রুটিফলের উদ্ভিদ বিজ্ঞানীয় নাম Artocarpus communis । গ্রীক শব্দ আরটস অর্থ রুটি আর কারপাস এর মানে হল ফ্রুট বা ফল। সুতরাং আরটোকারপাস এর মানে দাঁড়াচ্ছে; ব্রেডফ্রুট বা রুটিফল। রুটিফল Moraceae পরিবারের সদস্য। যার বাহারি পাতার অগ্রভাগ হাতের আঙ্গুলের মত চমৎকার নকশা করা। ফল দেখতে ঠিক কাঁঠালের মত। কেউ কেউ কাঁঠাল ভেবে ভুলও করতে পারেন। স্বাদ মিষ্টি আলু বা কলার মত। পার্থক্য রুটি ফল পাউরটির মত স্লাইস করে আগুনে ঝলসে খেতে হয়। একটি রুটিফল গাছ প্রায় ৫০ থেকে ৬৫ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। ফল ধরে শাখার অগ্রভাগে। পাখি ধরার ফাঁদ হিসাবে রুটিফল গাছের আঁঠার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।
এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ব্রেড ফ্রুট ফলছে বাংলাদেশে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের বাগানে এই ফলের দেখা মিলছে ১৭ বছর ধরে। পুষ্টিগুণ বিবেচনায় উপকূল পাহাড়ি এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে আবাদের পরামর্শ দিচ্ছেন উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে এক পায়ে দাঁড়িয়ে ব্রেডফ্রুট গাছটি। দেখতে কাঁঠালের মতো হলেও বাংলা নাম রুটি ফল। গত ১৭ বছর ধরেই ফলছে জুন-জুলাইয়ে। গাছের উচ্চতা হয় ৫০ থেকে ৬৫ ফুট পর্যন্ত।
শ্রীলঙ্কা থেকে এনে এই গাছটি উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগকে উপহার হিসেবে দেন অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমডোর জিয়ারত আলী।
ফলটির স্বাদ প্রায় মিষ্টি আলুর মতো। পাউরটির মতো স্লাইস করে খেতে হয় আগুনে ঝলসে। তৈরি করা যায় চিপস-ক্যান্ডি, আচার বা সালাদও। ফল, পাতা, কসেও আছে পুষ্টিগুণ। কাজ করে শ্বাসকষ্ট ও উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে।
মালয়েশিয়া, তাহিতি, হাওয়াই ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে সবচেয়ে বেশী জন্মে এই ব্রেডফ্রুট। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়া রাজধানীর আসাদ গেটের সরকারি নার্সারি ও কুমিল্লার বার্ডেও আছে কয়েকটি রুটি ফলের গাছ।
রুটিফলের ঔষধী গুন
রুটিফলের পাতার ক্কাথ রক্ত উচ্চচাপ ও শ্বাসকষ্ট উপশম করে। জিহ্বার প্রদাহে পাতা বেঁটে প্রলেপ দেয়া হয়। এর কষ চর্মরোগ ও সাইটিকা উপশমে বিশেষ উপকারী। প্লিহার উপশমে ভাঁজা পাতার চূর্ন বিশেষ উপকারী! কোন কোন এলাকায় রুটিফল দিয়ে ক্যান্ডি, চিপস্, এমনকি মিষ্টি আচার তৈরি হয়ে থাকে।
অনেকে মনে করেন রুটি ফল ফল নয় শব্জি। ফল কিংবা শব্জিযাইহোক, কেউ রুটি ফল খেতে চাইলে বছরের জুন-জুলাই মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের স্মরণাপন্ন হতে পারেন।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৬মে২০