মুরগির ঠোঁট বেশি লম্বা এবং সুঁচালো হলে এরা সহজেই খেতে পারেনা ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য নষ্ট হয়। অনেক সময় এদের মধ্যে ঠোকরা ঠুকরির প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। তাই নির্দিষ্ট বয়সে প্রতিটি মুরগির ঠোঁটের কিছু অংশ কেটে ফেলা হয়। একেই ডিবিকিং বলে।
লেয়ার মুরগীতে ঠোট কাটার উদ্দ্যেশ্য :-
১ । ক্যানাবলিজম রোধ করার জন্য
২। খাবারের অপচয় রোধ করার জন্য
৩। মুরগীর দৈহিক সমতা বৃদ্ধির জন্য
ঠোট কাটা বা ছ্যাকা দেয়া একটি সুক্ষ কাজ এবং এটি শুধুমাত্র দক্ষ লোক দ্বারা করানো উচিত। ঠোট কাটা বা ছ্যাকা দেয়ায় কোন রকম ভুল হলে পরবর্তীতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।
ঠোট কাটা বা ছ্যাকা দেয়ার সময়:-
যদি শুধু মাত্র খাচায় পালন করা হয় (অন্ধকার ঘরে যেখানে আলোর প্রখরতা কম) সেখানে বাচ্ছাকে প্রথম দিন অথবা ৭-১০ দিনে ছ্যাকা দিতে হবে।
খোলা মেলা পরিবেশে ৭-১০ দিনে ঠোট ছ্যাকা এবং ৮-১০ সপ্তাহের মধ্যে ঠোট কাটতে হবে।
ঠোট ছ্যাকা (৭-১০ দিন)
প্রথম অবস্থায় ঠোট কাটার সুবিধা এটাই যে এর ফলে মুরগীর দৈহিক বৃ্দ্ধিতে কোনরূপ বিরুপ প্রভাব পড়বে না।
ঠোট ছ্যাকা দেয়ার সময় সঠিক মাপের ছিদ্র বাছাই করতে হবে যেন নাকের অন্তত ২ মিমি আগে ছ্যাকা পড়ে।
ঠোট ছ্যাকা দেয়ার সময় ২-২.৫ সেকেন্ডের বেশী হওয়া যাবে না।
ব্লেডের তাপমাত্রা ৬০০-৬৫০ ডিগ্রি হতে হবে।
ঠোট কাটা (৮-১০ সপ্তাহ)
আলাদাভাবে উভয় ঠোট কাটতে হবে।
উভয় ঠোটের দৈর্ঘ্য সমান হতে হবে।
কাঠার পর ছ্যাকা দিতে হবে যেন রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়।
ব্লেডের তাপমাত্রা ৬৫০-৭৫০ ডিগ্রি হতে হবে।
কখন ঠোঁট কাটা উচিত নয় :
ভ্যাকসিন প্রদানের দুই দিন আগে বা পরে বা ভ্যাকসিন প্রদানের দিন বা ঐ দিন;
সালফার জাতীয় ঔষধ সেবনের দুই দিন আগে বা পরে;
মুরগির ধকল সৃষ্টি হলে;
আবহাওয়ার পরিবর্তন বেশি হলে;
মুরগি ডিম পাড়তে শুরু করলে।
ঠোট কাটার পূর্ববর্তী সতর্কতা:-
অসুস্থ ফ্লকে ডিবেকিং করা যবে না।
ডিবেকিং করার ৪৮ ঘন্টা আগে থেকে ভিটামিন কে দিতে হবে।
ব্লেডের তাপমাত্রা যথাযত আছে কিনা দেখে নিতে হবে। (অধিক তাপমাত্রা থাকলে ফোস্কা পড়ে যেতে পারে)
ঠোট কাটা কালীন সতর্কতা:-
ডিবেকারকে সুবিধামত জায়গায় বসতে দিতে হবে।
তাড়াহুড়া করা যাবে না । যত বেশী তাড়াহুড়া করা হবে ভুল তত বেশী হবে।
একটি ব্লেড দিয়ে ৫০০০ এর অধিক মুরগীর ঠোট কাটা উচিত নয়।
মুরগীর জিহ্বায় যেন তাপ না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ঠোট কাটা পরবর্তী সতর্কতা:-
খাদ্য এবং পানির পাত্রে খাদ্য এবং পানি বাড়িয়ে দিতে হবে যেন মুরগী ব্যাথা না পায়।
ভিটামিন কে এবং ভাল মানের নিরাপদ এন্টিবায়োটিক দিতে হবে।
দুইদিন পর থেকে স্ট্রেস কমানোর জন্য ভিটামিন সি দেয়া যেতে পারে।
ক্রেডিটঃঃ নারিশ টেকনিক্যাল সার্ভিস ফেসবুক পেজ।
ফার্মসএন্ডফার্মার/২৭আগস্ট২০