মুরগির যেসব ধকল পড়লে রোগ বাড়ে

195

ঠোঁটকাটা: এই সময় মুরগি ধরতে হয় ফলে স্টেস পড়ে। ঠোটাকাটার কারণে সবচেয়ে বেশি ধকল পড়ে ফলে স্টেরয়েড হরমোন রিলিজ হয়,খাবার ও পানি কমে যায়,ওজন কমে যায়।বিভিন্ন ধরণের রোগ ব্যাধি বেড়ে যায়।এন্টারাইটি্স ও মাইকোপ্লজমা বেড়ে যায়,টাইটার কমে যায়।

আবহাওয়া পরিবর্তন: আবহাওয়া পরিবর্তন হলে পোল্ট্রির উপর ধকল পড়ে ফলে অনেক ধরণের রোগ হয়।টাইটার কমে যায়।মাইকোপ্লজমা বেড়ে যায়। যেমন শীতের শুরুতে বা শেষের দিনে রোগব্যাধি বেশি হয়। রানিক্ষেত,এ আই,মাইকোপ্লাজমা,আই বি,গাউট।

অধিক গরম: অতিরিক্ত গরমে কটিকোস্টেরেয়ড রিলিজ হয় ফলে ইমোনিটি কমে যায় এবং কলেরা,টাইফয়েড,ই-কলাই বেশি হয়।

অধিক ঠান্ডা: ঠান্ডা বেশি হলে ধকল পড়ে এবং রানিক্ষেত,মাইকোপ্লাজমা বেশি হয়

অধিক ঘন: মুরগি ঘন হলে অক্সিজেন কম পায়,লিটার নস্ট হয়,এমোনিয়া বেশি হয় অনেক স্টেস পড়ে,লিটার ভিজে হয় ফলে রোগ বেশি হয়।

মাইকোটক্সিন: মাইকোটক্সিনের কারণে ইমোনিটি কমে যায় ফলে যে কোন রোগ হতে পারে।

ভয়: ইদুর বা শিয়াল,কুকুর,বেজি,নতুন কর্মচারী বা ভিজিটর বা যে কোন প্রাণীর আক্রমণে মুরগি ভয় পায় এবং ধকল পড়ে এবং প্রডাকশন কমে যায়।

শব্দ: শব্দ বেশি হলে প্রডাকশন কমে যায়।

দ্রুত বৃদ্ধি বা প্রডাকশন বেশি: দ্রুত বৃদ্ধি পেলে স্ট্রেস বেশি তাই রোগের প্রবণতা বেড়ে যায় বিশেষ করে ব্রয়লারে বিভিন্ন রোগ হয় যেমন সাডেন ডেথ সিন্ডম,প্যারালাইসি। লেয়ারের ক্ষেত্রে প্রডাকশন যদি ৯৫% এর বেশি হয় তাহলে মুরগি ধকলে থাকে তাই রোগ হবার সম্বাবনা থাকে।

লিটার ভেজা: ভেজা লিটারে ফাংগাস ও ব্যাক্টেরিয়া জন্মায় এই জীবাণূ এমোনিয়া তৈরি করে।

মেডিসিন: কিছু কিছু মেডিসিন তিতা যেমন কৃমিনাশক,টিয়ামোলিন,টিলমিকোসিন,সিপ্রো,এন্টিকক্সি ফলে পানি কম খায় এবং স্টেস পড়ে।ে জেন্টামাইসিন সালফার ড্রাগ যদি অনেকে দিন বা অভার ডোজ দেয়া হয় তাহলে কিডনিতে সমস্যা করে ধকল পড়ে এবং গ্রোথ বা প্রডাকশন কমে যায়

জেনেটিকস আপগ্রেডেশন: এর ফলে স্টেস বেশি পড়ে এবং বেশি রোগ হয় ব্রয়লারে গাউট,এসাইটিস,সাডেন ডেথ সিন্ডম।সরাসরি জড়িত না হলেও পরোক্ষ ভাবে দায়ী।

মোল্ট্রিং: এতে অনেক স্টেস পড়ে,খাবার কমে যায়,ডিম কমে যায়।প্রোটিনের ঘাটতি হয়। সেডের ভিতরে স্থানান্তর। এক গ্রোপ বা খাচার মুরগি অন্য গ্রুপ বা খাচায় পরিবর্তন করলে ধকল পড়ে।

পরিবহন: বাচ্চা বা পুলেট পরিবহনের কারণে স্টেস পড়ে এবং টাইটার কমে যায়,মাইকোপ্লাজমা বা অন্য কোন রোগ হয়ে যেতে পারে।

খাবার পরিবর্তন: খাবার পরিবর্তন করলে প্রডাকশন কমে এবং গ্রোয়িং মুরগির আমাশয় হয়ে যেতে পাড়ে।

ব্যবস্থাপনাগত ধকল: খাবার,পানির পাত্র,বাল্ব,আলো যদি ঠিক মত দেয়া না হয় তাহলে ধকল পড়ে।আলো বেশি দিলেও ধকল পড়ে।

ভেজা লিটার: ভেজা লিটার থেকে আমাশয়,এন্টারাইটিস হয়ে রানিক্ষেতের দিকে চলে যেতে পারে। এমোনিয়া যদি বেশি হয় তাহলে মাইকোপ্লাজমা,রানিক্ষেত,গাম্বোরো ও আই বি হতে পারে।

উকুন: উকুনের কারণে ধকল পড়ে এবং প্রডাকশন কমে যায়।

অধিক আলোর তীব্রতা: এতে মুরগির উপর স্টেস পড়ে।

ভেন্টিলেশন: বায়ু চলাচল যদি ভাল না হয় তাহলে ধকল পড়ে।

ব্রুডিং যদি ভাল না হয়: সঠিক ভাবে যদি তাপ,আলো,আর্দ্রতা,জায়গ,পানির ও খাবার পাত্র দেয়ানা হয় তাহলে স্টেস পড়ে এবং মুরগি অসুস্থ হয়ে যায়।

রোগ: রোগ হলে খাবার ও পানি কমে যায়,জৈবিক কার্যক্রম ব্যহত হয় ফলে স্ট্রেস পড়ে। যে কোন রোগ হলে ধকল পড়ে ফলে আরেকটি রোগ চলে আসে এবং মিক্স ইনফেকশনের সৃস্টি হয়।

প্রডাকশন: প্রডাকশন যত বেশি ধকল তত বেশি এবং রোগ হবার প্রবণতা তত বেশি হবে।

কর্মচারী পরিবর্তন: নতুন কর্মচারী আসলে ধকল পড়তে পারে ফলে প্রডাকশন কমে যেতে পারে।

নতুন মুরগি: সেডে নতুন মুরগি দিলে পুরান মুরগি তাকে মেনে নেয় না।প্রতিটি মুরগির নির্দিস্ট জায়গা থেকে সেখানে সে কাউকে ঢুকতে দেয় না।

খাবার ও পানির অভাব: বয়স ও আবহাওয়া অনুযায়ী খাবার ও পানি কম বেশি হবে,পিক প্রডাকশনের সময় খাবার বেশি দিতে হবে এবং গরমের সময় পানি বেশি দিতে হবে ,যদি কম পায় তাহলে স্টেস পড়ে।

ভ্যক্সিনেশন: টিকা দেয়ার সময় মুরগি ধরতে হয় এবং টিকা নিজেই একটি স্ট্রেস। ভ্যক্সিনেশনের ফলে ধকল পড়ে এবং মাইকোপ্লজামা ও আই বি,এমনি রানিক্ষেত হয়ে যেতে পারে।

ডিম পাড়া: ১ম ডিম পাড়ার সময় মুরগি খুব স্টেসে থাকে তাই বিভিন্ন ধরনের জীবানূ দ্বারা আক্তান্ত হবে।২৩-৪০ সপ্তাহ খুব রিক্স ।এই সময়ই মুরগি বেশি বড় ধরণের রোগে আক্রান্ত হয়।

মুরগি ধরা,ইঞ্জেকশন: এগুলোর মাধ্যমে ধকল পড়ে এবং বিভিন্ন রোগ হয়।মুরগি ধরতে গেলে খুব পায়,সহজে ধরা যায় না।

মাল্টি ভিটামিন ও মিনারেলস এর ঘাটতি: এর কারণেও স্টেস পড়ে বিভিন্ন সমস্যা হয়।

ক্রনিক আমাশয়: এটি এক ধরণের ধকল

পোকামাকড়: মশা ,মাছি,উকুন আঠালী হলে মুরগি বিরক্ত হয় এবং রক্তাল্পতা হয়।

কিভাবে বুঝা যাবে মুরগি স্টেসে পড়েছে

বাড়ন্ত মুরগির বার্সা ও থাইমাস ছোট হয়ে যাবে,
পিটুইনারী ও এড্রেনাল গ্রন্থি বড় হয়ে যাবে,
প্লাজমাতে করটিসন,ইন্সুলিন/গ্লুকাগন বেড়ে যাবে।
গ্লোকোজের শোষণ বেড়ে যাবে ফলে হাইপোগ্লাইসিমিয়া হবে।
ওজন কমে যাবে,
কার্টিলেজ ও হাড় তৈরি ব্যহত হবে,
খাবার কম খাবে,
শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাবে।
হিট শক প্রোটিন তৈরি হবে।
বৃদ্ধি ব্যহত হবে,
উতপাদন কমে যাবে,
ইউনিফর্মিটি কমে যাবে,
ব্রিডারে ফার্টিলিটি কমে যাবে,
স্ট্রেসের ক্ষতিকর প্রভাব,
হিট স্টোকে মুরগি মারা যেতে পারে,

গাটের পি এইচ বেড়ে যায় ফলে যে কোন রোগে আক্রান্ত হয়
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়
বৃদ্ধি কমে যায়
ডিম উতপাদন কমে যায়
এফ সি আর বেড়ে যায়
ভাল টাইটার পাওয়া যায় না।

প্রতিরোধ

পরিবেশ যাতে ভাল থাকে অধিক গরম বা ঠান্ডা যাতে না হয়।
ভাল ফিড দিতে হবে যাতে ভিটামিন ওমিনারেলের ঘাটতি না হয়
ফিডের ফর্মোলেশন হঠাত পরিবর্তন করা যাবে না
মুরগিকে পর্যাপ্ত জায়গা দিতে হবে
টিকা দেয়ার আগে ও পরে স্ট্রেস দূর করার মেডিসিন দিতে হবে।যেমন মাল্টিভিটামিন মিনারেলস বা লাইসোভিট বা এ ডিই
গরমে পানিতে ভিটামিন সি দিতে হবে,স্যালাইন দিতে হবে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০৪ নভেম্বর, ২০২২