বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ‘বারি বিটি’ জাতের এই বেগুন চাষ করে অনেক কৃষকই লাভবান হয়েছেন। আর এ কারণে দিন দিন এ জাতের বেগুন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এ গোপালগঞ্জের কৃষকরা।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গহরডাঙ্গা গ্রামের আদর্শ কৃষক নাসির হোসেন আগে তার জমিতে আলুসহ অন্যান্য সবজির চাষাবাদ করতেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফলন না পেয়ে অনেকটা হতাশ ছিলেন। হতাশাগ্রস্ত এই কৃষক অবশেষে গত বছর শরণাপন্ন হন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে। কৃষি বিভাগের সহায়তা নিয়ে এখন একজন আদর্শ বেগুন চাষিতে পরিণত হয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট তখন তাকে ‘বারি বিটি-৩ ও ৪’ জাতের বেগুন চাষের পরামর্শ দেয়। এ ছাড়া তার ৪০ শতাংশ জমির ওপর একটি পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী প্লট করতে সহায়তা করে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী গত বছরের অক্টোবরে প্রায় ১ হাজার ৩০০ চারা রোপণ করেন। এ বছর জানুয়ারি থেকে প্রতিদিন গড়ে এক মণ বেগুন বাজারে বিক্রি করতে পারছেন। দামও পাচ্ছেন ভালো।
কৃষক ও কৃষি বিভাগ বলছে, বেগুন চাষের সময় ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণে ৭০-৮০ ভাগ বেগুন মাঠেই নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য প্রতি বছর কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। ফলে বেগুন চাষের খরচ বেড়ে যায় এবং কৃষকরা এ থেকে লাভবান হতে পারেন না। তা ছাড়া প্রচুর পরিমাণে কীটনাশকের ব্যবহার মানবদেহের জন্যও ক্ষতিকর। পোকার আক্রমণে সহনীয় হিসেবেই বারি বিটি-১, ২, ৩ ও ৪ নামে চারটি নতুন জাত উদ্ভাবন করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। এসব জাতের বেগুনে পোকা আক্রমণ করতে পারে না। ফলে বিষমুক্ত বেগুন উৎপাদন সম্ভব হয়।
এ বছর জেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আওতায় ১২০ বিঘা জমিতে ১২০টি প্রদর্শনী প্লট ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আওতায় ২৫ বিঘা জমিতে ৪৪টি প্লটে বারি বিটি ৩ ও ৪ জাতের বেগুনের পরীক্ষামূলক চাষাবাদ হচ্ছে।
বারির টুঙ্গিপাড়া অফিসের বৈজ্ঞানিক সহকারী মো. লুত্ফর রহমান তামিম জানান, অন্যান্য জাতের বেগুনে পোকার আক্রমণের কারণে বিষ স্প্রে করা লাগলেও বারি উদ্ভাবিত বারি বেগুন গাছে বিষ স্প্রে করা লাগে না।
গোপালগঞ্জ বারির ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এইচ এম খায়রুল বাসার ও গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সমীর কুমার গোস্বামী জানান, এই সবজি বিষমুক্ত এবং খেতে সুস্বাদু। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। তাই কৃষকরা লাভবান হবেন।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন