপ ছোপ থাকে এবং লেজের অংশ কলো হয়। ধূসর রঙয়ের ব্রাহমা মুরগি পুরো শরীরটা ধূসর বা কিছুটা ছাই রঙয়ের হয় দেখতে। মাথা থেকে গলা পর্যন্ত সাদা রঙয়ের হয়।

লেজের শেষ অংশ কালো রঙ্গের হয়। সোনালি রঙের ব্রাহমার পুরো শরীরটা সোনালি রঙের। ঘাড় থেকে গলা পর্যন্ত কাল ছোপ ছোপ আছে। এবং লেজের শেষ অংশ কালো হয়।

ব্রাহমা মুরগি আমাদের দেশীয় আবহাওয়াতে খুব সহজেই মানিয়ে যেতে পারবে। কারণ ব্রাহমা মুরগি গরম বা ঠান্ডা যে কোন আবহাওয়াতে সাবলীল থাকে।

বাংলাদেশে আবহাওয়াতে এদের বাণিজ্যিকভাবে পালন সম্ভব। অনেকেই ইতোমধ্যে ব্রাহমা মুরগি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন, তবে সেটা নিতান্ত্যই কম। পোলট্রি শিল্পের সাথে জড়িত ব্রিডার ও খামারিরা এই মুরগি পালনের প্রতি আগ্রহী হলে দেশে যেমন মাংসের চাহিদা মিটবে তেমনি লাভের মুখ দেখবে খামার পর্যায়ে থাকা মানুষ। সূত্র: বেকার সমস্যা সমাধান।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন