বাড়ি বাড়ি পোলট্রি খামার যে গ্রামে

308

মুরগি খামার
পোলট্রি মুরগির গ্রামের নাম হালিদা। এ গ্রামের বাড়ি বাড়ি রয়েছে পোলট্রি খামার। এ গ্রামের মানুষের আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে মুরগির খামার। প্রতি মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক কোটি টাকার মুরগি বিক্রি হয় এ গ্রাম থেকে। গ্রামের নারী-পুরুষ ব্যস্ত থাকেন মুরগি পরিচর্যায়। এ গ্রামের রাস্তা দিয়ে হাঁটলে দেখা যাবে শুধুই মুরগির খামার। এ কারণে হালিদা মুরগির গ্রাম হিসেবেই পরিচিতি লাভ করেছে।

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার ঘোগা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চলের একটি গ্রামের নাম হালিদা। উপজেলা শহর থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে এ গ্রামটির অবস্থান। রসুলপুর বনাঞ্চলের একটি বিটের নাম হালিদা। এক সময় এলাকাজুড়ে ছিল রসুলপুরের বন। ক্রমেই বন উজাড় হওয়ায় এ এলাকায় গড়ে ওঠে বসতঘর।

বন কেটে তৈরি করা হয় ঘরবাড়ি। ক্রমেই বসতঘর বেড়ে এখন পাঁচশতাধিক মানুষের বাস এ গ্রামে। বনের জমি কেটে তারা শুরু করেন বিভিন্ন কৃষি আবাদ। বনের জমি হওয়ায় কৃষি ফসল তেমন একটা ভালো হতো না। কলা ও লেবু চাষ করে ওই গ্রামের মানুষ সংসার চালাত। এতে তাদের ভালোভাবে সংসার চলত না। তাই এ গ্রামের বাসিন্দা ওয়াশিম মিয়া দশ বছর আগে সর্বপ্রথম শুরু করেন পোলট্রি খামার।
৫০০ মুরগি দিয়ে তার খামার শুরু।

এক মাসেই মুরগি থেকে লাভ হওয়ায় তিনি ক্রমেই মুরগির সংখ্যা বাড়াতে থাকেন। এখন তার রয়েছে পাঁচটি মুরগির খামার। খামারে রয়েছে কয়েক হাজার মুরগি। মুরগি বিক্রির টাকায় তিনি এখন গ্রামের একজন স্বাবলম্বী ব্যক্তি। খামারে তার লাভ দেখে গ্রামের মানুষ আগ্রহী হয়ে ওঠে মুরগি পালনে। একটি-দুটি করে এখন ওই গ্রামে রয়েছে শতাধিক পোলট্রি খামার।

গ্রামের পথে হাঁটলে শুধু চোখে পড়বে প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় কয়েকটি করে পোলট্রি খামার। পুরুষের পাশাপাশি বাড়ির গৃহবধূরাও ব্যস্ত থাকেন মুরগির পরিচর্যায়। বাড়ির কাজের সঙ্গে তারা এটিও রুটিন হিসেবে বেছে নিয়েছেন। খামারিরা বিভিন্ন ফার্ম থেকে একদিন বয়সের বাচ্চা কিনে তাদের খামারে তোলেন। তারা প্রতিটি বাচ্চা কেনেন ৬৫ টাকা দরে। দেড় কেজি থেকে পৌনে দুই কেজি ওজন হলে মুরগিগুলো পাইকারদের কাছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন।

গ্রামের ওয়াশিম মিয়া বলেন, প্রথম অবস্থায় খুব ভয়ে ভয়ে শুরু করেন মুরগির খামার। এক মাসের মধ্যে মুরগিতে লাভ দেখা শুরু করেন ব্যাপকভাবে। এখন একটি থেকে কয়েকটি খামার গড়ে তোলা হয়েছে। তার খামারে কয়েক হাজার মুরগি রয়েছে। এ গ্রামে এখন ঘরে ঘরে গড়ে উঠেছে মুরগির খামার।

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হেলেনা আক্তার বলেন, হালিদা গ্রাম এখন পোলট্রি গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ