ভূমি ব্যবস্থাপনায় শীর্ষে পবা উপজেলা ভূমি অফিস

849

মাহবুব-পবা

রাজশাহীর পবা উপজেলা ভূমি অফিস ভূমি ব্যবস্থাপনায় এনেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। সেবাপ্রার্থীরা সেবা নিতে গিয়ে যেন হয়রানীর শিকার না হন সে লক্ষ্যে সহজ ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে পবা উপজেলা ভুমি অফিসে। ভূমি ব্যবস্থাপনায় সেবামূখী ও জনবান্ধব ভূমি ব্যবস্থাপনা নির্মানের লক্ষে ইতিবাচক পরিবর্তনের পথে অগ্রযাত্রায় রয়েছে রাজশাহীর পবা উপজেলা ভূমি অফিস। সেবাপ্রার্থীদের আগের মত আর হয়রানির শিকার হতে হয়না উপজেলার এই ভূমি অফিসে গিয়ে।

খোজ নিয়ে জানা যায়, পবা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) শেখ এহসান উদ্দীন জণগনের দৌড় প্রতিযোগিতায় ভূমি সেবা পৌছে দিতে নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছেন। নতুন ভুমি অফিসার হিসেবে আসার পর থেকেই জনবান্ধব ভূমি ব্যাবস্থাপনা নির্মাণ, নাগরিক কর্নারসহ বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি। আধুনিক রেকর্ড ব্যাবস্থাপনায় ব্যাপক সংস্কার হয়, পূনর্বিন্যাসের মাধ্যমে তিনটি আলাদা রেকর্ড রুম তৈরী করেন। এতে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার নথি সংরক্ষনের ব্যবস্থা রয়েছে। পূর্বে নথি খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হলেও এখন খুব সহজেই প্রয়োজনীয় নথি খুঁজে পাওয়া ও সংরক্ষণ করা যায়। নাগরিক কর্নারে সেবাপ্রার্থীগণ সেবার বিষয়ে কি করনীয় তা না জানার কারণে অনেক সময় হয়রানির শিকার হন। এই অন্যতম সমস্যাটিকে দূর করতে ৬ টি ক্যাটাগরিতে ২২ টি সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা ও সরকারি ফি সম্বলিত তথ্য একসাথে করে তৈরী করেছেন এই নাগরিক কর্নার।

অনেক সময় কর্মচারী পরিবর্তন হলে বা আইন না জানার কারনে একটি কাজের ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যায়। এই সমস্যাটিকে দূর করতে প্রত্যেক কর্মচারী যে সার্ভিস দিচ্ছেন তার ধারাবাহিক চেকলিস্ট ও ফ্লো-চার্ট তৈরী করা হয়েছে যেন কোনো ভাবেই আইনের বাইরে কাজ করা সম্ভব না হয়। প্রত্যেকটি কার্যক্রমের অধ্যায়ভিত্তিক ভাগ করে একটি সার্ভিস বুক প্রস্তুত করা হয়েছে যেখানে সেবা দান পদ্ধতি, ফি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফ্লো-চার্ট সংযুক্ত করে হয়েছে। মিসকেস হ্রাস ও খতিয়ানের ভুল সংশোধন করার জন্য হয়রানির শিকার যেন না হয় সে জন্য ডিজিটাল ডিসপ্লেতে সেবাপ্রার্থী তার খতিয়ানটি দেখার সুযোগ পাচ্ছে। পবা উপজেলা ভূমি অফিসের মূল গেটের পাশে ‘আপনার এসিল্যান্ড’ নামক কর্মসূচীর মাধ্যমে ‘মাটির মায়ায়’ নিয়মিত নির্দিষ্ট সময়ে বসে সেবাপ্রার্থীদের তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়া হয়। ২০১৮ সাল থেকে রাজশাহী জেলার পবা উপজেলায় পাইলটিং হিসেবে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের লক্ষ্যে ই-পে ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ট্যাক্স নামক অ্যাপস্ চালু করা হয় যা দেশের প্রথম আধুনিক ভূমি অফিস হিসেবে শিকৃতি পেয়েছে এবং এই অ্যাপসটি “জনপ্রশাসন পদক” প্রাপ্ত হয়।

পবা উপজেলা অন্তর্ভুক্ত নওহাটা ও কাটাখালী পৌরসভার সকল মৌজার ভূমি উন্নয়ন কর এই অ্যাপস্ এর মাধ্যামে পরিশোধ করা যায়। ভুমি বিষয়ে জনগণের শত প্রশ্নের উত্তর কিভাবে পাওয়া যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে মিউটেশন কাম সার্টিফিকেট এসিসটেন্ট ইমরুল কাশেম জানান, একজন সেবাগ্রহীতা সেবা ওয়াল থেকে তার কাঙ্খিত সকল তথ্য জানতে পারবেন। পবা উপজেলার সুবিধাভোগী মাসকুরা বেগম জানান, ভূমি অফিসে নাগরিক কর্ণার এর সুবিধা গ্রহণ করে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত এবং কিয়স্ক মেশিনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে বলেন মেশিনটি আমাদের নিকট আশীর্বাদস্বরূপ। আরেক সেবাপ্রার্থী দামকুড়ার মাহাবুব জানান, জমি খারিজের কাজ করতে এসে তাকে কোনো হয়রানির শিকার হতে হয়নি। পবা উপজেলা সহকরি কমিশনার (ভূমি) শেখ এহসান উদ্দীন বলেন, জনগণ যাতে সেবা সহজেই পাই তার জন্য এসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আগামি দিনে জনসাধারণের জন্য জনবান্ধব ও কল্যাণমুখী কাজ করে যাবেন বলে জানান তিনি।

ফার্মসএন্ডফার্মার/০১অক্টোবর২০