পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় পাবনার বাজারে অপরিপক্ক পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। বাজার স্বাভাবিক থাকলে যে পেঁয়াজ কেনায় ক্রেতাদের আগ্রহ কম থাকে সেটিই এখন ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রপ্তানি হচ্ছে আশপাশের বিভিন্ন জেলায়। এর প্রভাবে স্থানীয় বাজারে পুরোনো পেঁয়াজের দামও কমতে শুরু করেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে পেঁয়াজের মোট চাহিদার এক চতুর্থাংশ উৎপাদন হয় পাবনায়। আর সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের হাট বসে সুজানগর উপজেলায়। এ হাটে এখন অপরিপক্ক পেঁয়াজের পাশাপাশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার সুজানগর হাটে পেঁয়াজ বিক্রি করতে আসা কৃষক আব্দুল মতিন ও আবুল কাশেম বলেন, এবার পেঁয়াজ উৎপাদনের খরচ বেড়েছে।
ভালো দাম না পেলে লোকসানে পরতে হতে পারে। তাই উপযুক্ত সময়ে পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করতে এনেছেন। যা দাম পাচ্ছেন তা সন্তোষজনক।
সুজানগরের মতো পাবনা সদরের বাজারেও অপরিপক্ক পেঁয়াজ উঠছে। চর বলরামপুরের কৃষক আসলাম খান জানান, বেশি দামের আশায় অপরিপক্ক পেঁয়াজ তুলেছেন। দামও বেশি পাচ্ছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর পাবনায় নতুন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৮ মেট্রিক টন। বিপরীতে জেলায় পেঁয়াজের চাহিদা ৪২ হাজার ৪৮০ মেট্রিক টন।
কৃষক, পাইকার আর খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে পাইকারিতে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়।
সদরের বড় বাজারের এক পাইকারি ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করে বলেন, কৃষক পর্যায় থেকে বাজারে আসা অপরিপক্ক পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে কেনা হচ্ছে। আর বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। অন্য পেঁয়াজের তুলনায় দাম কম দেখে অনেক ক্রেতা অপরিপক্ক পেঁয়াজের দিকে ঝুঁকছেন।
বড় বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘দাম আজ (মঙ্গলবার) কিছুটা কম হওয়ায় সস্তির নিঃস্বাস ফেলতে পারছি।’
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জামাল উদ্দিন কালের কন্ঠকে বলেন, নতুন পেঁয়াজ বাজারে ওঠায় দাম ক্রেতার নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। প্রশাসনের সমন্বয়েও বাজার তদারকি জোরদার করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে আসবে।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) পাবনা শাখার সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, যেহেতু পেঁয়াজের দাম আমদানির ওপর নির্ভর করে ওঠানামা করে; ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নেয়। তাই শুধু ভারতকেন্দ্রিক আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে সরকারকে বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ আনার কথা চিন্তা করতে হবে।