মরিচ গাছের পাতা কুঁকড়ানো রোগের আক্রমণের লক্ষণ ও দমন ব্যবস্থা

926

পাতা কোকড়ানো মরিচ গাছের খুবই মারাত্মক একটি রোগ। যদি পাতা গুলো উপরের দিকে নৌকার মত কুঁকড়ে যায় তবে এটা ভাইরাস এবং যদি নিচের দিকে কুঁকড়ে যায় তবে এটি মাকড়ের আক্রমণে হয়।

ভাইরাস আক্রমনের লক্ষণ সমূহ:
১. আক্রান্ত পাতা উপরের দিকে নৌকার মত কুঁকড়ে যায়। পাতার নিচে হলুদ শারীরে সাদা পাখাওয়াল মাছি(সাদা মাছি) দেখা যায়।
২. পুরোনো পাতাগুলো শক্ত ও ভঙ্গুর হয়ে যায়।
৩. পাতার মাঝের শিরাগুলো হালকা হলুদ হয়ে যায়।
৪. গাছের বৃদ্ধি কমে যায়।
৬. দেখতে মনে হয় থ্রিপস বা মাকড়ের আক্রমণ হয়েছে।
৫. ফলন কমে যায় ও এবড়ো থেবড়ো হয়।
৭. পাতাগুলো ছোট গুচ্ছাকৃতির হয়।
৮. গাছে অতিরিক্ত ডালপালা জন্মায় ও ঝোপের মতো হয়।

রোগের বিস্তার : এ ভাইরাটি সাধানণত বীজ থেকে ছড়ায় না। এই ভাইরাসটির নাম Begomo ভাইরাস। এটি সাদা মাছি, থ্রিপস, সংক্রমিত চারা ও আগাছা থেকে ছড়ায়। সাধারাণত সাদা মাছি গুলো তখন পাতার নিচের দিকে থাকে, এরা ১.৫ মিমি লম্বা হয় এবং হালক হলুদ শরীরে সাথে মোম আবৃত সাদা পাখা থাকে। এছাড়া এটি আরো বিভিন্ন কারনে এ ভাইরাস ছড়ায়, যেহেতু এটি ভাইরাস তাই এটি সাধারণ ভাইরাসের মত সংক্রমিত হয়, যেমন বৃষ্টি, পানি, আগাছা, নার্সারি থেকে কোন গাছের মাধ্যমে ইত্যাদি।

প্রতিষেধক:এই ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক নেই। এই ভাইরাসে আক্রন্ত গাছ যত তারাতারি সম্ভব তুলে পুড়িয়ে বা মাটিতে ফুতে ফেলতে হবে।
জৈবিক প্রতিরোধ:
১/ মরিচ গাছ লাগানোর সময় থেকে প্রতি ১০-১৫ অন্তর অন্তর প্রতি লিটার পানিতে ১ টেবিল চামচ নিম তেল ও ১ চা চামচ ডিশ ওয়াশ মিশিয়ে স্প্রে করুন।
২/ সকাল বেলা গাছে ছাই ছিটিয়ে দিলে এই পোকা গাছ থেকে পড়ে যাবে।

রাসায়নিক প্রতিরোধ: রাসায়নিক নিয়ন্ত্রন পদ্ধতিতে অনেক উপকারি পোকার ক্ষতি হয় তাই জৈবিক পদ্ধতি অনুসরণ করা ভাল। রাসায়নিক নিয়ন্ত্রনের জন্য ভাইরাসের বাহক পোকা দমন করতে হবে। জমিতে সাদা মাছি দেখা গেলে (বাহক পোকা) ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ১০ মি.লি. ২ মুখ )১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে।

প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা:
১. ভাইরাস প্রতিরোধী ও সুস্থ বীজ থেকে চারা তৈরি করুন ও শুধুমাত্র সুস্থ গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করুন।
২. নিয়মিত মাঠ পর্যবেক্ষণ করুন।
৩. রোগাক্রন্ত চার কোনভাবেই লাগাবেন না।
৪. সাদা মাছি প্রতিরোধে হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করুন।
৫. ভাইরাস আক্রান্ত গাছ পুড়িয়ে বা মাটিতে ফুতে ফেলুন।
৬. চারা অবস্থায় বীজতলা মশারি বা নেট দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০১ আগস্ট ২০২১