শেখ হেদায়েতুল্লাহ, খুলনা থেকে: আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে খুলনায় সাপ্তাহিক অর্ধশত পশু হাট বসছে। ইতোমধ্যে খুলনা জেলা প্রশাসকের দপ্তর হতে ২০টি অস্থায়ী পশু হাটের অনুমতি দেয়া হয়েছে। আরও কমপক্ষে ১০টি পশু হাটের অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এছাড়া জেলার ৯ উপজেলায় ১৫টির স্থায়ী পশু হাট রয়েছে। যেখানে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে গরু, ছাগল, ভেড়া বিক্রি হয়ে থাকে। সে সমস্ত সাপ্তাহিক হাটও কোরবানি উপলক্ষে নিয়মিত কোরবানির পশুহাটে পরিণত হয়েছে।
এদিকে পশুহাটগুলোতে ক্রেতা, বিক্রেতা, ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
জানা যায়, খুলনা জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে কোরবানির হাট বসে থাকে। নগরীর সবচেয়ে গবাদিপশুর হাটটি বসে খুলনা সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত জোড়াগেট কাঁচা বাজারের স্থানে। এছাড়া ফুলবাড়ি গেটেও একটি পশু হাট বসে থাকে। জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার খর্নিয়া, শাহপুর, আঠারোমাইল, চুকনগর ও বানিয়াখালী; পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর, চাঁদখালী, কাঁচিকাটা, পাইকগাছা সদর; দাকোপ উপজেলায় বাজুয়া ও চালনা কয়রা উপজেলার দেউলিয়া, গোবিন্দপুর, কালনা, ঘুগরাকাটি, মান্দারবাড়িয়া ও হোগলায় পশুর হাট বসে। পুলতলা উপজেলার ফুলতলা সদর ও পথের বাজার; দিঘলিয়া উপজেলার জালাল উদ্দিন কলেজ মাঠ ও এম এ মজিদ কলেজ মাঠ; তেরখাদা উপজেলার ইখড়ি কাটেঙ্গা; বটিয়াঘাটা উপজেলার বাইনতলা, খুটির হাট, উপজেলা সদর ও বারোআড়িয়া; রুপসা উপজেলার আমতলা তালিমপুর ও পূর্ব রুপসায় বসে পশুর হাট।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের বাজার সুপার গাজী আলাউদ্দিন বলেন, নগরীর জোড়াগেটে পশুহাটে ব্যবসায়ী, ক্রেতা, বিক্রেতাদের নিরপত্তা দিতে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। হাটে ব্যাংকের ৬টি কাউন্টার থাকবে। এছাড়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক জাল টাকা সনাক্তকরণ মেশিনও রাখা হবে। এছাড়া হাটে সার্বক্ষণিক ভেটেরিনারি সার্জন পশুর স্বাস্থ্য তদারকি করবে। তিনি বলেন, এবার রাজস্ব আযের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ৬ লাখ টাকা। গতবার রাজস্ব আয় হয় ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর বিশেষ শাখার অতিরিক্ত উপ কমিশনার ও কেএমপির মুখপাত্র মনিরা সুলতানা বলেন, নগরীতে নিয়মিত পুলিশ টহলের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। নিয়মিত তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, নগরীর জোড়াগেট পশু হাটে কেএমপির পক্ষ থেকে পুলিশ কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। গবাদি পশু হাটে যাতে ক্রেতা, বিক্রেতা ও ব্যবসায়ী নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে সে লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্লা জানান, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে জেলার সর্বত্র ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে গবাদি পশু আনা নেয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোন রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য পুলিশ সদস্যদের প্রতি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গবাদি পশু বিক্রেতারা যাতে পছন্দমত হাটে তাদের পশু বিক্রি করতে পারে সেজন্য পুলিশ সদস্যরা তৎপর থাকবে। তাছাড়া পশুবাহি কোন যানবাহন সড়কের উপর দাঁড় না করাতে পারে সেজন্য কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি পশুহাটে জাল নোট পরীক্ষার জন্য ব্যাংগুলোর সাথে কথা হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল আহসান বলেন, জেলায় নিয়মিত সাপ্তাহিক পশু হাটের বাইরেও কোরবানি ঈদ উপলক্ষে অস্থায়ী হাট বসে থাকে। এখন পর্যন্ত ২০টি অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আরও প্রায় ১৫টি অস্থায়ী হাটের অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম