মেহেরপুর জেলায় ১১৪ কোটি টাকার কোরবানির পশু বিক্রি হবে বলে আশা করছেন মেহেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
জেলার খামারীরা ঈদকে সামনে রেখে বাণিজ্যিকভিত্তিতে গবাদিপশু পালন করছেন। তাদের গবাদিপশু ইতোমধ্যে মেহেরপুরের পশুহাটগুলোতে আসতে শুরু করেছে। তাদের খামারে প্রতিদিনই আসছে ব্যাপারীর দল। দরদাম করে কোরবানির পশু কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মতে, কোরবানির পশু বিক্রির উদ্দেশ্যে মেহেরপুরের তিন উপজেলায় ২৮ হাজার ৫৩০টি পশু খামার গড়ে উঠেছে। কেউ বেকারত্বের অভিশাপ ঘোঁচাতে আবার কেউ সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে এসব খামার গড়ে তুলেছেন। এসব খামারে ২৬ হাজার ১২৪টি গরু ও ৫৩ হাজার ৩৮৮টি ছাগল কোরবানীর জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, ৬১ কোটি টাকার ছাগল ও ৫৩ কোটি টাকার গরু বিক্রি হবে। কোরবানিতে দেশীয় জাতের ও শংকর জাতের গরুর চাহিদা বেশি থাকায় খামারিরা এ ধরনের গরু স্বাস্থ্য সম্মতভাবে মোটা তাজাকরণ করছে। পশু খাদ্যের দাম বাড়ায় পশু লালন পালন করতে এবার খরচও হয়েছে অনেক বেশি। সেই কারণে গত বারের তুলনায় এবার পশুর দামও অনেক বেশি। গতবছর যে পশু বিক্রি হয়েছে ৫০ হাজার টাকায়। এবার কিনতে হবে অন্তত ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকায়।
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জে মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের খামারে দেখা গেছে, কোরবানির জন্য তার খামারে প্রস্ততু ২১টি গরু।
খামারী রফিকুল জানান, এ বছরই তিনি খামার করেছেন। বর্তমানে ব্যাপারীরা ২১টি গরুর যে দাম বলছেন, তাতে দুইলাখ টাকার মতো তার লাভ থাকছে। তিনি আশা করছেন ঢাকার পশুহাটে গরুগুলো নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে পারলে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা তার লাভ হবে।
একাধিক খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা বছর ধরে দেশের আমিষ খাদ্যের চাহিদা পূরণ এবং ঈদকে সামনে রেখে স্বাস্থ্য সম্মতভাবে গরু মোটা-তাজাকরণ করছেন তারা। পশু খাদ্যের (বিচালী, নেপিয়ার ঘাস, ভাত, ভুট্টার) মূল্য বৃদ্ধি এবং বর্ষা মৌসুমে পানিতে মাঠ ডুবে যাওয়ায় গো-খাদ্যের অভাব দেখা দেয়। এজন্য ব্যয়ও বেড়ে গেছে অনেক। এরপরও তারা লাভের আশা করছেন।
গাংনীর ‘এডকম ক্যাটেল ফার্মের স্বত্বাধিকারী মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, এবার তিনি খামারে ১৮টি গরু লালন-পালন করছেন। এবার গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে ব্যয় বেড়েছে। ভারতীয় গরু আমদানী হলে লোকসানের মুখে পড়বেন – এমন আশংকা প্রকাশ করেছেন এ খামারি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শশাঙ্ক কুমার জানান, আসন্ন ঈদ-উল-আজহাকে সামনে রেখে এবার মেহেরপুর জেলায় গরুর খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে যে পরিমাণ গরু লালন-পালন করছেন তাতে ঈদে কোরবানীর পশুর চাহিদা মেটানোর পরেও উদ্বৃত্ত থাকবে। যা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, কৃত্রিম উপায়ে কোনো খামারি গরু মোটাতাজাকরণ করতে না পারে সেজন্য আমাদের মাঠকর্মীরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। সূত্র: বাসস
কমার্শিয়াল ব্রয়লার বাচ্চার উৎপাদন কার্যক্রম উদ্বোধন করল ইয়ন হ্যাচারি
কুমিল্লায় চাহিদার চেয়ে জোগান কম: ভারত-বার্মার গরু আসতে পারে
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম