জেলার লাউ চাষিরা তাদের উৎপাদিত লাউ বিক্রি করে হাসি-খুশিতে দিন যাপন করছেন। কেউবা কিনছেন জমি জিরেত। লাউ চাষ করে ভাত-কাপড়ের সংস্থান করেছেন মেহেরপুরর অনেক লাউ চাষি।
ধান-গম চাষ করে যখন চাষিরা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন, তখন লাউ চাষ তাদের কাছে আশির্বাদ হয়ে এসেছে। লাউ চাষ তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এখন লাউ বিক্রি করে সংসারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে অনাতে লাউ চাষে ঝূঁকছে কৃষকরা।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি বছরে মেহেরপুর সদর উপজেলায় ৪৭৫ বিঘা জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। লাউয়ের ফলনও ভালো হয়েছে। ভালো ফলন কৃষকের মনে আনন্দ এনেছে।
মেহেরপুর জেলার আমঝুপি, মদনাডাঙ্গা, সুবিদপুর, চাঁদবিল তেরোঘরিয়া, ভোমরদহসহ কয়েকটি গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায় মাঠের পর মাঠে চাষ হয়েছে লাউ। চোখেমুখে আনন্দ নিয়ে কেউ লাউক্ষেত পরিচর্যা করছেন। কেউ তুলছেন ক্ষেত থেকে লাউ।
কথা হয় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভোমরদহ গ্রামের মাঠে লাউক্ষেত পরিচর্যাকারী চাষি রফিকুল আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন,সাত-আট বছর ধরে লাউ চাষ করছেন। তিনি এ বছর তিন বিঘা জমিতে লাউ চাষ করেছেন। ছেলেমেয়ে নিয়ে তার পাঁচজনের সংসার ভালোভাবে চলছে। তিনি এখন সারা বছরই লাউ চাষ করেন। জমি চাষ থেকে লাউ তোলা পর্যন্ত বিঘা প্রতি তার খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা। এক মাস আগে থেকে লাউ তোলা ও বিক্রি করা চলছে তার জমি থেকে। সামনে আরো দুই মাস লাউ বিক্রি করা যাবে।
ইতিমধ্যে লাউ চাষের খরচ উঠে গেছে। সামনের দুই মাসে লাউ বিক্রির যে টাকা পাবেন সেটাই তার লাভ হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কম করে হলেও তিনি ১ লাখ থেকে ১ লাখ টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। তিনি মনে করেন সারা বছরই লাউয়ের চাষ করে লাভবান হওয়া যায়।
তার পাশে ছিলেন আরো এক লাউচাষি আক্কাচ আলী। তিনিও বললেন লাউ চাষে সুফলের কথা।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, পুরাতন মদনাডাঙ্গা গ্রামের জয়নাল এ বছর এক বিঘা ৫ কাঠা, হযরত আলী ১০ কাঠা, মুরাদ আলী এক বিঘা, আবদুল মালেক এক বিঘা জমিতে লাউ চাষ করেছেন। আবদুল মালেক গেল বছরে ২ বিঘা জমিতে লাউ করেছিলেন। এতে তিনি ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছিলেন। চাষিদের ক্ষেতে উৎপাদিত লাউ জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হয় বলে জানালেন চাষিরা। মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে এখন মাচায় মাচায় ঝুলছে লাউ।
মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম একজন ভালো সবজিচাষি। তিনি জানালেন, অন্য জেলায় লাউ রপ্তানির জন্য তার কাছে খেকে লাউ কিনছেন বহিরাগত ব্যবসায়ীরা।
তিনি জানালেন, ধান-পাট ও গম চাষ করে দাম না পেয়ে প্রতিবছরই এলাকার চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই এ এলাকার চাষিরা সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, লাউসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে মেহেরপুর এলাকার চাষিরা সচ্ছলতা ফিরিয়েছেন। বর্তমানে ফুলকপি-বাঁধাকপিসহ বিভিন্নধরনের সবজির পাশাপাশি লাউ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এতে কৃষি বিভাগও খুশি। কৃষকদের এসব সবজিতে রোগবালাই দমন ও প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিজ নিজ দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত ছুটছেন। চাষিদের এসব সবজি যাতে বিষমুক্ত হয় সে বিষয়েও কৃষি বিভাগ তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকেন।সূত্র: বাসস
নওগাঁর বরেন্দ্র ভূমিতে মিষ্টি আনারস চাষের অপার সম্ভাবনা
ধানক্ষেতে পার্চিংপদ্ধতিতে মাগুরায় কমেছে কীটনাশকের ব্যবহার
চাঁদপুরে কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে গেণ্ডারি
এবার পঞ্চগড়ে আমনের বাম্পার ফলনের আশা
ডেইরি ফার্ম বদলে দিয়েছে জয়পুরহাটের আমিরুলের জীবন
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম