নুপা আলম,কক্সবাজার থেকে: ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে কৃষিক্ষেত্রে কক্সবাজারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পানের বরজ, গ্রীষ্মকালীন সবজি ক্ষেত ও সুপারী বাগানের। যেখান থেকে সারাদেশের চাহিদা মেটানো ছাড়াও বিদেশে রপ্তানি হয় এসব কৃষিজপণ্য।
গত ৩০ মে মোরায় লণ্ডভণ্ডে নষ্ট হয় জেলার এক-তৃতিয়াংশ পানের বরজ ও অসংখ্য সুপারী গাছ। এতে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন অনেক পান ও সুপারী চাষী। এ নিয়ে আগামীতে এসব কৃষিজপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি সংকটেরও আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আ ক ম শাহরিয়ার জানিয়েছেন, কক্সবাজারের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পানের বরজ, গ্রীষ্মকালীন সবজি ক্ষেত, সুপারি বাগান ও গাছপালার। কক্সবাজার জেলায় ১ হাজার হেক্টর পানের বরজ, ৮৩৫ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন সবজি ক্ষেত ও ২০ হেক্টর সুপারি বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শশা, করলা, চিচিংগা, বরবটি, শিম ও ঝিঙ্গাসহ নানা প্রকার গ্রীষ্মকালীন সবজি ক্ষেতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, গত ৩০ মে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করার সময় লণ্ডভণ্ড করে দেয় জেলার টেকনাফ, মহেশখালী, উখিয়া, কক্সবাজার সদর ও রামুসহ জেলার অধিকাংশ এলাকা। এতে জেলায় আংশিক ও সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাড়ে ৫২ হাজারের বেশি বসতবাড়ি। এছাড়া গাছচাপায় পাঁচজনের মৃত্যুর পাশাপাশি উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে, বর্তমান মৌসুমে জেলায় পানের চাষ হয় তিন হাজার হেক্টরের বেশি। এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে ১ হাজার হেক্টরের বেশি পানের বরজ সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে পানের জন্য প্রসিদ্ধ মহেশখালীতে ক্ষয়ক্ষতি হয় দেড় হাজার হেক্টর পানের বরজ।
এছাড়া জেলায় ৩ হাজার হেক্টর সুপারী বাগানের আবাদ হলেও ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে গেছে ২০ হেক্টরের বেশি জায়গার গাছ। কুতুবদিয়া বাদে জেলার সব উপজেলায় কমবেশী পান ও সুপারীর চাষ হলেও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মহেশখালী, টেকনাফ ও উখিয়ায়।
কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আ ক ম. শাহরিয়ার জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা ও চাষের কৌশলের পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত পানের বরজের গাছের রোগ-বালাই দূরীকরণে মাঠ পর্যায়ের কৃষিকর্মী ও কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম