ঢাকা: উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের ফলে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সাথে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে, মেধাবী জাতি গড়তে হলে প্রাণিজ আমিষের বিকল্প নেই আর এ জন্য গবেষণা কার্যক্রমকে আরো জোরদার করতে হবে। জাতীয় প্রয়োজনে নব নব প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) কর্তৃক আয়োজিত ‘প্রযুক্তি হস্তান্তর অনুষ্ঠান’ এ প্রধান অতিথির ভাষণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, এমপি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষি ও প্রাণিসম্পদের ওপর নির্ভরশীল, এই মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে, নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থিকভাবে সাবলম্বী হচ্ছে। হস্তান্তরিত এই প্রযুক্তিগুলো গুরুত্বের সাথে সম্প্রসারণ করার জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে অনুরোধ করেন।
বিশেষ করে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের এইচআই পরীক্ষার জন্য এইচএ এন্টিজেন প্রযুক্তিটি দেশীয়ভাবে উৎপাদনের ফলে আমদানি নির্ভরতা কমবে এবং বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রযুক্তি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা. মো. এনামুর রহমান এমপি, ঢাকা-১৯ ও মো. রইছউল আলম মণ্ডল, সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
মন্ত্রণালয় এবং সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা. মো. আইনুল হক, মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, ঢাকা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, “দেশের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে বিশেষ করে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে বিএলআরআই এর স্বল্প সংখ্যক বিজ্ঞানীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীর সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।”
সচিব মো. রইছউল আলম মণ্ডল বলেন, “খাদ্যে স্বয়ম্পূর্ণ হলেও প্রাণিজ আমিষের চাহিদা এখনো ঘাটতি রয়েছে। বিজ্ঞানীর স্বল্পতা নিয়ে লক্ষ্য মাত্রা অর্জন করা সম্ভব নয়। সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আন্তঃইনস্টিটিউট গবেষণা কার্যক্রমের সমন্বয় থাকা একান্ত জরুরি।”
ডা. মো. আইনুল হক বলেন, “বিএলআরআই কর্তৃক ৪টি প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
সভাপতির ভাষণে ড. নাথু রাম সরকার বলেন, “বিএলআরআই কর্তৃক হস্তান্তরিত চারটি প্রযুক্তি যেমন- ডোল পদ্ধতিতে কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ প্রযুক্তি কাঁচা ঘাসের বিকল্প হিসেবে শুষ্ক মৌসুমে প্রাণির উৎপাদনশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। স্বর্ণা লেয়ার স্ট্রেইন, প্যরেন্ট ষ্টক
আমদানিতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয় তা সাশ্রয়ী হবে, উন্নয়নকৃত দেশি মুরগির জাত সমূহ মানুষের দেশি মুরগির ডিম ও মাংসের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে এবং মুরগির এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের এইচ আই পরীক্ষার জন্য বিদেশ থেকে এন্টিজেন আমদানি থেকে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয় তা সাশ্রয় করবে।”
তিনি আরো বলেন, “স্বল্প জায়গায় অধিক নিরাপদ আমিষের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অঞ্চলভিত্তিক সমস্যা নিরূপণ করে নতুন নতুন গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে, যা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত জরুরি ও প্রয়োজনীয়।”
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাণিস্বাস্থ্য গবেষণা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. গিয়াসউদ্দিন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আজহারুল আমিন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার শিক্ষক, বিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণকর্মীসহ প্রায় ১৫০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন