মুরগির খামার পরিষ্কার করার বিভিন্ন ধাপ

94

 

খামারীদের যদি বলা হয়, খামার কিভাবে পরিষ্কার করেন? ৯৯% খামারী বলবেন “প্রথমে খামার ঝাড়ু দেই। তারপর পানি দিয়ে পরিষ্কার করি।সবশেষে চুন ছিটিয়ে দেই।” এতে করে কি খামার পুরোপুরি জীবানুমুক্ত হয়?

একদম না। নিচে খামার পরিষ্কার ও জীবানুমুক্ত করার ধাপগুলো দেয়া হলো। একটু বেশী কষ্ট হলেও যদি এভাবে খামার পরিষ্কার করেন আশাকরি গামবোরো সহ অন্যান্য রোগ থেকে দুরে থাকতে পারবেন।

খামার পরিচ্ছন্নতা:

প্রথম ধাপঃ
খামার ভাল করে ছাড়ু দিতে হবে। মাকড়সার জাল সহ খামারে লেগে থাকা ময়লাগুলো ঘষে ঘষে তুলতে হবে। এবং ময়লা গুলো দুরে গর্ত করে পুতে ফেলতে হবে।

দ্বিতীয়_ধাপঃ
এরপর প্রথমে সাদা পানি দিয়ে খামারটা ভিজিয়ে দিতে হবে। তারপর ডিটারজেন্ট (হুইল, চাকা, রিন, কেয়া, চমক) পানিতে মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে পুরা ঘর ভিজিয়ে ৬ ঘন্টা রেখে দিতে হবে। ৬ ঘন্টা পর পুনরায় ডিটারজেন্ট দিয়ে ঘষে খামার পরিষ্কার করতে হবে।লবন ছিটিয়ে রেখে আধাঘন্টা পর ধুয়ে দিবেন সাদা পানি দিয়ে।

তৃতীয় ধাপঃ
খামার ডিটারজেন্ট পানি দিয়ে পরিষ্কার করার পর পানি গুলো যেই মাটিতে পড়বে সেই মাটি কোদাল দিয়ে ১-২ ইঞ্চি তুলে খামার থেকে দুরে ফেলে দিতে হবে (এই মাটি জীবানুর আখড়া)। ও অন্য স্থান থেকে মাটি এনে খামারের নিচে ভরাট করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে খামার যদি মাচাতে হয় তবে খামারের নিচে সিমেন্ট আর মাটি দিয়ে প্রলেপ দিতে হবে।

চতুর্থ ধাপঃ
এরপর ডিজইনফেক্টেন্ট দিয়ে পুরো খামার (প্রতিটি কোনা) স্প্রে করতে হবে এবং স্প্রের পানি খামারে ২৪ ঘন্টা রেখে দিয়ে শুকাতে হবে। ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি গুলো পভিডন আয়োডিন দিয়ে পরিস্কার করতে হবে।

খামারে যে ডিজইনফেক্টেন্টগুলো ব্যবহার করতে পারবেনঃ
* কোয়ার্টারনারি অ্যামোনিয়া গ্রুপ
* গ্লুটারোলডিহাইড
* CID-20
* Altracide
* GPC-8
* HI-7
* Omnicide

পঞ্চম ধাপঃ

২৪ ঘন্টা পর একটা লাঠির সামনের অংশে মোটা করে সুতির কাপড় পেঁচিয়ে তাতে কেরোসিন দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে ঘরের মেঝে, তারের নেট ইত্যাদিতে আগুনের ছোঁয়া দিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে খুব সাবধান হতে হবে যেন আগুন লেগে না যায়। শুধু আগুনের ছোঁয়া দিবেন এবং কোন স্থানে ১-২ সেকেন্ডের বেশী আগুন ধরে রাখবেন না।

ষষ্ঠ ধাপঃ
এরপর চুন পানিতে গুলিয়ে মেঝেতে প্রলেপ দিতে হবে এবং মাচার নিচে দিয়ে একটা নেট দিতে হবে যাতে মুরগীর লিটার মাটিতে না পড়ে।

সপ্তম ধাপঃ
খামার সম্পূর্ন রুপে পরিষ্কার হয়ে গেলে কমপক্ষে ১ সপ্তাহ রেখে দিতে হবে। তারপর খামারে বাচ্চা তুলতে হবে। এক্ষেত্রে ১ সপ্তাহের মাঝে খামার পরিষ্কার করা শেষ করতে হবে। আর এক সপ্তাহ পরিষ্কার করে রেখে দিতে হবে। মোট ১৫ দিন পর বাচ্চা খামারে তুলবেন। অনেকে মুরগী বিক্রয় করার ৫-৭ দিনের মধ্যে খামার পরিষ্কার করে নতুন করে বাচ্চা তুলেন।ভুলেও এ কাজ করবেন না। দুটি ব্যাচের মধ্যবর্তী সময় কমপক্ষে ১৫ দিন দিতে হবে। এবং একই খামারে বিভিন্ন বয়সের বাচ্চা একসাথে তুলা যাবে না। এতে রোগের প্রাদুর্ভাব বেশী দেখা যায়।