জামালপুর থেকে: তারাকান্দির যমুনা সার কারখানার সার পচে ও বিষাক্ত বর্জ্য পানিতে মিশে একটি বিলের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার মাছ মরে ভেসে উঠেছে।
সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চরপাড়া খুটামারা বিলে এ ক্ষতি হয় বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
এলাকাবাসী জানান, চরপাড়া গ্রামের ৩০ জন্য সদস্য মিলে চরপাড়া মৎস্য প্রকল্প নামে একটি সমিতি গঠন করেন। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে খুটামারা বিলের ৬০ একর জমিতে তারা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ শুরু করেন।
প্রকল্পের সদস্য ময়নাল হোসেন জানান, ‘মাছগুলোর বর্তমান বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা। কিন্তু ১৪ জুলাই থেকে বিলের সব মাছ মরতে শুরু করেছে। বিলে রুই, কাতলা, চিতল, বোয়াল, কই, মাগুর, সিলভার ও কার্প জাতীয় মাছসহ প্রায় ৩০ প্রজাতির মাছ ছিল। সব মাছ মরে ভেসে উঠায় বিনিয়োগকারীরা এখন পথে বসেছেন।’
মাছচাষী আব্দুল আজিজ ও মোজাফ্ফর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘যমুনা সার কারখানার সার যেখানে-সেখানে ফেলে রাখায় সেগুলো পচে ও কারখানার অন্যান্য বিষাক্ত বর্জ্য বিলের পানিতে মিশে সব মাছ মরে গেছে।’
জানা গেছে, দৈনিক এক হাজার ৮০০ মেট্রিকটন ইউরিয়া উৎপাদনে সক্ষম যমুনা সার কারখানা ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ও অ্যামোনিয়া গ্যাস সরাসরি বাতাস, মাটি ও পানিতে ছাড়া হয়। এতে কারখানার পাশের বিল ও পুকুরগুলোর মাছ প্রায়ই মরে যায়। এছাড়া জমির ফসল ও গাছপালার ক্ষতিসহ অন্তত দশটি গ্রামের অনেক মানুষ ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন।
এদিকে সম্প্রতি কারখানা ও বাফার গুদামে হাজার হাজার মেট্রিকটন সার নির্ধারিত গুদামে সংরক্ষণ না করে খোলা আকাশের নিচে জমা করে ফেলে রাখা হয়েছে। সেই সারগুলো বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে এবং তা খুটামারা বিলের পানিতে মিশে মাছ মরে ভেসে উঠেছে। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
এ ব্যাপারে যমুনা সার কারখানার উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মঈনুল হক বলেন, ‘যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা আবেদন করলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন