ব্লাক অস্ট্রালপ মুরগি বেশ প্রাচীন একটি মুরগীর জাত। এটি মূলত ‘ডুয়াল পারপাজ’ বা ‘দ্বৈত ঊদ্দেশ্য’ পালনের জন্য জনপ্রিয় একটি জাত। আমাদের দেশে এটি নতুন পরিচিত হলেও উপমহাদেশে এদের প্রাচীন অস্তিত্ব বিদ্যমান। মূলত ব্লাক অস্ট্রালপ অস্ট্রেলিয়ার একটি ডুয়াল পারপাজ মুরগির জাত।
অস্ট্রালপ মুরগির ব্রিডিং তথ্য
ব্লাক অস্ট্রালপ মুরগি ১৯ শতকের শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়ায় ডেভেলপ হয়। ব্রিটিশ ব্লাক অরপিংটন জাতের কিছু মুরগির সাথে রোড আইল্যান্ড রেড মুরগির সাথে সংকরায়নের মাধ্যমে ব্লাক অস্ট্রালপ জাতটি তৈরি করা হয়।
ব্লাক অস্ট্রালপ
উদ্দ্যেশ্য ছিল ভারী জাতের একটি ডুয়াল পারপাজ ব্রিড তৈরী করা, যেটি অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
পরবর্তিতে বিখ্যাত লেগহর্ন ও পলিমিউথ রক মুরগির সাথে ক্রস করে জাতটির বিভিন্ন বৈশিষ্টের উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে বলে ধারনা করা হয়।
জাতের সাধারণ বৈশিষ্ট
এরা দেখতে কিছুটা আয়তক্ষেত্রাকার, অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ দেহ এবং ঘন কালো রঙের। এদের ছোট লালচে ঝুটি ও মাথার আকৃতি কিছুটা বড়। পালক বেশ নরম, ঘন কালো ও সিল্কি টাইপের।
এরা দীর্ঘ কাল বাঁচে ও একটা লম্বা সময় ধরে ডিম দিয়ে থাকে। ডিমের রঙ হালকা বাদামি। মুরগি খুব একটা কুচে হয়না। সাধারণত, মোরগের ওজন প্রায় ৩.৫ থেকে ৪.৫ কেজি এবং মুরগীর ওজন প্রায় ২.৫-৩ কেজি।
জাতের আচরণ বা মেজাজঃ
ব্লাক অস্ট্রালপ মুরগি চঞ্চল কিন্তু নমনিয় প্রকৃতির। ভারী জাতের মুরগি হলেও এরা বেশ ডিম দিয়ে থাকে। অন্য জাতের মুরগির সাথে এরা সামান্য আক্রমনাত্বক হতে পারে। মোরগের মাঝে আগ্রাসী ভাব দেখা যায়।
এদের আবদ্ধ ও খোলা, উভয় পরিবেশেই পালন করা যায়।
ব্লাক অস্ট্রালপ মুরগির রোগ বালাই
ব্লাক অস্ট্রালপ মুরগির তেমন বিশেষ কোন রোগ বালাই নেই। সাধারন মুরগির মতই রোগ বালাই দেখা দিতে পারে। তবে কালো পালক এবং ভারী জাত হওয়াতে এদের হিট স্ট্রোক প্রবনতা বেশী। গরমকালে এই বিষয়টা লক্ষ রাখা দরকার।
পালনের উদ্দ্যেশ্য
এরা একটি বিখ্যাত ‘ডুয়াল পারপাজ’ বা ‘দ্বৈত পালনের’ মুরগির জাত। তবে এদের প্রথমত মাংস ও পরে ডিমের জন্য পালন করা হয়। অনেক খামারি এর প্যারেন্টস স্টক করতেও পালন করে থাকেন।
নিচের টেবিলে এক নজরে ব্লাক অস্ট্রালপ জাতের মুরগির তথ্য দেয়া আছে।
ব্লাক অস্ট্রালপ মুরগি | জাতের তথ্য বা প্রোফাইল
জাতের নাম : ব্লাক অস্ট্রালপ।
অন্য নাম : অস্ট্রালপ, কালো টাইগার।
পালনের উদ্দ্যেশ্য : মাংস এবং ডিম উভয় দ্বৈত-উদ্দেশ্য।
জাতের আচরণ : শান্ত, বন্ধুত্বপূর্ণ, কৌতুহলী, সহজে পালন।
আকার : ভারী। সাধারণত ৩ থেকে ৫ কেজি।
তা দেয়ার প্রবনতা : কম।
ঝুঁটি : ছোট।
জলবায়ু সহনশীলতা : সকল জলবায়ু।
ডিম রঙ : হালকা বাদামী
ডিমের আকার : বড়
ডিম উৎপাদনশীলতা : মোটামুটি ভাল। বছরে ২৫০ ডিম (৬৫-৭০%)
বৈচিত্র্য : শুধুমাত্র কালো
মূল দেশ : অস্ট্রেলিয়া।
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২