প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল ভেটেরিনারি ডাক্তারের কারণে পর্যাপ্ত প্রাণিচিকিৎসা মিলছে না, ফলে দেশের সাধারণ কৃষক, খামারীরা গবাদী পশু-পাখি পালন করে লাভবান হতে পারছেন না। দেশের অর্থনীতির একটা সমৃদ্ধশালী অংশ হচ্ছে প্রাণিসম্পদ অথচ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাণিসম্পদের অবদান দৃশ্যমান হচ্ছে না। প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে মানুষের দৌড়গোড়ায় ভেটেরিনারি প্রাণিচিকিৎসা পৌঁছে দেবার প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করেছে ‘মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক’। মুঠো ফোনে যোগাযোগ করে অল্প সময়ে মিলবে অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা উপযুক্ত ভেটেরিনারি চিকিৎসা।
সোমবার (৪ নভেম্বর) ময়মনসিংহ শহরের একটি হোটেলে জনসচেতনতা মূলক স্বল্প দৈর্ঘ্যের ডকুমেন্টারি ড্রামা ‘মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক’ এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠান এসব কথা বলেন প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা।
ডকুমেন্টারি ড্রামা ‘মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক’ এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন দেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. প্রিয় মোহন দাস। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ নূরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. প্রিয় মোহন দাস, প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, সবুজবাংলাদেশ২৪.কমের সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. সহিদুজ্জামান, প্যাথলজি বিভাগের শিক্ষকগণ, পিএইচডি ফেলো, এমএস শিক্ষার্থীসহ ডকুমেন্টারি ড্রামার কলাকুশলীরা।
‘মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক’ প্রকল্পের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরীর পরিকল্পনায় ১১মিনিটের ডকুমেন্টারি ড্রামা ‘মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক’ এর মাধ্যমে দেখানো হয়, একটি গবাদিপশু গরীব কৃষকের সংসারের কতটা অবিছেদ্য অংশ, হাতুড়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার পরিণতি, উপজেলায় ভেটেরিনারি ডাক্তারের অপ্রতুলতা এবং ‘মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক’ এর প্রাণিচিকিৎসার পদ্ধতি ও সম্ভাবনা।
ডকুমেন্টারি ড্রামাটির কাহিনী, সংলাপ, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় ছিলেন ডা. কংগ্রীভ কুমার কবিরাজ, চিত্রগ্রহণ ও সম্পাদনায় জিকরুল হাকিম, সার্বিক সহয়োগিতায় ডা. মোস্তাক আহম্মেদ। এতে অভিনয় করেছেন সিমন্তী, উৎস, অনিক, হৃদয়, আরিফ, বাধন, জাহিদুলসহ আরো অনেকে।
কৃষি গবেষণা ফাইন্ডেশন (কেজিএফ) এর অর্থায়নে পরিচালিত ‘মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক’ প্রকল্পের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী জানান, বাংলাদেশ মানেই একটি বাড়ি একটি খামার। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর মত আমাদেরকেও খামারীর দৌড়গোড়ায় গিয়ে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে হবে। তাহলে একদিকে যেমন প্রাণির স্বাস্থ্য ভাল থাকবে তেমনি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এ ক্ষেত্রে ‘মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক’ হতে পারে একটি উপযুক্ত মাধ্যম।
প্রাণিসম্পদ তথা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসলে দেশের প্রাণিচিকিৎসায় ‘মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক’ সুদূরপ্রসারী হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
‘মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক’ প্রকল্পের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, কোন খামারী আমার মোবাইলে কল করলে আমি মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রæত তার কাছে পোঁছে যাই এবং চিকিৎসাসেবা প্রদান করি। এতে অসুস্থ প্রাণিটি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠে এবং দুধ মাংস উৎপাদন ঠিক থাকে। ফলশ্রæতিতে খামারী উপকৃত হয় এবং প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন বেগবান হয়।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ