পাইকারি বাজারে আরও এক দফা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম ১০-১৫ টাকা কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে গড়ে ১১০ টাকায়। প্রতিনিয়ত ব্যবসায় লোকসান গুনতে গুনতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিদের। অনেকেই পুঁজি হারিয়ে হয়েছেন নিঃস্ব। এমতাবস্থায় ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন তারা।
গত ২৯ মে ২০২২ তারিখে বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ (বি.পি.কে.আর.জে.পি) এবং পোল্ট্রি প্রফেশনাল’স বাংলাদেশ(পিপিবি) এর বাজারদর পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সারাদেশে খামারি পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগি গড়ে ১০৮-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ময়মনসিংহে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১০৮-১১০ টাকা দরে। এছাড়াও গাজীপুর ও সিলেটে ১১০ টাকা, টাঙ্গাইলে ১১৪ টাকা, বগুড়া ও কুমিল্লায় ১২০ টাকা, ফরিদপুরে ১২৫ টাকায় বিক্রি হয়। খামারিরা গড়ে ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি করলেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকায়। খুচরা বিক্রেতারা প্রত্যাশামতো লাভ করলেও পাইকারী বাজারে মুরগির দাম না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন খামারিরা।
পোল্ট্রি খামারিরা জানিয়েছেন, মুরগির খাদ্য, শ্রমিকের মজুরি, ভ্যাকসিন, ঔষধপাতি, বিদ্যুৎ বিল ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচসহ প্রতি কেজি ওজনের ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করতে খরচ পড়ে প্রায় ১৪০-১৪৫ টাকা। কিন্তু বর্তমানে মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা দরে। এতে করে প্রায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে লোকসান হচ্ছে প্রায় ৩০-৪০ টাকা। মুরগির বাজার এরকম চলতে থাকলে পোল্ট্রি খামার বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা বলেও জানান খামারিরা। যদিও ইতোমধ্যে অনেক খামারি পুঁজি হারিয়ে হয়েছেন নিঃস্ব গুটিয়ে নিয়েছেন ব্যবসা।
পোল্ট্রি খামারি জনাব আলী বলেন, তিন মাস আগে ভুট্টা কিনেছি প্রতি কেজি ২৩ টাকায়। সেই ভুট্টা বর্তমানে ৩৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এ ছাড়া ২ হাজার ২০০ টাকার সয়াবিনের বস্তা (৫০ কেজি) ৩ হাজার ২০০ টাকা, রাইস ব্র্যান ১ হাজার ২০০ টাকার জায়গায় ২ হাজার ৫০০ টাকা, লাইমস্টোন ৪০০ টাকার বস্তা এখন ৬০০ টাকা। ওষুধ ও ভ্যাকসিনের দামও বেড়েছে। লোকসান দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব নয় তাই ধীরে ধীরে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছি।
ফার্মসএন্ডফার্মার/২৯মে ২০২২