একজন বেকার নারী অথবা পুরুষ নিজের পরিবারের সবজির চাহিদা মেটানোর জন্য বাড়ির আঙিনায় লাল শাকের চাষ করতে পারেন।অথবা কর্মসংস্থান ব্যবস্থার জন্য খুব স্বল্প সময়ে অল্প খরচে নিজের চাষের জমিতে অথবা বর্গা নেওয়া জমিতে বানিজ্যিক ভাবে লাল শাক চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন।
লাল শাক বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বহুল জনপ্রিয় পুষ্টিকর পাতা জাতীয় সবজি।এটি একটি ভিটামিন সমৃদ্ধ খাদ্য।লাল শাক একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার।আমাদের দেশের অনেক জায়গায় এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লাল শাক চাষ ও বাজারজাত করা হচ্ছে।
পুষ্টিগুণ–
এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিটামিন-এ, বি ও সি এবং ক্যালসিয়াম বিদ্যমান।এ সবজি কোষ্ঠ্যকাঠিন্য ও ভিটামিন-এ দৃষ্টিহীনতা দূরীকরণে এবং ভিটামিন সি শারীরিক ও মানসিক গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
জাত–
আমাদের দেশে বারি লাল শাকের চাহিদা অনেক বেশি।এ জাতের শাকের পাতার বোটা ও কাণ্ড নরম ও উজ্জ্বল লাল রঙের।প্রতি গাছে ১৫ থেকে ২০টি পাতা থাকে।গাছের উচ্চতা ২৫-৩৫ সে.মি. এবং ওজন ১০-১৫ গ্রাম হয়ে থাকে।এ শাকের ফুলের রঙ লাল এবং বীজ গোলাকার হয়। বীজের উপরিভাগ কালো ও কিছুটা লাল দাগ মেশানো থাকে ।
লাল শাক চাষের মাটি–
প্রায় সব ধরনের মাটিতেই সারাবছর বারি লাল শাক-১ এর চাষ করা হয়।তবে দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটি লাল শাক চাষের জন্য উত্তম।
রোপণের সময়–
আমাদের দেশে সারা বছরই লালশাক চাষ করা যায়।তবে শীতের শুরুতে লাল শাকের ফলন বেশি হয়।
জমি তৈরি ও বীজ বপন
লাল শাক চাষের আগে জমি খুব ভালোভাবে ৪/৫ টি চাষ ও মই দিয়ে তৈরি করতে হবে। জমির মাটি ঝুরঝুরে ও মিহি করতে হবে।লাল শাকের বীজ ছিটিয়ে ও সারিতে বপন করা যায়। তবে সারিতে বীজ বপন করা সুবিধাজনক। সারিতে বীজ বপণ করলে,এক সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব ২০ সে.মি. রাখতে হবে।
সার প্রয়োগ–
প্রতি শতকে গোবর-৫০ কেজি
ইউরিয়া- ৮০০-৯০০ কেজি
টিএসপি- ৪০০-৫০০ গ্রাম
এমপি- ৩০০-৪০০ গ্রাম
গোবর, টিএসপি, এমওপি ও জিপসাম সার পুরোটা এবং ইউরিয়ার অর্ধেক জমি তৈরির চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রয়োগ করতে হবে।বাকি অর্ধেক ইউরিয়া দুই কিস্তিতে বীজ বপনের ১০ এবং ১৮ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে।
পরিচর্যা ও সেচ
বীজ গজানোর এক সপ্তাহের পর প্রত্যেক সারিতে ৫ সে.মি. পর পর গাছ রেখে বাকি গাছগুলো তুলে ফেলতে হবে।নিড়ানি দিয়ে জমি আগাছামুক্ত করতে হবে।জমির উপরের মাটিতে চটা হলে নিড়ানি দেওয়ার সময় তা ভেঙ্গে দিতে হবে।মাটির অবস্থা বুঝে সেচ দিতে হবে।
ফসল সংগ্রহ–
বীজ বপনের এক মাস পর ফসল সংগ্রহ করা যায়।যেসব গাছ অন্য গাছের তুলনায় একটু বড় সেগুলো প্রথমে তুলতে হবে।দুই তিন দিন পর পর এভাবে ফসল সংগ্রহ করা যেতে পারে। লাল শাকের ফলন প্রতি শতকে ৪০-৫০ কেজি হতে পারে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৭এপ্রিল২০