মুরগীর রানীক্ষেত বা চুনা পায়খানার লক্ষণ ও প্রতিকার

397

প্যারামিক্সো ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট রানীক্ষেত রোগ পোলট্রি খামারের সর্বাধিক ক্ষতিকর রোগগুলির অন্যতম। এ রোগে আক্রান্ত মোরগ বা মুরগী শ্বসন, পরিপাক ও স্নায়ুতান্ত্রিক রোগ লক্ষণ প্রকাশ করে। আমাদের দেশে শীত ও বসন্তকালে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে।

প্রধানতঃ তিনটি ভিন্ন ধরনের ষ্ট্রেন যথাঃ
অতি তীব্র ভ্যালোজেনিক

মাঝারী তীব্র ম্যাসোজেনিক এবং
অপেক্ষাকৃত মৃদু লেন্টোজেনিক ষ্ট্রেন দ্বারা রানীক্ষেত রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়।
সাধারণতঃ যে কোন বয়স বা জাতের মোরগ-মুরগীতে রানীক্ষেত রোগ হতে পারে, তবে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী মোরগ-মুরগীতে এ রোগের সংক্রমন সহজে ঘটে।

রোগটি যেভাবে ছড়ায়ঃ
আক্রান্ত পাখির থুথু, লালা, সর্দি, কাশি, মলের মাধ্যমে রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। রোগটির জীবাণু আক্রান্ত পাখি বা খামার থেকে পার্শ্ববর্তী সুস্থ্য পাখি বা খামারে বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। সাধারণত আক্রান্ত খামারের আসবাব, যন্ত্রপাতি, যানবাহন অথবা লোকজনের মাধ্যমে সুস্থ্য খামারের মুরগীতে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে।

লক্ষণঃ
তীব্র সংক্রমনের ক্ষেত্রেঃ
ভ্যালোজেনিক (Velogenic) ষ্ট্রেন দ্বারা অতি তীব্র সংক্রমনের লক্ষণ প্রকাশ পায়। এ ধরনের সংক্রমনের ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পূর্বেই আক্রান্ত মোরগ মুরগীর মৃত্যু হতে পারে। এর রোগের সংক্রমনের ক্ষেত্রে মোরগ-মুরগীর ঝিঁমুনি, মাথা ঝুলে পড়া, সাদা রঙের পাতলা পায়খানা, মাথার চারপাশে পানি জমা, স্নায়বিক বৈকল্য ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পায়, ডানা নীচের দিকে ঝুলে পড়ে এবং হঠাৎ লাফ দিয়ে মুরগী মারা যায়। মৃত্যুহার ১০০% পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

মাঝারী সংক্রমনের ক্ষেত্রেঃ
মেসোজেনিক (Mesogenic) ষ্ট্রেন দ্বারা আক্রান্ত হলে মাঝারী সংক্রমনের লক্ষণ প্রকাশ পায়। আক্রান্ত হলে মোরগ মুরগীতে তীব্র শ্বাস-তান্ত্রিক জটিলতা ও স্নায়বিক লক্ষণ (ঘাড় ঘুরিয়া পিঠের উপর রাখা, পক্ষাঘাত, পাখা ঝুলে পড়া) প্রকাশ পায়। অনেক সময় শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় ঘড়-ঘড় আওয়াজ হয় অথবা মোরগ-মুরগীর শ্বাস কষ্ট হয়।

অনেক সময় খোসা ছাড়া বা পাতলা খোসাযুক্ত ডিম পাড়া এবং পরবর্তীতে ডিম পাড়া সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। পরিপাকতন্ত্রে সংক্রমণের ক্ষেত্রে চুনের মত সাদা পায়খানা হয়। মৃত্যু হার ৮০%-৯০% হতে পারে।

মৃদু সংক্রমনের ক্ষেত্রেঃ
অপেক্ষাকৃত কম সংক্রামক লেন্টোজেনিক ষ্ট্রেন দ্বারা আক্রান্ত হলে মৃদু আকারের শ্বাস কষ্ট জনিত লক্ষণ প্রকাশ পায়।

প্রতিরোধেঃ
প্রতিরোধের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হলো জীবন্ত/লাইভ অথবা মৃত/কিল্ড ভ্যাকসিন দ্বারা টিকা প্রদান।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৪নভেম্বর২০২০