মাটি ছাড়া শুধু পানি ব্যবহার করে ঘাস চাষ করাকে হাইড্রোফনিক ঘাস বলে। হাইড্রোফনিক পদ্ধতিতে ঘাস চাষ করতে জমির দরকার হয় না। তাই ইচ্ছা করলে খামারিরা খুব সহজেই এ পদ্ধতিতে ঘাস চাষ করে গরুকে খাওয়াতে পারেন। এতে বাজারের দানাদার ও মাঠের সবুজ ঘাসের প্রায় সব পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তাছাড়া উৎপাদন খরচও খুব কম।
কোথায় চাষ করবেন: চাষের স্থান হিসেবে ঘরের ছাদ, ঘরের ভেতর, নেটহাউস, পানির টানেল, বারান্দা, খোলা জায়গা, প্লাস্টিকের বালতি, পানির বোতল, মাটির পাতিল ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়।
যে বীজ দরকার: ভুট্টা, গম, ছোলা, সয়াবিন, খেসারি, মাসকলাই এবং বার্লির বীজ প্রয়োজন।
যেভাবে চাষ করবেন
• বীজ ১২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন।
• পানি ঝরিয়ে ভেজা পাটের বস্তা বা কালো সুতি কাপড়ের ভেতরে বেঁধে ২৪ ঘণ্টা অন্ধকারে রাখবেন।
• একপাশ ছিদ্রযুক্ত কাঠ, টিন বা প্লাস্টিকের ট্রেতে বীজ বিছিয়ে কালো কাপড় দিয়ে দু’দিন ঢেকে রাখবেন।
• বীজে যেন বাইরের আলো-বাতাস না লাগে। এমনকি কাপড় সারাক্ষণ ভেজা রাখবেন।
• তৃতীয় দিন কাপড় সরিয়ে আধাঘণ্টা পরপর পানি ছিটাবেন।
• একটি ঘরে বাঁশ বা কাঠের তাক বানিয়ে ট্রেগুলো সাজিয়ে রাখবেন।
• ৯ দিন পর ৭-৮ কেজি কাচা ঘাস পাওয়া যাবে।
• ৫ বিঘা জমিতে যে ঘাস উৎপাদন হয়, তা মাত্র ৩০০ বর্গফুট টিন শেড ঘরে পাওয়া সম্ভব।
এ ঘাসের উপকারিতা
• কম জায়গায় অল্প পরিসরে বেশি ঘাস উৎপাদন করা যায়।
• এ ঘাস খাওয়ালে ১০-১৫ ভাগ দুধ উৎপাদনসহ দুধের ফ্যাট ও এসএনএফ শতকরা ০.৩-০.৫ ভাগ বাড়ে।
• শতকরা ৯০ ভাগ হজমযোগ্য পক্ষান্তরে এ বীজের দানাদার খাবার মাত্র শতকরা ৪০ ভাগ হজমযোগ্য।
• রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার নেই।
• দানাদারের চেয়ে ১০-২০ গুণ বেশি ভিটামিন এ, বি, সি বিদ্যমান।
• এ ঘাস খেলে গরুর গর্ভধারণের হার বাড়ে।
• শতকরা ২৫ ভাগের বেশি ঘাসের উৎপাদন বাড়ে।
• আঁশ, উদ্ভিজ আমিষ, নানাবিধ ভিটামিন ও খনিজ লবণের উৎস।
• এ ঘাস সারা বছরই চাষ করা যায়। মাটিবাহিত রোগ হয় না।
• দানাদার খাবারের চেয়ে শরীরের ইমিউনিটি ও উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ে।
• পরিকল্পিতভাবে চাষ করা যায়। ফলে এটি লাভজনক ও মানসম্পন্ন।
• অধিক রসালো ও পরিপাচ্য হওয়ার কারণে দুধ ও মাংস উৎপাদন বাড়ে।
সূত্র: জাগো নিউজ
ফার্মসএন্ডফার্মার/১০জুন২০