মুরগির খামারে অতি জরুরি ৩৩ টি জীব নিরাপত্তা মেনে চলা উচিত

323

জীব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

১. খামারের প্রধান গেট তালা দিয়ে রাখতে হবে। ‘জীব নিরাপত্তা চালু আছে, প্রবেশ নিষেধ’ লেখা সাইনবোর্ড লাগাতে হবে।

২. খামারের চার পাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

৩. খামারের শেডের পাশে খাদ্যদ্রব্য ফেলা যাবে না, এতে বন্যপাখি আসবে। বন্যপাখি বার্ড ফ্লুর ভাইরাস বহন করে।

৪. দর্শনার্থীদের এবং অন্য খামারের কর্মীদের প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না।

৫. খামারের ভেতরে নিয়োজিত কর্মীদের খামার কর্তৃক প্রদত্ত জীবাণুমুক্ত পোশাক, জুতা, টুপি ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে।

৬. খামারের ভেতর প্রবেশের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, গাড়িসহ সবকিছু জীবাণুমুক্ত করে প্রবেশ করাতে হবে। এসব কিছুতে জীবাণুনাশক পদার্থ স্প্রে করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

৭. খামারের ভেতর যারা থাকবে বা প্রবেশ করবে তাদের পরিধেয় সবকিছু জীবাণুমুক্ত হতে হবে।

৮. মুরগির ঘরের দরজা বন্ধ রাখতে হবে; যাতে বিড়াল, কুকুর, ইঁদুর, সাপ, বেজি ইত্যাদি প্রবেশ করতে না পারে।

৯. এক খামারের লোক অন্য খামারে গোসল করতে জীবাণুমুক্ত হয়ে প্রবেশ করতে হবে। জীবাণু এক খামার থেকে অন্য খামারে প্রবেশ প্রতিরোধ করতে হবে।

১০. খামারের কর্মীদের বন্যপাখির দোকানে খাওয়া যাবে না।

১১. খামার পরিত্যাগের সময় খামারের বস্ত্রাদি পরিবর্তন করে হাত-পা ভালোভাবে ধুতে হবে।

১২. প্রতিটি শেডের সামনে পা ধোয়ার জীবাণুমুক্তকরণ তরল পদার্থ রাখতে হবে। শেডে প্রবেশের সময় পা জীবাণুমুক্ত করে প্রবেশ করতে হবে।

১৩. প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া বিদেশ থেকে মুরগির বাচ্চা, ডিম, খাদ্য ও সরঞ্জামাদি আমদানি নিষেধ।

১৪. দেশের ভেতর থেকে বাচ্চা সংগ্রহের আগে নিশ্চিত হতে হবে, ওই খামারের গত এক বছরে কোনো রোগ দেখা দিয়েছে কি না।

১৫. অতিথি পাখি খামারের আশপাশে বা ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। খামারের কর্মীদেরও অতিথি পাখির কাছে যাওয়া যাবে না। কারণ শীতকালে বিভিন্ন দেশে থেকে এ দেশে অতিথি পাখি আসে। পাখিগুলো বিভিন্ন রোগের জীবাণু বহন করতে পারে।

১৬. কোনো হাঁস-মুরগি অসুস্থ হলে বা মারা গেলে সাথে সাথে জেলা বা উপজেলা প্রাণি চিকিৎসা কেন্দ্রে জানাতে হবে।

১৭. মৃত মুরগি মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।

১৮. খামারে প্রবেশ ও বাইরে যাওয়ার জন্য একটিমাত্র পথ চালু থাকবে।

১৯. মুরগি ও ডিম বিক্রি করে খাঁচা, সরঞ্জামাদি ও যানবাহন পরিষ্কার করে জীবাণুমুক্ত করে খামারে প্রবেশ করতে হবে। কারণ যেখানে মুরগি ও ডিম বিক্রি করা হবে, সেখানে অন্য মুরগি থেকে জীবাণু আসতে পারে।

২০. অবিক্রীত মুরগি ও ডিম খামারের ভেতর নেয়া যাবে না।

২১. হাঁস-মুরগিকে সময়মতো সব রোগের টিকা দিতে হবে।

২২. মুরগি, হাঁস, কবুতর ও অন্যান্য পাখি একত্রে পালন করা যাবে না।

২৩. অতিথি পাখি শিকার বìধ করা, বিক্রি বìধ করা এবং অতিথি পাখির কাছে যাওয়া নিষেধ।

২৪. বাড়িতে পালার জন্য বাজার থেকে কেনা মুরগি অন্তত ১৫ দিন আলাদা রেখে তারপর বাড়িতে মুরগির সাথে রাখতে হবে।

২৫. খামারের ভেতরে প্রবেশের সময় জীবাণুমুক্ত গ্লাভস, গামবুট, মাস্ক, টুপি ও এপ্রোন ব্যবহার করতে হবে।

২৬. এক শেডের যন্ত্রপাতি বা ব্যবহার্য জিনিসপত্র অন্য শেডে ব্যবহার করা যাবে না।

২৭. রোগাক্রান্ত হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, ময়লা, বর্জ্য মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।

২৮. শেডের লিটার ঘন ঘন পরিবর্তন করতে হবে এবং শুকনা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

২৯. মুরগির ঘরে কাজ করার সময় ভেতর থেকে দরজা বন্ধ রাখতে হবে।

৩০. মুরগির মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ দেখা দিলে প্রাণি হাসপাতালে জানাতে হবে। অস্বাভাবিক আচরণের মধ্যে রয়েছে মুরগি পরপর দু’দিন ২০ শতাংশ হারে পানি ও খাদ্য কম খেলে এবং ডিম উৎপাদন পর পর দু’দিন ২০ শতাংশ হারে কমলে।

৩১. লেয়ার মুরগির বিষ্ঠা প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে।

৩২. প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে সুষম ও টাটকা খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।

৩৩. জীবাণুনাশক হিসেবে সাবান, ডিটারজেন্ট, ভিরকন, ফার্ম ফ্লুইড ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০৪ মে ২০২১