আমাদের দেশে সবাই মুরগি মারা যাবার আগ পর্যন্ত মুরগি ভাল আছে মনে করে। আসলে তা ঠিক না। মুরগি মারা যাবার আগে মুরগি ঠিক আছে কিনা তা বুঝার জন্য অভিজ্ঞতা দরকার পাশাপাশি ওজন নিতে হবে,দেখতে হবে বয়স অনুযায়ী ওজন ও প্রডাকশন ঠিক আছে কিনা।ডিমের কালার,সাইজ ঠিক আছে কিনা,ফিসিস ঠিক আছে কিনা।চঞ্চলতা দেখতে হবে।খাবার কতক্ষণে খায় তা দেখতে হবে।
পোল্ট্রি জগতে খামারীকে অনেক কিছু মেনে নিতে হবে। না মানলে খরচ এবং চিন্তা ২টাই বাড়বে। মুরগি মারা না গেলেও সমস্যা থাকতে পারে যা খেয়াল করতে হবে।
পোল্ট্রি জগতে খামারীকে অনেক কিছু মেনে নিতে হবে।না মানলে খরচ এবং চিন্তা ২টাই বাড়বে। চলুন জেনে আসি কোন বিষয়গুলো না জানলে কি হয়।
এইচ ৯এন২ বা রানিক্ষেত রোগ
এটা ভাল হতে প্রায় ২ সপ্তাহ লাগবে এবং ডিম কমে যাবে। যাই করুক না কেন এসব মেনে নিতে হবে। কারণ খুব বেশি ভাল রিজাল্ট পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
ব্রয়লারে রানিক্ষেত
এসব রোগে ১০০% পর্যন্ত মারা যায়।তবে প্রাথমিক অবস্থায় মেসোজেনিক ভ্যাক্সিন দিলে কাজ হয়। ব্রয়লারে আই বি এইচ,গাউটে ও এসাইটিসে ১-১০% মারা যাবে যাই করুক না কেন।তাই মেনে নেয়াই বুদ্ধিমান খামারীর কাজ।
লেয়ার/সোনালী ব্রিডারে মারেক্স,লিউকোসিসে ৫-১০% বা বেশিও মারা যেতে পারে।কোন কিছুতে বাচানো যাবেনা।তাই খরচ বাড়ানো ঠিকনা। ভেলোজেনিক/ ভি ভি টি ন ডি রানিক্ষেত,এইচ ৫ এন ১ হলে প্রায় ১০০% মারা যায়।তাই এসব ক্ষেত্রে চিন্তা করে লাভ নাই।
ব্রয়লারে সাডেন ডেথ সিন্ড্রমে সর্বোচ্চ ১% মারা যাবে যা স্বাভাবিক।তাছাড়া ব্রয়লারে ১-২% মর্টালিটি নরমাল।এন্টিবায়োটিক দিলে ক্ষতি ছাড়া লাভ নাই। আপনার ব্যবস্থাপনায় যে ঘাটতি থাকবে সেই ঘাটতি অনুযায়ী কম ওজন বা প্রডাকশন আসবে যা মেনে নিতে হবে। ফার্মে লিটার খারাপ,গ্যাস হচ্ছে তাই আপনি ভাল ওজন আশা করতে পারেননা।
বাচ্চা ও খাবার ভাল কোয়ালিটির না আপনি কিভাবে ভাল আশা করবেন তাই মেনে নিতে হবে।আপনি যেমন ইনপুট দিবেন সেইরুপ আউটপুট পাবেন। আপনি ডাক্তার না দেখিয়ে নিজের মত চিকিৎসা করবেন তাই যাই হয় মেনে নিতে হবে।
১০০০ব্রয়লারে ৫০টা খাবার খেয়ে কারো ১৭০০গ্রাম ওজন আসে।কারো ১৮০০গ্রাম,কারো ১৯০০গ্রাম। কারো আবার ২কেজি।
সবার সমান আসেনা কারণ সবার সব কিছু সমান না।
মুরগি মারা না গেলেও যেসব সমস্যা/রোগ হলে খেয়াল রাখতে হবে
মারা যাওয়া ছাড়াও অনেক সমস্যা থাকতে পারে যা খামারীরা খেয়াল করেনা।তাই মারা না গেলেও মুরগির অনেক সমস্যা থাকতে পারে যা সবাইকে ভেবে দেখতে হবে। যেমন-
কক্সিডিওসিস: এতে হয়ত সব সময় মারা যাবেনা কিন্তু ওজন কম আসতে পারে,এফ সি আর বেড়ে যেতে পারে।
এন্টারাইটিস: এতে হয়ত মুরগি মারা যাবেনা বা গেলেও অনেক দেরিতে যাবে।এতে ওজন কম আসবে।
কৃমি: এতে বাহ্যিকভাবে মুরগির সমস্যা হয়ত চোখে পড়বেনা কিন্তু মুরগির অনেক ক্ষতি হবে যা বুঝা যায় না।
খাবার: খাবারের কোয়ালিটি খারাপ হলে সাথে সাথে মুরগি হয়ত সাথে সাথে মারা যাবেনা কিন্তু অনেক ক্ষতি হবে এবং পরে মারা যাবে কিন্তু সেটা যে খাবারের কারণে তা মাথায় আসবেনা। তাই খাবারের কোয়ালিটি দেখতে হবে।। এসব হল মুরগির সাইলেন্ট কিলার যা চোখে দেখা যায় না।তাই যা দেখা যায়না তাই দেখা দক্ষতার লক্ষণ।
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২