শুরুতে ৩৩ শতক জমির ওপর মাল্টা ফলের চাষ শুরু করেন গাইবান্ধার সাঘাটার আমির হোসেন। তবে এখন প্রায় ১২০ শতক জমিতে মাল্টা চাষ করছেন তিনি। পিরোজপুর থেকে প্রতি চারা ২৭০ টাকা দরে সংগ্রহ করে মাল্টা চাষ শুরু করেন তিনি। দেড় বছর যেতে না যেতেই ফল আসতে শুরু করে তার বাগানে।
তবে সম্প্রতি বন্যায় বাগানের কিছু অংশ নষ্ট হলেও তা কাটিয়ে উঠেছে এই কৃষক। মাল্টার গাছে মুকুল আসলে এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্য গুটি কাটতে শুরু করে। এ থেকে দৈনিক আধা মণ থেকে এক মণ মাল্টা উৎপাদন হয় বাগান থেকে। বিদেশি মাল্টার চেয়ে এ মাল্টা রসালো ও বেশ সুস্বাদু।
জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে এ মাল্টা। বাগানে শুধু মাল্টা চাষ নয়, মিষ্টি কুমরা, কচুসহ হরেক রকমের সবজির চাষও রয়েছে বাগানে। প্রতিদিন বাগান পরিচর্যার মধ্য দিয়ে দিন শুরু হয় তার। বাগানকে ঘিরে দেখছেন হাজারো স্বপ্ন।
আমির হোসেনের বাগানের মাল্টা খেতে সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় স্থানীয় বাজারগুলোতে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে বাজার জাতের কোনো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না এ কৃষককে। কাঁচা অবস্থায় মাল্টা গাড় সবুজ এবং পাকলে হালকা হলুদ রং ধারণ করে। একটি মালটা ওজনে দেড় থেকে ২শ গ্রাম হয়ে থাকে। দেশে বিদেশি মাল্টা বাজার দখল করলেও পিছিয়ে নেই দেশীয় এ মাল্টা।
এ বিষয়ে কৃষক আমির হোসেন জানান, আমার বাগানের মাল্টার যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে স্থানীয় বাজারে। তাই আগ্রহ করে মাল্টা চাষ করছি। প্রথমে ৩৩ শতক জমিতে চারাসহ খরচ হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা। মাল্টার চারা পর্যায়ক্রমে সংগ্রহ করেছি। চারা রোপণের ১৫ মাসের মাথায় মাল্টা ফল ধরতে শুরু করে। বছরে একবার ফল হওয়ার কথা শোনা গেলেও আসলে বাগানে ১২ মাসই মাল্টার গাছে ফল ধরে আসছে। একটা গাছের মাল্টা শেষ না হতেই অন্য গাছে মুকুল আসে। প্রথম তেমন ফল পাওয়া না গেলেও তৃতীয় ও চতুর্থ বছরে ব্যাপক ফল পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, স্থানীয় বাজারে মাল্টা কেজি প্রতি ১৭০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করে থাকি। বাগানের উৎপাদিত মাল্টা স্থানীয় বাজার ছাড়াও শহরের বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করে থাকি। আমি মাল্টা চাষ করে এখন সফল। মাল্টার টাকায় আমার সংসার চলে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান জানান, এটি একটি সুস্বাদু ফল। জেলায় দুই দশমিক ৫০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে। দোআঁশ মাটি মাল্টা চাষের জন্য বেশ ভালো। সে ক্ষেত্রে সাঘাটার মাটি ও আবহাওয়া মাল্টার জন্য খুবই উপযোগী। আমির হোসেন মাল্টার বাগান করে লাভবান হয়েছেন। কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।