বাফিটা’র বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

321

বাংলাদেশ এগ্রো ফিড ইনগ্রিডিয়েন্টস ইমপোটার্স এন্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফিটা) এর বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর হ্যাং আউট রেস্টুরেন্ট এন্ড পাার্টি সেন্টারে এই বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাফিটার সভাপতি ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের আসন গ্রহণের পর পবিত্র কুরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠান পর্ব শুরু হয়।

অনুষ্ঠানে বাফিটা’র সভাপতি সুধীর চৌধুরী বলেন, ২০১৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এই সংগঠনের জন্ম হয়। বিগত সাড়ে তিন বছর নিবন্ধন পাওয়ার আগে আমরা অনেক উন্নয়ন ও বিনোদন মূলক কাজ করেছি। উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যে ছিল ডিম দিবসে আমরা নিজেদের খরচে সারাদেশে বিনা টাকায় সাধারণ মানুষদের মাঝে ডিম বিতরণ করেছি। পরপর তিন বছর ধরে আমরা ডিম বিতরণ করেছি। নিবন্ধন পাওয়ার পূর্বে বাফিটা পরিবারকে একিত্রত ও সোহার্দ্য পূর্ণতায় রাখার জন্য আমরা বনভোজন তথা পিকনিক করাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেছি।

২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি আমরা সরকার থেকে বাফিটার স্বীকৃতি পেয়ে থাকি। এবং এই স্বীকৃতির মাধ্যমে আমরা দেশের নিয়মতান্ত্রিকভাবে বৈধতার আশ্রয় গ্রহণ করি।

তিনি আরো বলেন, ২০১৭ সালের ১৭ ই জানুয়ারির পর থেকে আমরা হাটি হাটি পাপা করে করে অনেকগুলো কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তার কিছুটাতে আমরা সফলতা লাভ করেছি এবং কিছুটা এখনো চলমান প্রক্রিয়া আছে।

সুধীর চৌধুরী বলেন, আমাদেরকে গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য আমদা‌নি, সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর বিশেষ সতর্ক হতে হবে। কারণ, আমরা য‌দি খারাপ কাঁচামাল সরবরাহ করি সেটির খারাপ প্রভাব পড়বে ফিড উৎপাদক থেকে শুরু করে, পশু-পাখি এবং সর্বশেষ মানব স্বা‌স্থ্যে। সুতরাং এ ব্যাপা‌রে সবারই দায়িত্বশীল হ‌তে হ‌বে। সংগঠ‌নের জন্য দা‌য়িত্বশীল ও সৎ হতে হবে। আগামী বছর (২০২২ সন) বা‌ফিটার নিজস্ব অ‌ফিস ক্রয়ের ঘোষণা দেন তিনি।

বা‌ণিজ্য নী‌তিতে বাফিটার অংশগ্রহণ, এফ‌বি‌সি‌সিআই এ বাফিটার ৫ জন সদ‌স্যের অন্তর্ভুক্তি, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এর এনওসি মি‌টিং‌য়ে বা‌ফিটা প্রতি‌নি‌ধিত্ব করার সু‌যোগ পে‌য়ে‌ছে বলে জানান তিনি।

বাফিটা এখন অনেকগুলো চলমান প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।এরমধ্যে উৎপাদন, আমাদনি এবং সরবরাহকারীর মধ্যে যে বৈষম্য ছিল তা মন্ত্রাণলয়ের যোগাযোগের মাধ্যমে তা দূর করতে পেরেছি। আর এটা আমাদের বড় একটি সফলতা।

সভায় ২০২০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন। এ সময় তিনি বিগত এক বছরে সংগঠনের বিভিন্ন অর্জন সম্পর্কে বর্ণনা করেন এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

বাফিটা‘র মহাসচিত মো. হেলাল উদ্দিন ২০২০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন ও অনুমোদন করার পর ট্রেজারার মহোদয় কর্তৃক ২০১৯-২০ অর্থবছরের হিসাব, অডিট রিপোর্ট এবং ২০২০-২১ সালের বাজেট উপস্থাপন এবং অনুমোদন করা হয়।

সমাপনী বক্তব্যে বাফিটা’র সহ-সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব বলেন, মার্চ মাস স্বাধীনতা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনের মাস। আপনারা জানেন আজকে বিশ্বের সুখী দিবস। বিশ্বের কোন দেশ কোন অবস্থানে আছে জাতিসংঘের মাধ্যমে গতকালকে তা প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ সারা বিশ্বের মধ্যে সুখিল তালিকায় ৬৮ তম রাষ্ট্র, ভারত ৯২ তম, পাকিস্তানের কোন জায়গা এখনো পায়নি। ১৯৭১ সাল থেকে শুরু করে ২০২০সাল নাগাদ কোথায় ভারত, কোথায় পাকিস্তান আর কোথায় বাংলাদেশে। আমরা কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে।

এটা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা। সোনার বাংলার পথ ধরেই এগ্রো ফিড ইন্ডাস্ট্রি সেক্টরে বাফিটার আগমন। বাংলাদেশ গার্মেন্টস সেক্টরের পরের শিল্প পোল্ট্রি শিল্প। এই পোল্ট্রিশিল্পের যে উপকরণ তার ৭৩ থেকে ৭৪ শতাংশ বাফিটার নেতৃবৃন্দের মাধ্যমেই আমদানি করা হয়। সুতরাং সোনার বাংলা যদি করতে হয় তাহলে বাফিটাকে দিয়ে করতে গেলে মনে হবে সেটা কেবল একটা স্বপ্ন।

তিনি আরও বলেন আমি মনে করি বাংলাদেশের যে যে সেক্টরেই থাকুক না কেন বাফিদাকে বাদ দিয়ে কখনো উন্নয়ন সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক সংগঠন আছে যেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত না। কিন্তু আপনারা দেখেন অতি অল্প সময়ের ভিতর বা বাফিটা নিবন্ধিত হয়েছে। এটা আমাদের অনেক বড় একটি অর্জন বলেও তিনি জানান।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিটিসি ফিড ইনগ্রেডিয়েন্টস অ্যান্ড এডিটিভস্ -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলতাফ বিশ্বাস এবং এনাম ফিড অ্যান্ড চিকস্ লিমিটেড -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এনামুল হক এনাম। এ সময় তাঁরা সংগঠনকে কীভাবে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় এবং আমদানি সমস্যা সমাধানে করণীয় সম্পর্কে নিজেদের মতামত প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে বাফিটার বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান এবং নতুন সদস্যাদের পরিচিতি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সবশেষে মধ্যাহ্নভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির সমাপ্ত হয়।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২২মার্চ২০২১