মুরগির উকুন, আঠালী ও মাইট- সৃষ্ট রোগ এবং তাড়ানোর উপায়

1039

মুরগির উকুন, আঠালী ও মাইটঃ সৃষ্ট রোগ এবং তাড়ানোর উপায়। মুরগির উকুন দূর করার ঘরোয়া উপায় বা উকুন তাড়ানোর উপায় এবং মুরগির গায়ে পোকা ও সুলসুলি পোকা মারার ওষুধ। মুরগির শরীরের এসকল বহিঃপরজীবী রোগ সৃষ্টি সহ নানান ধরণের সমস্যা সৃষ্টি করে। দেশি মুরগির এ পরজীবী ডিমের উৎপাদন কমিয়ে দেয়। ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালি মুরগির শরীরে উকুন, আঠালী ও মাইট এর আক্রমণ বেশি থাকে।

উকুন: উকুন মুরগির দেহের বহির্ভাগ এর পালক এবং ত্বকের শক্তভাবে লেগে থাকে মুরগির দেহের মাথা হতে শুরু করে সব জায়গায় এর উপর বসবাস করে। সাধারণত দুই ধরণের উকুন দেখতে পাওয়া যায়।

রক্তচোষা উকুন
কামড়ানি উকুনগুলো চামড়ার উপরে কামড়ায় ফলে চুলকানি হয় রক্তচোষা উকুন চামড়ার উপরের অংশে কামড়ায় এবং রক্ত শোষণ করে

রোগের লক্ষণ
মুরগি সর্বদা বিরক্তি বোধ করবে।
ঠোঁট দিয়ে সর্বদা পালক চুলকাবে।
ওজন হ্রাস পাবে এবং রক্তশূন্যতা দেখা দেবে।
এ রোগে আক্রান্ত হলে ডিম উৎপাদন অস্বাভাবিকভাবে কমে যাবে।
সর্বদা পালনের ফলে পালক সমূহ নষ্ট হয়ে যায় এবং চামড়া ও নষ্ট হয়ে যায়।
মুরগিতে সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করলে মুরগির উকুন দেখা যায়

মুরগির উকুন দূর করার ঘরোয়া উপায়: কাঠ পোড়ানো 62 ভাগ এবং সোডিয়াম ক্লোরাইড এক ভাগ অর্থাৎ 21 অনুপাতে ভালোভাবে মিশিয়ে কাপ এর সাহায্যে আক্রান্ত মুরগির মাথা ঘোরা লেজ ও মলদ্বারের চারপাশে আস্তে আস্তে বলিয়ে ঝেড়ে ফেলতে হবে। ওষুধটি যাতে মুরগির চোখের বা মুখের ভিতোর না যায় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। দিনে একবার করে তিনদিন এই মিশ্রণটি পাউডারটি লাগালি মুরগির উকুন বিনষ্ট হবে।

মুরগির উকুন তাড়ানোর উপায়- ২
কাঠ পোড়ানো স্থায়ী নয় ভাগ ও এভেন্ট ইস কোম্পানির গ্যামাক্সিন ওয়ান পার্সেন্ট এক ভাগ অর্থাৎ 92 অনুপাতে ভালোভাবে মিশিয়ে মেঘনার সাহায্যে উল্লেখিত মিশ্রণটি মুরগির গায়ে এবং মলদ্বারের পাশে দিয়ে দিনে একবার করে তিনদিন প্রয়োগ করলে গায়ের উকুন বিনষ্ট হবে।

মুরগির গায়ে পোকা ও সুলসুলি পোকা মারার ওষুধ
50 পার্সেন্ট ম্যালাথিয়ন কনসেনট্রেট 1 ভাগের সাথে 49 ভাগ পানি মুরগির ঘরে সরঞ্জাম এবং লিটারে স্প্রে করতে হবে। তবে ঔষধটি স্প্রে করার পূর্বে মুরগির খাবার পাত্র ও পানির পাত্র ঘরের বাইরে নিতে হবে।

মুরগির উকুন, আঠালী ও মাইট

আঠালি
মুরগির উকুন এর মত আঠালি ও মুরগির দেহের বহির্ভাগে বসবাস করে। এ পোকা দেখতে ক্ষুদ্র বাদামের মত রং কালো বা তামাটে। আকারে উকুন অপেক্ষা কিছুটা বড়।

রোগের লক্ষণ
মুরগির গায়ে ধরনের পোকার আক্রমণে মুরগির পালক চুলকাতে থাকে এবং সর্বদা অস্বস্তি বোধ করে।
আঠালি আক্রান্ত মুরগির ডিম পারা অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়।
দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং রক্তশূন্যতা দেখা যায়।
চিকিৎসা ব্যবস্থা
গ্যামাক্সিন 5 পার্সেন্ট পাউডার সপ্তাহে তিনবার করে রোগাক্রান্ত মুরগি রে ছড়িয়ে দিয়ে পরিষ্কার করে দিতে হবে।

মাইট
অতি ক্ষুদ্র ছারপোকা জাতীয় একই সমূহ মুরগির মাথা ও ঘাড়ের পালকের গোড়ার তকে মুরগির পালক এর নিচে ত্বকের মধ্যে উপায় এবং পায়ের আঙ্গুলের ফাঁক থেকে রক্ত রাতে রক্ত পান করে দিনে অন্ধকার স্থানে বা কাঠের বা দেয়ালে লুকিয়ে থাকে এবং রাত হলে বাইরে বের হয়ে আসে।

মুরগির আঠালী ও মাইট
চিত্র: মুরগির আঠালী ও মাইট

রোগের লক্ষণ
আক্রান্ত মুরগি বিরক্তি বোধ করে।
রক্ত শূন্যতায় ভোগে।
ওজন হ্রাস পায় এবং ডিম উৎপাদন অনেকাংশে কমে যায়।

চিকিৎসাব্যবস্থা দমন
মারক্সিস্ট পাউডার 5 ভাগ এবং থাই 95 ভাগ অর্থাৎ 2019 অনুপাতে মিশ্রিত করে আক্রান্ত মুরগিকে সূর্যাস্তের কিছু আগে উল্লেখিত মিশ্রণটি গায়ে মেখে দিতে হয় গায়ে মেখে দিলে রোগ নিরাময় হয়ে যায়।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০৫ জানুয়ারি ২০২২