যশোরে শীতকালীন পেঁয়াজের আবাদ ও পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত কৃষকেরা

141

যশোরে শীতকালীন পেঁয়াজের আবাদ শুরু হয়েছে। পেঁয়াজের আবাদ ও পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা। তারা জানিয়েছেন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পেঁয়াজের ফলন ভালো হবে। তবে খেত থেকে পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। এদিকে সব রকমের সুবিধা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ।

যশোর কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর যশোর জেলায় ১ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ১৪ হাজার ৯৫৪ হেক্টর জমি থেকে পেঁয়াজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আবাদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে কৃষি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সরজমিনে যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি ইউনিয়নের আব্দুলপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে মাঠে পেঁয়াজের বেড পরিচর্যা করছেন কৃষকেরা। এবছর আগাম শীত আবহাওয়া বিরাজ করায় অনেকেই আবাদ সম্পন্ন করেছে আবার অনেকেই বীজ বপন করছেন।

মাঠে পেঁয়াজের চারার পরিচর্যা করছিলেন আব্দুলপুর গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম। তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, এ বছর ১৬ শতক জমিতে শীতকালীন পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। এ পর্যন্ত তার এই পেঁয়াজ চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। পেঁয়াজ উৎপাদন পর্যন্ত খরচ ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকায় পৌঁছাতে পারে বলে জানান তিনি।

একই গ্রামের সৌখিন নামে এক পেঁয়াজ চাষি বলেন, এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকলে পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হবে। আমাদের যশোরে প্রতিবারই পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হয়, কিন্তু বিক্রির সময় কৃষকরা দাম পায় না।

আশা বিশ্বাস নামে এক পেয়াজ চাষি ঢাকা পোস্টকে বলেন, পেঁয়াজ বিক্রির সময় আমরা ২৫ থেকে ৩০ টাকা করে বিক্রি করি। আর সাধারণ ভোক্তারা বাজার থেকে পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় কিনে খায়। আমাদের লাভ কম, কখনো কখনো লোকসানও হয়। কিন্তু হাতবদলে মধ্যস্তা করা ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফা লাভ করে।

কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা জানান, শীতকালে কুয়াশার পরিমাণ বেড়ে গেলে পেঁয়াজ গাছে বিভিন্ন ছত্রাক এবং ভাইরাস আক্রমণ করে। এর জন্য কৃষকদের আগে থেকেই বিভিন্ন পরামর্শ ও ওষুধ ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

যশোর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হাসান আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, যশোর সবজি চাষে রাজধানী হিসেবে পরিচিত। তবে এখানে পেঁয়াজ চাষের বৃহত্তর সম্ভাবনা রয়েছে। এবছর আবাদের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তার থেকে বেশি উৎপাদন হবে বলে আমরা আশা করছি।

তিনি বলেন, শীতকালীন চাষের পেঁয়াজ যেন কৃষকরা সুন্দরভাবে উৎপাদন করতে পারে সেজন্য কৃষকদের সব রকম পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে জোরালো ভাবে মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং করা হচ্ছে।