তুলসী ভেষজ উদ্ভিদ। ছোট বড় সবারই চেনা। এর ভেষজ গুণাগুণ সম্পর্কের ধারণা রয়েছে অনেক মানুষের। তাছাড়া বৈজ্ঞানিক গবেষণায় তুলসী এন্টিভাইরাস বলে প্রমাণিত। আমাদের দেশের প্রায় বাসাবাড়িতে এর দেখা মিলে এবং দেশের প্রায় সবর্ত্রই তুলসী জন্মে। তাছাড়া বসতবাড়িতে রোপণের উপযোগী আদর্শ উদ্ভিদ তুলসী। হিন্দু ধমার্বলম্বী মানুষজনের বাড়ির জন্য অপরিহার্য উদ্ভিদ তুলসী। কেননা, তারা তাকে পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে জানেন এবং পূজায় ব্যবহৃত হয়।
শাখা-প্রশাখা অধিক, যা বিপরীত বিন্যস্ত ও খাড়া। পাতা সুগন্ধী, সরল, কিনারা খাঁজকাটা। পাতা ও বিটপ রোঁয়ায় ভর্তি। এর ফুল আকারে ক্ষুদ্র, রং হালকা বেগুনি বা ফিঁকে লাল। ফুল ফোটার মৌসুম শরৎ ও হেমন্তকাল। ফল ও বীজ আকারে ক্ষুদ্র। ফলের ভেতর থাকে বীজ। বীজের গঠন চ্যাপ্টা, রং ফিকে হলুদ বা হালকা লাল। আমাদের দেশে চার প্রকারের তুলসী চোখে পড়ে।
তা হলো- বাবুই তুলসী, শ্বেত তুলসী, কৃষ্ণ তুলসী ও বন তুলসী। রৌদ্রউজ্জ্বল সুনিষ্কাশিত উঁচু থেকে মাঝারি উঁচু ভূমি ও দো-আঁশ থেকে বেলে দো-আঁশ মাটি তুলসী গাছ উৎপাদনের উপযোগী। তবে আংশিক ছায়াযুক্ত স্থানেও তুলসী গাছ জন্মে। সাধারণত বীজের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার করা হয়। চাষের জন্য পরিপক্ক ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে তা রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। জমিতে বীজ বপণের পূর্বের পানিতে ৬ ঘণ্টা ভিজিয়ে নিয়ে ছেকে বাতাসে শুকিয়ে বপন করতে হবে।
গ্রীষ্মের শুরু অর্থাৎ বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস তুলসীর বীজ বপনের উত্তম সময়। তুলসী গাছে প্রয়োজনে সেচ দিতে হয় এবং পানি নিষ্কাশের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সরাসরি মাটি ও টবে রোপণ উপযোগী উদ্ভিদ। ভেষজ গুণাগুণে ভরপুর তুলসীর রয়েছে নানান রকম গুণের পাতা, বীজ ও শিকড় ভেষজ গুণাগুণ সম্পন্ন। তুলসী পাতা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে পানি দূষণমুক্ত হয় ও পরিশুদ্ধ থাকে। জ্বর, সর্দি, কাশি ও কৃমি দূর করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তুলসীর বীজ ভিজিয়ে রেখে সে পানি প্রত্যহ সকালে খেলে প্রস্রাবের জ্বালা কমায়। হামের দাগ ও বসন্তের দাগ তুলতে তুলসীর রস বেশ উপকারী। পোকামাকড়ের কামড়ে ক্ষতস্থান সারাতে ও ব্যথা সারাতে উপকারী। শরিরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। ক্যান্সার নিরাময় করে। কিডনির পাথর দূর করে।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডেএইচ