মিশ্র খামারে ঝালকাঠির মাহাফুজের সুদিন ফিরেছে

403

2017-09-23_4_254802

ঝালকাঠি: উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ের কবল থেকে গাছ ও নারিকেল রক্ষায় ঝালকাঠিতে ভিয়েতনামের খাটো জাতের সিয়াম ব্লু নারিকেল গাছের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। নারিকেল গাছের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে মাল্টা, লাউ, করল্লা, ধুন্দল ও শসার বেশ নাম করেছে।

এসব ফসলের কান্দিতে রয়েছে মাছের চাষ। এসব চাষ করে এরমধ্যে ‘এশা ইন্টিগ্রেটেড এগ্রিকালচার’ নামের একটি মিশ্র খামার বেশ নাম করেছে। যিনি এ খামার করেছেন তার নাম মাহাফুজুর রহমান। তিনি এ খামার করে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেশাইন খান গ্রামের এক সময়ের বেকার যুবক মাহাফুজুর রহমান তিন একর জমিতে গড়ে তুলেছেন এ মিশ্র খামার। ছয় মাস আগে ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ভিয়েতনামের খাটো জাতের সিয়াম ব্লু ১৮০টি নারিকেল গাছের চারা কিনে রোপণ করেন। ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলেছে, বন্যা ও ঝড়ো হাওয়ায় এই নারিকেল গাছের কোন ক্ষতি হবে না। চারা রোপণের তিন বছরের মধ্যে ছোট অবস্থাতেই গাছে নারিকেল পাওয়া যাবে।

মাহফুজের এ নারিকেল খামারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করছেন পাঁচজন শ্রমিক। পরিচর্যার পর সবগুলো নারিকেল চারা ফুটে উঠেছে। কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শ নিয়ে নারিকেল গাছের পাশাপাশি চাষ করছেন সাথী ফসল মাল্টা, লাউ, করল্লা, ধুন্দল ও শসার। আর এসব ফসলের কান্দিতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অভায়রন্য। তাই মাহফুজের মিশ্র খামারটি ঝালকাঠি সদর উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। লাউ, করল্লা, ধুন্দল ও শষা বিক্রি করে এ খামার থেকে ইতোমধ্যেই সপ্তাহে দশ হাজার টাকা আয় হচ্ছে মাহফুজের।এরপর আসবে মাছ বিক্রির টাকা। তিন বছর পর তার এ খামারের নারিকেল এসে যাবে।

মাহাফুজের এ খামার দেখে গ্রামের অনেকেই উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। খামারটি দেখতে আসছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকেও বেকার যুবকদের এ খামারের আদলে খামার করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

মাহাফুজুর রহমান বলেন, উপকূলীয় এলাকায় খাটো জাতের ভিয়েতনামের নারিকেল চারা রোপণ করতে গিয়ে আমি একটি মিশ্র খামারের বাগান করি। এ বাগানে আমি ১৮০টি নারিকেল গাছের চারা রোপন করেছি। প্রথমে শখের বসে নারিকেলের চারা লাগিয়েছি। এখন এটা লাভজনক হওয়ায় কৃষি বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে মিশ্র খামার গড়ে তুলেছি। এখন আমার খামারে বিভিন্ন সবজি ও মাছের চাষ হচ্ছে। আশাকরি এ খামার থেকে এক সময় আমি প্রচুর আয় হবে এবং আমার আর্থিক সচ্ছলতা আসবে।

কীত্তিপাশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুস শুক্কুর মোল্লা বলেন, আমাদের ইউনিয়নে শিক্ষিত যুবক মাহাফুজুর রহমান যে কৃষি খামার করেছেন, এটা অত্যন্ত লাভজনক হবে। এ খামারটি এলাকার বেকার যুবকদের জন্য অনুকরণীয়। তারা ইচ্ছে করলে মাহাফুজের কাছ থেকে এবং কৃষি বিভাগ থেকে তথ্য নিয়ে এমন খামার করতে পারে। প্রয়োজনে আমরা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করবো।

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শেখ আবুবকর ছিদ্দিক জানান, মাহাফুজকে প্রথমে নারিকেলের বাগান করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। সে আমাদের কাছ থেকে ১৮০টি ভিয়েতনামের খাটো জাতের নারিকেল চারা নিয়ে রোপণ করেছেন। পরে আমাদের পরামর্শে তিনি কান্দিতে মাছের চাষ ও সাথী ফসল হিসেবে সবজি চাষ শুরু করে সফলতা পাচ্ছেন। আড়াই বছর পর মাহাফুজের নারিকেল গাছে ফলন আসবে। নারিকেল বিক্রি করে তিনি আরো লাভবান হবেন। সূত্র: বাসস

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম