রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন গবেষণা চালিয়ে অমৌসুমি কাঁঠালের একটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন।বারি কাঁঠাল-২ নামে এ জাতটি আনসিজন অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে শুরু করে এপ্রিল পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে।নতুন উদ্ভাবিত বারি কাঁঠাল-২ জাতটি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বীজ প্রত্যায়ন বোর্ড থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করা হয়েছে।
রামগড় পাহাড় অঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মু. জুলফিকার আলি ফিরোজ জানান, তার নেতৃত্বে এ গবেষণা কেন্দ্রের চারজন কৃষি বিজ্ঞানি দীর্ঘ তিন বছর গবেষণা করে বারি কাঁঠাল-২ জাতটি উদ্ভাবনে সফলতা অর্জন করেন। ড. ফিরোজ বলেন, ‘ পাহাড়ে সাধারণত মে থেকে জুলাই পর্যন্ত কাঁঠাল পাওয়া যায়। এ সময় কাঁঠালের বাজার মূল্য কম থাকে। সেক্ষেত্রে অমৌসুমে অর্থাৎ জানুয়ারি-এপ্রিল মাসে বারি কাঁঠাল-২ চাষ করে বেশ ভাল মূল্য পাওয়া যাবে।’
জানা গেছে, নতুন উদ্ভাবিত জাতটির বৈশিষ্ট্য হলো ওজন গড়ে ৭ কেজি, খুবই সুস্বাদু, মিষ্টতার পরিমাণ ২১%, ভক্ষণযোগ্য অংশ ৬০% এবং ভিতরের রং উজ্জ্বল হলুদ। পাহাড়ি অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়ায় মৌসুমি কৃষকেরা দূর-দূরান্ত থেকে প্রচুর কাঁঠাল পরিবহন করেও যথাযথ মূল্য পায় না। কিন্তু অমৌসুমে মাঝারি আকারের একটি কাঁঠালের গড় মূল্য ২০০-২৫০ টাকা হয়ে থাকে। কাজেই অমৌসুমি বারি কাঁঠাল-২ কৃষকদের কাঁঠালের যথাযথ মূল্য পেতে সহায়ক হবে। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মাটি কাঁঠাল চাষের জন্য খুবই উপযোগী।
সাধারণত কাঁঠালের বীজ থেকে চারা তৈরি করা হয়। যদিও এতে গাছের মাতৃ বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে না। তথাপি ফলনে বিশেষ তারতম্য দেখা যায় না। পাকা কাঁঠাল থেকে পুষ্টি ও বড় বীজ বের করে ছাই মাখিয়ে ২/৩ দিন ছায়ায় শুকিয়ে বীজতলায় বপন করলে ২০-২৫ দিনের মধ্যে চারা গজাবে। ১/২ মাসের চারা সর্তকতার সাথে তুলে পলিব্যাগে রাখতে হবে। ১ বছরের চারা রোপণ করতে হবে।
জাতের বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রাখতে হলে গ্রাফটিং বা টিস্যু কালচারের চারা লাগাতে হবে। চারা লাগানোর উপযুক্ত সময় জুন-আগস্ট মাস। গাছ ও সারির দূরত্ব হবে ১০X১০ মিটার। গাছ রোপণের ১৫ দিন পূর্বে ১ X ১ X ১ মিটার গর্ত তৈরি করে ২০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম টিএসপি ও ২০০ গ্রাম এমপি সার প্রয়োগ করতে ২০০ গ্রাম।
চারা লাগানোর ১ মাস পর গাছ প্রতি ২০০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে। গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রতি বছর ১০% সার বাড়িয়ে দিতে হবে। একর প্রতি গাছের সংখ্যা হবে ৪০ টি এবং ফলন হবে ২৪ টন।
সূত্র কালের কন্ঠ
ফার্মসএন্ডফার্মার/৩০জুলাই২০