মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ গড়তে সহায়ক হবে পোল্ট্রি শিল্প

784

[su_slider source=”media: 2428,2429″ title=”no” pages=”no”]

দেশের ৪০ শতাংশ মাংসের যোগান দিচ্ছে পোল্ট্রি শিল্প। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত করতে হলে পোল্ট্রি শিল্পের বিকল্প নেই। একমাত্র পোল্ট্রি শিল্পই সর্বাধিক সংখ্যক বেকারদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পেরেছে। এ শিল্পের সাথে জড়িত ৮০ লাখ লোকের মধ্যে ৪০ শতাংশই নারী। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ২০২১ সালের মধ্যে এ খাতে প্রায় ২ কোটি লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। শতকরা হিসেবে এতো সংখ্যক শ্রমিকের কর্মসংস্থানের আর কোন সেক্টর বাংলাদেশে সৃষ্টি করার সুযোগ নেই। নিম্নে কিছু তথ্য উল্লেখ করা হল-

  • পোল্ট্রি নীতিমালার সঠিক বাস্তবায়ন ঘটিয়ে এ শিল্পকে একটি আধুনিক ও রপ্তানীমুখী শিল্পে পরিনত করা।
  • জাপানে একজন নাগরিকের খাদ্য তালিকায় যেখানে বছরে গড়ে ৬০০ ডিম সেখানে বাংলাদেশের তালিকায় মাত্র ৪০-৪৫ টি ডিম। তাই প্রচার প্রচারনার মাধ্যমে দারিদ্র ও শিশুদের পুষ্টি সচেতনতা বৃদ্ধি করে তাদের খাদ্যভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। সেই সাথে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ও গড় আয় বাড়াতে হবে।
  • পোল্ট্রি শিল্পের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খাদ্য। আমাদের দেশে পোল্ট্রি খাদ্য উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ভূট্টা ও গম উৎপাদনে বিশেষ প্রণোদনা দিতে হবে।
  • চালের কুড়ার রপ্তানী নিসিদ্ধ করে সহজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।
  • পোল্ট্রি শিল্পের বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস, বিদ্যুৎ ও সার তৈরীতে বেসরকারী বিনিয়োগের পাশা-পাশি সরকারী বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
  • সাধারন মানুষের মাঝে ব্রয়লার ও ডিম সম্পর্কে বিরুপ ধারনা পরিবর্তনের জন্য ব্যাপক প্রচারনা চালাতে হবে।
  • পোল্ট্রিতে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিসিদ্ধ এবং বার্ড ফ্লুর ভ্যকসিন প্রয়োগের যে অনুমোদন দেয়া হয়েছে তা সঠিক ভাবে কার্যকর করতে হবে।
  • পোল্ট্রির মাংস থেকে বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার যেমনঃ নাগেটস, চিকেনবল, চিকেন স্ট্রিপস, চিকেন সালামী ও হটডগ এবং ডিম থেকে কেক, এগরোল, চপ, পিঠা, লুচি সহ প্রায় ৫০-৬০ রকমের আইটেম তৈরী হচ্ছে। এগুলো দেশের অভ্যন্ত্রে ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বাজারজাত করনের উদ্যোগ নিতে হবে।
  • পোল্ট্রি খাদ্য উৎপাদনে আমদানী নির্ভর পণ্যের গুরুত্ব কমিয়ে দেশি কাঁচামালের দ্বারা ফিড ফর্মুলেশন তৈরী করতে হবে।
  • একদিন বয়সের বাচ্চার দাম খামারীদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে এবং বাচ্চা B.C.D গ্রেডে বিভক্ত করে আলাদা আলাদা কার্টুন ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কার্টুনে বাচ্চা উৎপাদনের তারিখ উল্লেখ থাকতে হবে।
  • অসৎ বাচ্চা বিক্রেতারা B/C গ্রেডের বাচ্চা A গ্রেড, ইন্ডিয়ান বাচ্চা, ব্রয়লারের সাথে কক/সোনালী এবং জাত পরিবর্তন করে সাদা কার্টুনে বা নামে বেনামে কার্টুন তৈরী করে যাতে খামারিদের ক্ষতি করতে না পারে সেই জন্য বাজার মনিটরিং বাড়াতে হবে এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
  • হ্যাচারীর বিক্রয় কর্মকর্তাদের খামার ভিজিট বাড়াতে হবে এবং খামারীদেরকে নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করতে হবে।
  • নারী সম্পৃক্ত সম্ভাবনাময় এ শিল্পকে বাচাতে সরকারী ও বেসরকারী সংস্থাকে এগিয়ে আস্তে হবে।
  • কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও সুস্থতার কথা বিবেচনায় এনে এ শিল্পকে আগামী প্রজন্মের কাছে স্বর্ণময় শিল্প হিসাবে পরিচয় ঘটাতে পারলেই বাংলাদেশ হবে দারিদ্রমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত মধ্যম আয়ের দেশ। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ হবে উন্নত দেশ, মেধাবী জাতির দেশ।