যশোরে হুমকিতে বোরো বীজতলা

183

কনকনে ঠাণ্ডা আর ঘনকুয়াশায় বিপর্যস্ত যশোরের জনজীবন। সারাদিন দেখা মেলেনি সূর্যের। তাপমাত্রা যাই রেকর্ড করা হোক না কেন তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। সকালের দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। এ অবস্থায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যশোরসহ দক্ষিণাঞ্চলের জীবনযাত্রা। তীব্র ঠাণ্ডা ও ঘনকুয়াশার কারণে হুমকিতে পড়েছে যশোরের বিস্তীর্ণ মাঠের বোরোর বীজতলা।

গত শনিবার সকাল থেকে যশোরসহ দক্ষিণের জেলাগুলোতে ঘন কুয়াশায় অন্ধকারাচ্ছন্ন আবহাওয়া বিরাজ করছে। যশোর বীরশ্রেষ্ট শহীদ মতিউর রহমান বিমানঘাঁটির আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল যশোরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামীকালের আগে আবহাওয়ার তেমন পরিবর্তন হবে না বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।

যশোরসহ দক্ষিণের জেলাগুলোতে যখন শীত জেঁকে বসতে শুরু করেছে তখন এ অঞ্চলের বিস্তীর্ণ মাঠে রয়েছে বোরোর বীজতলা। এসব বীজতলা নিয়ে শঙ্কিত কৃষক। কৃষি অফিস জানিয়েছে, তীব্র শীত ও কুয়াশার প্রভাব বিলম্বিত হলে আক্রান্ত হতে পারে বীজতলা।

যশোর সদরের ইছালী এলাকার চাষি হাদিউজ্জামান মিলন বলেন, শীত ও কুয়াশার কারণে আমরা বীজতলা নিয়ে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছি। এ অবস্থা চলতে থাকলে ধানের চারার ক্ষেত রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। পাশাপাশি আলুক্ষেতে ছত্রাকজনিত রোগ লাগার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, চলতি মৌসুমে যশোরে ১ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ টাগেটে এই মুহূর্তে জেলার বিস্তীর্ণ মাঠে ৮৫১৩ হেক্টর জমিতে বোরোর বীজতলা রেেয়ছে। এসব বীজতলা অধিকাংশই বড় হয়ে গেছে। যে কারণে কোল্ড ইনজুরির আশঙ্কা খুবই কম। তিনি বলেন, চলমান আবহাওয়া বিলম্বিত হলে যেসব বীজতলার চারার ছোট আকার রয়েছে এবং আলুক্ষেত রয়েছে সেগুলো কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে আমরা কৃষকদের রাতের বেলা পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখা ও দিনের বেলায় ক্ষেত থেকে ঠাণ্ডা পানি বের করে দিয়ে সেচ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছি। এর পাশাপাশি আলুক্ষেতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে, ঘনকুয়াশা আর তীব্র শীতের কারণে সড়কগুলোতে মানুষের চলাচলে মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হয়। বিশেষ করে সড়ক পরিবহন চলাচলে দেখা দেয় সীমাহীন বিপর্যয়। কুয়াশায় মানুষের দৃষ্টিসীমা ৫০০ মিটারের মধ্যে চলে আসে। যে কারণে সড়কে বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য পরিবহন চালাতে গিয়ে চালকদের হেড লাইট জ্বালিয়ে দিতে হয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যশোর উপশহর খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা থেকে যেসব পরিবহন ছেড়ে আসছে তার অধিকাংশই হেড লাইট জ্বালিয়ে আসছে। কথা হয় ঈগল পরিবহনের একজন চালকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে গাড়ি নিয়ে চলাচল খুবই অসুবিধা হচ্ছে। দিনের বেলায় হেড লাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। তারপরও রাস্তা পুরোটা দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে চরম ঝুঁকিতে আছেন বলে তিনি জানান।