মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শসাচাষিদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে রমজান মাস। বাজারদর বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় হাঁসি ফুটেছে এই শসাচাষিদের মুখে। ১০ টাকা দরের শসা এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। এমন দামে ভোক্তারা অসন্তোষ প্রকাশ করলেও চাষি আর ব্যবসায়ীরা বেশ খুশি।
গাংনী বামন্দি কাঁচাবাজারের আড়তদার আব্দুল হালিম জানান, রমজানের ১০ দিন আগে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা দরে। শসা কেনার লোকও পাওয়া যায়নি। ফলে শসা পচে গেছে। কিন্তু রমজানের শুরু থেকেই শসার চাহিদা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। সেই সঙ্গে বেড়েছে দামও।
শাহারবাটি গ্রামের সবজিচাষি মকসেদ আলী জানান, শসা বর্তমানে গাংনীর চাষিদের কাছে একটি জনপ্রিয় চাষ। রমজানের আগে শসা কম দামে বিক্রি করে লেবার খরচ হয়নি। রমজান মাস আসায় শসাচাষিদের কপাল খুলেছে। শসা এখন আড়তে বিক্রি হচ্ছে ৬০
থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে। আর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শসা ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জোড়পুকুর গ্রামের শসাচাষি ইমারুল জানান, যে ব্যবসায়ীরা শসা কেনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন, তারাই এখন শসা কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন চাষিদের কাছে। বাজার চড়া হওয়ায় এখন একই সঙ্গে চাষি ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন। একই কথা জানালেন শসাচাষি কুঞ্জনগরের আব্দুল হাকিম।
ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, রমজানের আগে শসা কিনে মোটা অঙ্কের লোকসান গুনেছি। কিন্তু রমজান মাস আসায় চাহিদা বেড়ে গেছে। ফলে বাজারদরও বেড়ে গেছে। এখন আগের লোকসান অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছি।
ক্রেতারা জানান, রমজানে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা দরকার। ১২ টাকার শসা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। এটা চাষি ও ব্যবসায়ীদের স্বেচ্ছাচারিতা। সাধারণত ৫-১০ টাকা দাম বাড়লেও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকে, কিন্তু পাঁচ-ছয়গুণ মূল্য বৃদ্ধি যেন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান, তিনি দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে বিভিন্ন বাজারে আড়তদার, ব্যবসায়ী ও চাষিদের সঙ্গে কথা বলছেন। এরই মধ্যে আশানুরূপ সাড়া মিলেছে। কেউ সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।