ব্রয়লার মুরগির পেটে পানি জমা রোগে কি করবেন?

2228

মুরগি
ব্রয়লারের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রোগ কারণ এদের দৈহিক বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয়। মোরগ-মুরগির ডান অলিন্দে অচল অবস্থার সৃষ্টি হলে রক্তনালীতে চাপ বেড়ে যায়। এই উচ্চ চাপের কারণে উচ্চ মাত্রার প্রোটিনবাহী তরল পদার্থ রক্তনালীর অর্ধভেদ্য পর্দা ভেদ করে উদর গহ্বর বা অন্যান্য অঙ্গ ও চামড়ার নীচে জমে থাকে। মোরগ–মুরগির এই অস্বাভাবিক অবস্থা পালমোনারী হাইপারটেনশন সিনড্রোম বা এসাইটিস বা পেটে পানি জমা রোগ বলে।

বর্তমানে মোরগ–মুরগির পালনের জন্য যে সকল জাত নির্বাচন করা হয়, জেনেটিক কারণে তাদের ফুসফুস আকার অনুপাতে ছোট থাকে। প্রয়োজনের সময় পর্যাপ্ত অক্সিজেন যুক্ত বাতাস এই রেডিকল ও অক্সিডেটিভ রি-এ্যাকটিভ স্পিসিস যথা- হাইড্রো পার অক্সাইড, পার অক্সিল রেডিকল ইত্যাদির পরিমাণ বেড়ে যায়। এই অবস্থায় শরীরের কোষগুলি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় এবং আন্তঃকোষীয় তরল পদার্থ ভেদ করে চামডার নীচে জমা হয়। শরীরের এই অবস্থাই পেটে পানি জমা রোগ হয়।

কিভাবে বুঝবেন এ রোগ হয়েছে?

১. হঠাৎ করে মারা যায়।
২. মুরগির মারা যাওয়ার সময়টা বেশি হয় ২৮ দিনের পর থেকে। আর সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ৩৫-৪২ দিন বয়সের মুরগির ক্ষেত্রে। তাছাড়া এই রোগ ১৫ দিনের পর থেকেও লক্ষ্য করা যায়।
৩. আক্রান্ত পাখি সাধারণ পাখির চেয়ে ছোট, বিষণ্ণ এবং পালক ছড়নো ছিটানো দেখা যায়। এর এটা বৃদ্ধি থেমে যাওয়ার কারণেই দেখা যায়।
৪. মাথা দেখতে ফ্যাকাশে এবং টপ কুচকিয়ে যায়।
৫. পাখি নড়াচড়া না করে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
৬. অতিমাত্রায় আক্রান্ত মুরগির পেট ফুলে থাকতে দেখা যায়।

এ রোগের প্রতিরোধ:

খ্যাদ্যের সাথে নিয়মিত এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসাবে হ্যাডক্স ড্রাই (এন্টি-অক্সিডেন্ট) প্রতি মেট্রিক টন খাদ্যে ১২৫ গ্রাম হিসাবে ব্যবহার করতে হবে।

অপেক্ষাকৃত উঁচু ও খোলা স্থানে খামার স্থাপন করতে হবে। অথবা খামারে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক বাতাস চলাচল নিশ্চিত করতে হবে। হ্যাচিং, ব্রুডিং এবং পরিবহণের সময় যেন অক্সিজেনের অভাব না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

খাবারে অতিরিক্ত মাত্রার লবণ ব্যবহার কমাতে হবে ও পাশাপাশি একদিন পর পর (E-Sel Solution) ব্যবহার করলে রোগের প্রবণতা কমে, এছাড়া এসময় (Hameco- PH Liquid) ১ মিলি/২ লিটার পানিতে ৫-৭ দিন ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

পানি জমা রোগের চিকিৎসা:
১. ব্রড-স্প্রেকট্রাম অ্যান্টিবায়োটিক সলিউশন,
২. ডাই ইউরেটিক,
৩. ইলেক্ট্রলাইট পাউডার,
৪. ভিটামিন-সি সলিউশন,
৫. নেফ্রোকেয়ার লিকুইড।

উপরিউক্ত ওষুধগুলো ৫-৭ দিন নিদিষ্ট মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।

অতএব প্রিয় খামারী ভাইয়েরা এ রোগ হওয়ার আগেই সচেতন হতে হবে। নিয়ম মেনে ব্রয়লার মুরগির খামার করতে হবে। দুঃশ্চিন্তা না করে দ্রুত সমাধান করুন আর সামনে এগিয়ে যান।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন