বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর দেশ। কৃষির উন্নয়নে বিজ্ঞানীরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে যার জন্যই দেশের কৃষিখাতে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। দিন দিন জনসংখ্যা বাড়ছে কিন্তু সে হারে কৃষি জমি বাড়ছে না তাই চেষ্টা চলছে কিভাবে স্বল্প জমি ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে অল্প পরিশ্রমে অধিক ফসল উৎপাদন করা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছে মাটি ছাড়াই টমেটো ও স্ট্রবেরীর চাষ পদ্ধতি।
কোনরকম মাটির ব্যবহার ছাড়াই উ ৎ পাদন করা যাবে টমেটো ও স্ট্রবেরী। এ পদ্ধতিতে মাটি ছাড়া চারা নারিকেলের আঁশে রোপণ করা হয়। গাছের অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য উপাদান যথাযথ মাত্রায় পানিতে মিশিয়ে একটি ট্যাংকে নেয়া হয়। পরে পাম্পের সাহায্যে পাইপের মাধ্যমে গাছের গোড়ায় এসব উপাদান পৌঁছে দেয়া হয়।
এই পদ্ধতি কিভাবে কাজ করে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গোলাম আজম বলেন, প্রথমে একটি ট্রেতে নারিকেলের আঁশ নিতে হয় তারপর সেখানে টমেটো বা স্ট্রবেরির চারা রোপণ করা হয়।
তিনি বলেন, নারিকেলের আঁশে মাটির পুষ্টিগুণ থাকে না। এ কারণে আলাদা একটি ট্যাংকে মাটির পুষ্টি গুণসমৃদ্ধ উপাদান পানিতে মেশানো হয়। পরে সেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে টমেটো কিংবা স্ট্রবেরির গোড়ায় ঢালা হয়। চারাগুলো পুষ্টি গুণসমৃদ্ধ উপাদান পেয়ে বড় হয়ে উঠে।
প্রাথমিকভাবে আমরা প্রতিদিন ৩০ সেকেন্ড করে পানিতে মেশানো মাটির পুষ্টি গুণসমৃদ্ধ উপাদান গাছের গোড়ায় দিতে থাকি। পরে দুইদিন পরপর দেওয়া শুরু করি। এসব উপাদানের কারণে মাটি ছাড়াই ২৬ নভেম্বর রোপণ করা স্ট্রবেরি চারার স্ট্রবেরি হারভেস্ট (কাটার উপযোগী) কোয়ালিটিতে রূপান্তরিত হয়েছে। টমেটোও হওয়ার পথে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম হারুনুর রশীদ বলেন, হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হচ্ছে। ব্যয়বহুল হলেও এটি সফল পদ্ধতি। তবে কাঠামোতে সূর্যের আলোর ব্যবস্থা এবং পলিথিন দিয়ে ঘেরা থাকতে হয়। ফলে পোকামাকড়ের সংক্রমণ থেকেও রক্ষা করা যায়।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৫ফেব্রু২০২০