মুরগির পেটে পানি জমা রোগ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। মুরগির বিশেষত ব্রয়লার মুরগির অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করে এমন রোগ গুলোর মধ্যে এসসাইটিস বা পেটে পানি জমা একটি অন্যতম রোগ। আসুন জেনে নেই মুরগির পেটে পানি জমা রোগ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে-
মুরগির পেটে পানি জমা রোগ প্রতিরোধে করণীয়ঃ
মুরগির পেটে পানি জমা রোগের কারণঃ
দ্রুত শারীরিক বৃদ্ধিঃ
বর্তমানে ব্রয়লার মুরগীতে এর প্রভাব বেশি কারণ অল্প সময় খুব বেশি পরিমাণ বৃদ্ধি সাধিত হয়। দ্রুত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত মাংশপেশিতে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেনের সরবরাহ প্রয়োজন। আর এই জন্যই অক্সিজেনের ঘটতি হলে এই রোগ হয়ে থাকে।
যথেষ্ট বায়ুচলাচলের অভাবঃ
অতিরিক্ত লাভের আশায় এক স্থানে বেশি পরিমাণ মুরগি লালন পালন করা হয়। এর ফলে সহজে খামারের গ্যাস বের হয়ে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ বাতাস আসতে পারেনা। ফলে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা যায়।
ঠান্ডা অবহাওয়াঃ
বিশেষত শীতের দিনে পরিবেশ বেশ ঠান্ডা থাকে আর এর ফলে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা যায়। কুয়াশার চাদরে ঢাকা শীতের দিনে মুরগীকে রক্ষার জন্য যে প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেয়া হয় তাতে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকে না। ফলে অক্সিজেনের ঘটতি এই সময়েই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
অতিরিক্ত পুষ্টিকর ফিড খাওয়ানোঃ
দ্রুত বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত পুষ্টিকর খাওয়ানো হয়। ফলে তা মেটাবলিজমের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা যায়।
গাদাগাদি করে থাকাঃ
গাদাগাদি করে থাকার ফলে বেশি ঘটতি দেখা যায় সব কিছুর। তাই এই রগ হোটে পাড়ে। ডিমে তা দিতে সমস্যা হলেও এই রোগ হতে পারে।
এমোনিয়া গ্যাসঃ
এমোনিয়া গ্যাস বেশি উৎপন্ন হলে-শীতের দিনে শেডের সাথে বাইরের পরিবেশ বেশি বায়ু চলাচল হয় না। যার ফলে মুরগির বিষ্ঠা হতে উৎপন্ন আমোনিয়া নামক ঝাঝালো গ্যাসটা শেড থেকে দূর হয়না। আর এই বিষাক্ত গ্যাস থাকার কারনেও এই পেটে পানি জমা রোগ হয়ে পারে।
রোগের লক্ষণঃ
হঠাৎ করে মারা যায়।
মুরগীর মারা যাওয়ার সময়টা বেশি হয় ২৮ দিনের পর থেকে। আর সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ৩৫-৪২ দিন বয়সের মুরগীর ক্ষেত্রে। তাছাড়া এই রোগ ১৫ দিনের পর থেকেও লক্ষ্য করা যায়।
আক্রান্ত পাখি সাধারণ পাখির চেয়ে ছোট, বিষন্ন এবং পালক ছড়ানো ছিটানো দেখা যায়। এর এটা বৃদ্ধি থেমে যাওয়ার কারণেই দেখা যায়।
মাথা দেখতে ফ্যাকাশে এবং টপ কুচকিয়ে যায়।
পাখি নড়াচড়া না করে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
অতিমাত্রায় আক্রান্ত মুরগীর পেট ফুলে থাকতে দেখা যায়।
চিকিৎসাঃ
এই রোগের তেমন খুবই কার্যকর চিকিৎসা নেই। শুধু মাত্র অনুসংগিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে নিম্নের চিকিৎসা করলে প্রভাব কমে যাবে।
ব্রড-স্প্রেকট্রাম অ্যান্টিবায়োটিক সলিউশন,
ডাই ইউরেটিক
ইলেক্ট্রলাইট পাউডার
ভিটামিন- সি সলিউশন
নেফ্রোকেয়ার লিকুইড।
উপরিউক্ত ঔষুধ সমূহ ৫-৭ দিন নিদিষ্ট মাএায় প্রয়োগ করতে হবে
নিয়ন্ত্রণঃ
কিছু বিষয় খেয়াল করলে এর প্রভাব কমানো যায়-
খুব বেশি খাবার না দিয়ে পরিমাণ কত খাবার সরবারহ করা।
পোল্ট্রি শেডে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করা।
শীতকালে ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে মুরগীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখা।
শেডে যেন আমোনিয়া গ্যাস বেশি না জমা হয় সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
ভিটামিন ই এবং সেলেনিয়ামের পরিমাণ ফিডে বৃদ্ধি করা।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১০জুন ২০২২