মেহেরপুরে পাটে পোকার আক্রমণে দিশাহারা চাষি

167

মেহেরপুরে পাটে পোকার আক্রমণে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। গত কয়েক বছরের তুলনায় মেহেরপুরে এবার পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। পাটের আবাদ বেশি হলেও ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মেহেরপুরের চাষিরা। অন্য বছরের তুলনায় চলতি বছর তাপদাহ ছিল বেশি, তারপরে নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে পোকার আক্রমণ। তিরিং পোকা, আচা পোকার আক্রমণে উদ্বিগ্ন জেলার পাটচাষিরা। ফলে পাটের ফলন আশানুরূপ হবে না বলে মনে করছেন মেহেরপুরের চাষিরা।

মেহেরপুর সদর উপজেলা উজুলপুর গ্রামের পাটচাষি জিল্লুর রহমান বলেন, আমার দেড় বিঘা জমিতে পাট আছে। জমিতে বপনের পর থেকে প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে পাট ঠিকমতো বড় হয়নি। সেই সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে পোকার আক্রমণ। অন্য বছরে বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১২ মণ হারে ফলন হয়ে থাকে। এ বছর ৬-৮ মণের বেশি ফলন হবে না। আমরা বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করছি, তারপরও পোকার আক্রমণ কমছে না।

ফতেপুর গ্রামের পাটচাষি জামাল হোসেন বলেন, এমনিতেই এ বছর পাটে খরচ বেশি, তারপরে আবার নিয়মিতভাবে পোকা মারার বিষ প্রয়োগ করতে হচ্ছে জমিতে, এতে আমাদের বাড়তি খরচ হচ্ছে। পাটে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো বিঘা প্রতি খরচ হয়ে থাকে। এ বছরে এ টাকা উঠবে না আমাদের। তারপরও আমরা আবাদ করি। আবাদ না করেও কিছু করার নেই আমাদের। পাটে লাভের কিছুই থাকবে না আমাদের শুধু জ্বালানি হিসেবে পাটখড়ি টাই ব্যবহার করতে পারি আমরা।

সরেজমিনে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের ভূমিহীন মাঠে হাসিবুল ইসলাম জমির পাট কেটে ফেলছে। তিনি বলেন, পাটের আঁশ এখনও পূর্ণতা পায়নি। পরিপক্বতা আসার আগে আমাদের কেটে ফেলতে হচ্ছে। কারণ পাট এমনিতেই বড় হয়নি, তারপরে পোকার আক্রমণে পাট বড় হবে না, বরং বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে, তাই আগে ভাগে জমির পাট কেটে ফেলছি।

কৃষক খেদের আলী আক্ষেপ করে বলেন, পাটকে আমরা সোনালি আঁশ বলে থাকি, সেই সোনালি আঁশ এবার অতিরিক্ত রোদের কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু আমাদের মাঠে না এ মাঠকে মাঠ পুরোই জমির পাট বড় হয়নি, এতে ফলন হবে কী করে। আমাদের আসল টাকায় উঠবে না। জমির কন্টাক দেবো কীভাবে আর খাবোই বা কী ? এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি আমরা।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শংকর কুমার মজুমদার বলেন, এই মুহূর্তে পাটের কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, এ বছর পাটের ভালো ফলন হবে এবং চাষিরা লাভবান হবে।