মুগডালের ভালো ফলন পেতে হলে ক্ষেতের আগাছা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ছিটানো পদ্ধতিতে আগাছা দমন কঠিন হলেও কাজটি যথাসময়ে করতে হবে। ভালো ফলন পেতে হলে বপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে একবার আগাছা দমন করা প্রয়োজন। অতিবৃষ্টির ফলে যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে না পারে সে জন্য অতিরিক্ত পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এ ছাড়া খরিফ-১ মৌসুমে বৃষ্টি না হলে বপনের আগে বা পরে একটি সেচ দিতে হবে। সেচ দিলে চারা গজানোর পর মালচিং করে দিতে হবে।
মুগের পাতার দাগ রোগ দমন :
সারকোস্পোরা ক্রোয়েন্টা নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়। পাতায় ছোট ছোট লালচে বাদামি বর্ণের গোলাকৃতি হতে ডিম্বাকৃতির দাগ পড়ে। আক্রান্ত পাতা ছিদ্র হয়ে যায়। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে সম্পূর্ণ পাতা ঝলসে যায়। পরিত্যক্ত ফসলের অংশ, বায়ু ও বৃষ্টির মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে। বেশি আর্দ্রতা (৮০%) এবং উচ্চ তাপে (২৮ ডিগ্রি সে.) এ রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করে।
প্রতিকার
১. ব্যাভিস্টিন নামক ছত্রাকনাশক ১ গ্রাম/লিটার পানি হারে ১২-১৫ দিন অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
২. রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার (বারি মুগ-২, ৩ ৪ এবং ৫) করতে হবে।
মুগের পাউডারি মিলডিউ রোগ দমন : ওইডিয়াম প্রজাতির ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়। এ রোগে পাতায় পাউডারের মতো আবরণ পড়ে। সাধারণত শুল্ক মৌসুমে এ রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। বীজ, পরিত্যক্ত গাছের অংশ ও বায়ুর মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে।
প্রতিকার
১. বিকল্প পোষক ও গাছের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
২. টিল্ট-২৫০ ইসি ১ মিলি/লিটার পানি বা থিওভিট ২ গ্রাম/লিটার পানি হারে ১০-১২ দিন অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
মুগের হলদে মোজাইক রোগ দমন :
মোজাইক ভাইরাস দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে। আক্রান্ত পাতার ওপর হলদে সবুজ দাগ পড়ে। সাধারণত কচি পাতা প্রথমে আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত বীজ ও বায়ুর মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে। সাদা মাছি নামক পোকা এ রোগের বাহক হিসেবে কাজ করে। বিকল্প পোষক ও সাদা মাটির আধিক্য এ রোগ দ্রুত বিস্তারে সহায়ক।
প্রতিকার
১. রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করতে হবে।
২. সাদা মাছি দমনের জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
৩. আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়ে ফেলতে হবে।
পোকা :
মুগের জমিতে বিছাপোকা ও শুটি ছিদ্রকারী পোকা দেখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে ডেসিস ২.৫ ইসি বা সিমবুস ১০ ইসি ১ মিলি/লি পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ বার স্প্রে করা যেতে পারে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/৯ফেব্রু২০২০