ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষের আধুনিক পদ্ধতি ও সুবিধাসমূহ

119

নদী বা জলাশয়ে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ একটি আধুনিক পদ্ধতি।ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করে মাছের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে অনেক সুবিধা।

দেশে দিনে দিনে জলাশয় কমে যাচ্ছে কিন্তু জলাশয় কমে গেলেও আমাদের প্রচুর নদী ও খাল রয়েছে যেখানে সারা বছর মাছ চাষ করা যায়। আর এসব জলাশয়ে মাছ চাষের সহজ উপায় হচ্ছে খাঁচায় মাছ চাষ করা। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার কারণে দেশ-বিদেশে খাঁচায় মাছ চাষ ক্রমাগতভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এতে জায়গা কম লাগে এবং অধিক লাভজনক।

পদ্ধতি:

এপদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য প্রথমেই খাঁচা তৈরি করতে হয়। লোহার পাইপ কিংবা দণ্ড দিয়ে তৈরি প্রতিটি খাঁচার দৈর্ঘ্য ২০ ফুট, প্রস্থ ১০ ফুট ও উচ্চতা ৬ ফুট হতে হয়।ভাসমান অবস্থায় খাঁচায় দুই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা যায়।

প্রথমে পদ্ধতিতে খাঁচা স্থাপনের জন্যে খাঁচার মাপের লোহার পাইপ বা দন্ড অথবা বাঁশের তরী হাতলের জাল বেঁধে পানিতে ভাসাতে হয়। তারপর খাঁচার চার কানায় পাথর বা ভারি কিছু যা পানিতে ডুবে যায় এমন বস্তু যুক্ত করতে হয়। যাতে জালের নিচের অংশ টান টানভাবে পানিতে সমানভাবে সারা বছর কমপে ৩-৪ মিটার গভীর পানি থাকে এমন স্থানে খাঁচা তৈরি করতে হয়।

দ্বিতীয় পদ্ধতিতে সারিবদ্ধভাবে চারদিকে বাঁশের বনী তরী করে সেখানে জালযুক্ত করে জলাশয়ের পাড় থেকে কিছুটা নিরাপদ্ধ দুরুত্বে রাখতে হবে। যেখানে সারাবছর কমপক্ষে ৩-৪ মিটার গভীর পানি থাকে। আর সেখানে শক্ত খুঁটি দিয়ে খাঁচাগুলো বাঁধতে হবে। তবে খাঁচার মধ্যে লোহা ব্যবহার করলে তা ভাসমান রাখতে প্লাস্টিকের গোলাকার বট ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা শক্ত ড্রাম ব্যবহার করা যেতে পারে।

ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষে সুবিধাসমূহ:

১.ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করলে পুকুর কিংবা দিঘীর মতো বড় জলাশয়ের প্রয়োজন হয় না। প্রবহমান নদীর পানিকে ব্যবহার করেও এ পদ্ধতিতে মাছ উৎপাদন করা সম্ভব।

২.মাছের বর্জ্য প্রবহমান পানির সঙ্গে অপসারিত হয় তাই পানি কিংবা পরিবেশের দূষণ হয় না। মাছের উচ্ছিষ্ট খাদ্য খেয়ে নদীর প্রাকৃতিক মাছ তাদের খাদ্য সরবরাহ করতে পারে।

৩.নদীর পানি প্রবহমান থাকায় প্রতিনিয়ত খাঁচার অভ্যন্তরের পানি পরিবর্তন হতে থাকে ফলে পুকুরের চেয়ে অধিক ঘনত্বে মাছ চাষ করা যায়।

৪.চাষকৃত মাছ অনেক রোগের আক্রমণ থেকে প্রাকৃতিকভাবে বেঁচে থাকতে পারে। পুকুরে চাষকৃত মাছের চেয়ে খাঁচায় চাষকৃত মাছ তুলনামূলক সুস্বাদু।