জেলায় আগের মতো আর মহিষ পালন চোখে পড়ে না। কালের আবর্তে বিলুপ্ত হতে চলেছে মহিষ। জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে অল্প কয়েকটি মহিষ এর সন্ধান পাওয়া গেছে। এ অঞ্চলে আগে প্রায় প্রত্যেকটি পরিবারের কৃষকরা মহিষ পালন করত। এ মহিষ দিয়ে তারা কৃষি জমি চাষাবাদসহ মহিষ এর গাড়ি চালাতো। এখন এ এলাকায় আর মহিষের গাড়ি চোখে পড়ে না। মহিষের গাড়ি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
বর্তমানে কৃষিতে এসেছে নানান পরিবর্তন। এখন কৃষকরা মহিষ অথবা গরুর হাল দিয়ে চাষ বাদ দিয়ে দিয়েছে। এ মহিষ পালন কমে যাওয়ায় এখন এর দাম অনেক। এখন একটি ছোট মহিষ কম পক্ষে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হয়। এখন আগের মতো এ জেলার হাট-বাজারে মহিষ বিক্রি হয় না। মহিষের সংখ্যা কমে যাওয়ার এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এক অনুসন্ধানে জানা যায়, এখন মহিষ বিক্রি হয় প্রতি বছরের মেলা চলাকালীন সময়ে। প্রতি বছর কালীপূজার সময় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার দণ্ডপাল ইউনিয়নের কালীগঞ্জে কালী মেলা বসে। এ মেলায় মহিষ বিক্রি হতে দেখা যায়। অপরদিকে প্রতিবছর আটোয়ারী উপজেলার রাস পূর্ণিমাতে আলোয়াখোয়া মেলা বসে। মাসব্যাপী এ মেলায় অল্প মহিষ বিক্রি হয়।
মহিষের সংখ্যা কম বলে এর দাম অনেক বেশি। মহিষের পালন কমে যাওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের আর মহিষের মাংস খেতে পারে না। আগের সময় মাইক দিয়ে ঢোল বাজিয়ে হাট-বাজারগুলোতে মহিষের মাংস বিক্রি হত। বর্তমানে সেই চিত্রটি বদলে গেছে। এক সময় মহিষের মাংস এ অঞ্চলের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণ করত এবং এর মাংস খুবই সুস্বাদু ছিল। মহিষ পালন কমে যাওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ আমিষের চাহিদা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সহিদুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ উপজেলার মহিষ এর খামার গড়ে উঠেনি। আমাদের কাছে যদি কেউ মহিষ পালনের কথা বলতে আসে তাহলে আমরা তাদের সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদানের কথা বলি। তিনি আরো বলেন যে, এখন আর আগের মত ঘাস না থাকায় মহিষ পালনে কেউ এগিয়ে আসছে না। যদি পর্যাপ্ত ঘাসের ব্যবস্থা করা যায় এবং সরকারি সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করা হয় তাহলে মহিষ পালন করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন