যতবার মাংস কিনেছি, ততবার ঠকেছি: ভোক্তার পরিচালক

75

দেশে যতবার মাংস কিনেছেন, ততবার ঠকেছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার বিভাগ) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন।

তিনি বলেছেন, মাংস বিক্রেতাদের কিছু নির্দিষ্ট ক্রেতা থাকেন। তাদের মধ্যে আমিও পড়ি। আমিও মাংস কিনি। কিন্তু আমি দেশে যতবার মাংস কিনেছি, ততবার ঠকেছি। আমাকে মাংসের সঙ্গে এমন হাড় দিয়ে দিয়েছে, যা খাওয়া যাবে না। আমি কেনার সময় সেটি ফেলে দিয়েছি। সুপারশপ থেকে মুরগি কিনেছি। সেটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দেখি, এমন দুর্গন্ধ, পচে গেছে। ঠিকমতো ফ্রিজিং করেনি।

খুচরা ও পাইকারি মাংস ব্যবসায়ী, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে গতকাল রোববার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ বিষয়ক সেমিনারে এসব কথা বলেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, গরুর মাংস যারা বিক্রি করেন, তারা কেউ গরু কেনেন গাবতলী থেকে, কেউ যশোর থেকে, কেউ কেনেন অন্য জায়গা থেকে। দেশে আমরা এখনও এমন মার্কেট তৈরি করতে পারিনি যে, ওজন দিয়ে গরু কিনব। তাহলে দাম সব

জায়গায় সমান থাকত। আমরা এখনও দাম-দর করে গরু কিনি। এভাবে গরু কিনতে গিয়ে দেখা যায়, কেউ ঠকে গেছে। সেই ঠকাটা নিয়ে আসছে ভোক্তার ওপরে। আমাদের একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে আসতে হবে। আপনারা (ব্যবসায়ী-বিক্রেতা-ব্যবসায়ী সমিতি) দেখেন ওজন দিয়ে গরু কেনার ব্যবস্থা করা যায় কি না?

গরুর মাংসের গ্রেডিং করা জরুরি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গরুর মাংসের যদি গ্রেডিং করে দেয়া যায়, তাহলে বিশেষ করে সুপারশপের জন্য সুবিধা হবে।

গরুর মাংসের দাম কমানোর জন্য ব্যবসায়ীদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে মুনাওয়ার হোসেন বলেন, আসুন আমরা এই দামটা কমাই। দাম কমাতে আপনাদের কোনো সমস্যা হলে আমাদের জানান। কম দামে মাংস বিক্রি করলে ভোক্তারা উপকৃত হবে। আপনাদের (ব্যবসায়ী) ভাবার সুযোগ আছে।

সেমিনারে গরুর মাংসের দাম কমাতে কী কী করণীয়, খলিলসহ কয়েকজন কীভাবে কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করছে, সেই বিষয়ে খুচরা ও পাইকারি মাংস ব্যবসায়ী, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের ডিজি এএইচএম সফিকুজ্জামান। এ সময় বেশ কয়েকবার হট্টগোলের সৃষ্টি হয়, যার কারণে দীর্ঘ তিন ঘণ্টা ধরে চলা সেমিনারটি কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শুধু নির্দেশনা দিয়ে শেষ করেন তিনি।

বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান হোসাইন, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা, মহাসচিব রবিউল আলম, কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ট্রেজারার মনজুর-ই খোদা, মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমানসহ বিভিন্ন সুপারশপ ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।